রাজপথে শক্তি দেখিয়ে গণতান্ত্রিক নির্বাচন হবে না : সিইসি
প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেছেন, ‘রাজপথে শক্তি প্রদর্শনের মাধ্যমে সুন্দর নির্বাচন হবে, এটা বিশ্বাস করি না। এখন সব দলগুলোই বলতে চাচ্ছে, রাজপথে দেখা হবে, রাজপথে শক্তি পরীক্ষা হবে। সিইসি হিসেবে আমি বলবো রাজপথে শক্তি প্রদর্শন করে, রাজপথে শক্তি দেখিয়ে সত্যিকারের যে গণতান্ত্রিক নির্বাচন সেটা হবে না।’
আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে সাংবাদিকদের কাছে এ মন্তব্য করেন তিনি।
কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, ‘আমাদের বক্তব্যগুলো যদি গণমাধ্যমের মাধ্যমে উনাদের (রাজনৈতিক দল) কাছে যায়, উনাদের রাজনৈতিক প্রজ্ঞা আছে, উনারাও একটু চিন্তা করবেন। আপনাদেরকে নির্বাচনে আসতে হবে। নির্বাচনের মাঠে নীতি-বিধি অনুসারে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে হবে।’
সিইসি আরও বলেন, ‘আমি যেটার ওপর জোর দেব, সেটা হচ্ছে নির্বাচনে কার্যকর প্রতিদ্বন্দ্বিতা ছাড়া গণতান্ত্রিক নির্বাচন সম্ভব নয়। কারণ পুলিশ দিয়ে কিন্তু আমি ব্যালেন্স তৈরি করব না। দলগুলোর প্রতিদ্বন্দ্বিতার মাধ্যমে প্রতিটি কেন্দ্রে ব্যালেন্স তৈরি করবে। যদি তারা ভারসাম্য তৈরি না করেন, তাহলে পুলিশ, মিলিটারি দিয়ে সব সময় নির্বাচনটাকে সুষ্ঠু এবং বিশ্বাসযোগ্যভাবে, আস্থাভাজনভাবে উঠিয়ে আনা সম্ভব হবে না।’
কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, ‘তিনজন সিনিয়র নেতা কয়েকদিন আগেও বলেছেন আমি নাম বলব না, বড় দলের, উনারা বলেছেন রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ডায়লগ অপরিহার্য। নির্বাচনকে সুষ্ঠু করতে হলে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে যদি মোটাদাগে কিছু মতৈক্য না থাকে, একটা সুন্দর নির্বাচন তুলে দিতে পারবে না। অবশ্যই দলগুলোর সহায়তা লাগবে, একটা সমঝোতা লাগবে এবং সুন্দর নির্বাচন আয়োজনে একটা অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি করে দিতে হবে এবং পদ্ধতিটা স্বচ্ছ হবে তাহলেই নির্বাচনটা গ্রহণযোগ্য হবে।’
আইন সংস্কারের বিষয়ে মন্ত্রণালয়ের সাড়া না দেওয়ার বিষয়ে কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, ‘এখনো আসেনি এটা ঠিক। কিন্তু, আসবে না সেটা বলছি না। আমরা একটু অপেক্ষা করি। আমরা পাঠিয়েছি, আমার বিশ্বাস সরকার সেটা পরীক্ষা নিরীক্ষা করবেন। যেটা যৌক্তিক, আমরা মনে করি আমরা যৌক্তিক বিষয়টাই পাঠিয়েছি, আমার মনে হয় না সরকার সেটা অগ্রাহ্য করবে। আমরা আরও কিছু দিন দেখি। তারপর সরকারের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে কথা বলব।’
ফের ডায়গলের বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নেই জানিয়ে কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, ‘ডায়লগ যত করা যায় ভাল। সরকারের একটা ভিন্ন সত্তা আছে। তার যে মিনিস্ট্রিগুলো আছে, ডিপার্টমেন্টগুলো আছে, যাদের আমাদের সহায়তা করতে হবে। তাদের দিক থেকে যদি আন্তরিক সদিচ্ছা ও সহায়তা যদি না থাকে, তাহলে নির্বাচনটাকে একটা কাঙ্খিত মাত্রায় সফল করা হয়তো সম্ভব হবে না। তাদের সহযোগিতা যদি থাকে নির্বাচনটা আরও অধিক সুন্দর ও সফল হবে। যার ফলে রাজনৈতিক নেতারা বলেছেন ডায়লগ খুব প্রয়োজন। আমরা যেটা দেখছি দলগুলোর মধ্যে ডায়লগ হচ্ছে না। এটা হওয়া খুব প্রয়োজন বলে আমরা মনে করি। রাজনীতিবিদদের কাছ থেকে আমরা আমাদের আবশ্যক সহায়তা প্রত্যাশা করি।’