এবার বাধ্যতামূলক অবসরে উপসচিব
উপসচিব এ কে এম রেজাউল করিমকে বাধ্যতামূলক অবসর দিয়েছে সরকার। পেশাগত অসদাচরণের অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তাঁকে অবসরে পাঠানো হলো। রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব মেজবাহ উদ্দিন চৌধুরী গত সোমবার এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করেন।
প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়, এ কে এম রেজাউল করিমের বিরুদ্ধে থানায় দায়ের করা মামলার তদন্ত শেষে বিজ্ঞ আদালতে চার্জশিট দাখিল করা হয় ও মামলা তুলে নেওয়ার জন্য বাদীকে ভয়ভীতি প্রদর্শন, হুমকি ও শারীরিক নির্যাতনের অভিযোগে তাঁর বিরুদ্ধে থানায় আরেকটি ফৌজদারি মামলা দায়ের হয়। তিনি আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিনে থাকায় তাঁকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়। এ অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে তাঁর বিরুদ্ধে সরকারি কর্মচারী বিধিমালা অনুযায়ী ‘অসদাচরণ’-এর অভিযোগে বিভাগীয় মামলায় অভিযোগনামা ও অভিযোগ বিবরণী জারি করে কারণ দর্শানোর নির্দেশ দেওয়া হয়।
প্রজ্ঞাপনে আরও জানানো হয়, অভিযুক্ত কর্মকর্তা লিখিতভাবে কারণ দর্শানোর জবাব দাখিল করে ব্যক্তিগত শুনানির প্রার্থনা করেন। পরে শুনানি অনুষ্ঠিত হয় এবং সেখানে তাঁর দাখিল করা জবাব ও সরাসরি বক্তব্য সন্তোষজনক বিবেচিত না হওয়ায় তাঁর বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলায় আনা অভিযোগ তদন্তের জন্য কর্মকর্তা নিয়োগ করা হয়।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়ে, তদন্ত কর্মকর্তা রেজাউল করিমের বিরুদ্ধে সরকারি কর্মচারী বিধিমালা অনুযায়ী ‘অসদাচরণ’-এর অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। তদন্ত প্রতিবেদন ও সংশ্লিষ্ট কাগজপত্র পর্যালোচনা শেষে বিধি মোতাবেক অভিযুক্ত কর্মকর্তাকে গুরুদণ্ড দেওয়ার প্রাথমিক সিদ্ধান্ত এবং দ্বিতীয়বার কারণ দর্শানোর নোটিশ জারি করা হয়।
দ্বিতীয় কারণ দর্শানোর নোটিশের জবাব পর্যালোচনা করে তাকে গুরুদণ্ড হিসেবে সরকারি চাকরি থেকে বাধ্যতামূলক অবসর দেওয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে এবং সরকারি কর্ম কমিশনও এ সিদ্ধান্তের সঙ্গে ঐকমত্য পোষণ করে।
মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, বিসিএস শিক্ষা ক্যাডারের কর্মকর্তা রেজাউল করিম রতন ২০১৭ সালে মোহাম্মদপুর সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ থাকাকালে ওই কলেজের এক ছাত্রীর সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক হয়। ‘প্রতারণার’ ফাঁদে ফেলে রতন তাঁকে ধর্ষণ করেন এবং সেই ঘটনার ভিডিও রয়েছে বলে হুমকি দিয়ে এক বছর ধর্ষণ করে চলেন বলে তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়।
এ অভিযোগ করে ২০১৮ সালের জুলাই মাসে রতনের বিরুদ্ধে ধানমণ্ডি থানায় মামলা দায়ের করেন ওই কলেজছাত্রী। এ মামলা করার আগের মাসে রতনের বিরুদ্ধে তাঁকে মারধরের অভিযোগে একটি মামলা করেছিলেন ওই ছাত্রী। দুই মামলাতেই ধানমণ্ডি থানা পুলিশ আদালতে অভিযোগপত্র দেওয়ার পর রতনকে সাময়িক বরখাস্ত করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।