মিরাজের বীরত্বে ভারতকে হারাল বাংলাদেশ
কাঁপুনি ধরিয়ে ভারতকে হারাল বাংলাদেশ। লক্ষ্যটা বড় নয়। জিততে হলে বাংলাদেশকে করতে হতো মাত্র ১৮৭ রান। এই লক্ষ্য তাড়ায় শুরুতে কয়েক উইকেট হারালেও সাবধানী ব্যাটিংয়ে লড়াই করে বাংলাদেশ। সেই লড়াই ছাপিয়ে ম্যাচ ম্যাচ জমিয়ে তোলে ভারত। দ্রুত উইকেট তুলে নিয়ে বাংলাদেশের বুকে কাঁপুনি ধরান রোহিতরা। তবে শেষ পর্যন্ত কোনো অঘটন হয়নি। শেষ উইকেটে মুস্তাফিজকে নিয়ে বাংলাদেশকে জয় এনে দেন মেহেদী হাসান মিরাজ। শেষ উইকেট জুটির দৃঢ়তায় ভারতকে ১ উইকেটে হারিয়েছে বাংলাদেশ।
আজ রোববার আগে ব্যাট করে ৪১.২ ওভারে স্কোরবোর্ডে ১৮৬ রান তোলে ভারত। জবাব দিতে নেমে ২৪ বল হাতে রেখে জয় তুলে নেয় বাংলাদেশ। শেষ দিকে লড়াই করে জয় এনে দেওয়া মিরাজ উপহার দেন ৩৮ রানের ইনিংস। মিরাজ ও মুস্তাফিজের জুটিতেই জয়ে দেখা পেয়ে যায় বাংলাদেশ।
এর আগে সাকিব আল হাসান ও ইবাদতের দারুণ বোলিংয়ে ৪১.২ ওভারে ভারতকে ১৮৬ রানে অলআউট করে দেয় বাংলাদেশ। রান তাড়ায় এখন পর্যন্ত তিন ব্যাটারকে হারিয়েছে বাংলাদেশ। শুরুতে বিদায় নেন শান্ত। এরপর এনামুল হক বিজয়কে হারায় বাংলাদেশ। জোড়া উইকেট হারানোর পর জুটি গটে ৪১ রানে ফেরেন লিটন কুমার দাস। এর কিছুক্ষণ পর বিদায় নেন সাকিব।
আজ রোববার বেলা ১২টায় ভারত-বাংলাদেশ সিরিজের প্রথম ওয়ানডে মিরপুরের শেরেবাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে শুরু হয়েছে। ম্যাচটিতে টস জিতে বাংলাদেশ অধিনায়ক লিটন দাস আগে বোলিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন।
প্রথম বল হাতে আসেন পেসার মুস্তাফিজুর রহমান। ভারতের ওপেনার রোহিত শর্মা-শিখর ধাওয়ানকে সে ওভারে মাত্র ১ রান দেন মুস্তাফিজ। দ্বিতীয় ওভারে হাসান মাহমুদ দেন ৫ রান। প্রথম উইকেটের দেখা মিলে ৬ষ্ঠ ওভারে। মিরাজের ঘূর্ণিতে পরাস্ত হয়ে ১৭ বলে ৭ রান করে ফেরেন ধাওয়ান।
এরপরে রোহিত-বিরাট মিলে গড়েন ২৫ রানের জুটি। তাদের দুজনকেই ফেরান অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান। নিজের প্রথম এবং দলের ১১তম ওভারে এসেই মাত্র ১ রান দিয়ে দুই উইকেট তুলে নেন সাকিব। ১০.২ ওভারে ২৭ রানে ব্যাট করা রোহিতকে বোল্ড করেন সাকিব। দুবল পরেই লিটনের হাতে ক্যাচ দিয়ে ১৫ বলে ৯ রানে ব্যাট করা বিরাট কোহলি ফিরলে চাপে পড়ে ভারত।
চাপ থেকে দলকে উদ্ধার করার চেষ্টা করেন লোকেশ রাহুল। লোকেশ রাহুল ও শ্রেয়াস আয়ারের জুটিতে ৫৬ বলে ৪৩ রান আসে। দলীয় ৯২ রানে এবাদত হোসেনের বলে মুশফিকের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন শ্রেয়াস। পরে ওয়াশিংটন সুন্দারকে নিয়ে রাহুল গড়েন ৬০ রানের জুটি। ইনিংসের সর্বোচ্চ এই জুটি ভাঙেন সাকিব আল হাসান। ৪৩ বলে ১৯ রান করা সুন্দার ক্যাচ দেন এবাদতের হাতে।
দলের রান তখন ৩৩ ওভারে ৫ উইকেটে ১৫২। এর পরের ওভারে এসে আবার উইকেট পায় বাংলাদেশ। ৩৩.২ ওভারে এবাদত এবার আউট করেন শাহবাজকে। ৬ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে ভারত।
৩৫তম ওভারে ফের সাকিব দেখান ভেলকি। সাকিব ভেলকিতে ওই ওভারেই আউট হন শার্দুল ঠাকুর এবং দিপক চাহার। ১৫৮ রানে ৮ উইকেটের ইনিংস তারপরও টেনে নিয়ে যাচ্ছিলেন লোকেশ রাহুল।
রাহুল এবার সিরাজকে নিয়ে আরেকটি উইকেট গড়ার চেষ্টা করেন। তবে ৩৯.৪ ওভারে এবাদত আউট করেন রাহুলকে। যতটুকু আশা ছিল ভারতের সেটাও গুঁড়িয়ে দেন এবাদত। পরের উইকেটটিও নেন এবাদত। শেষ পর্যন্ত ৪১.২ ওভারে সব উইকেট হারিয়ে ভারত করে ১৮৬ রান।
ভারতের পক্ষে সর্বোচ্চ ৭৩ বল থেকে ৭০ রান করেন লোকেশ রাহুল। ৭০ রানের ইনিংসে ছিল পাঁচটি চার ও চারটি ছক্কার মার। বাংলাদেশের হয়ে ৫ উইকেট নেন সাকিব, ৪টি নেন এবাদত।