যোগ্য শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হলে শিক্ষার উন্নয়ন হবে : নিক্সন চৌধুরী
ফরিদপুর-৪ আসনের সংসদ সদস্য ও যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য মুজিবুর রহমান চৌধুরী নিক্সন বলেছেন, যোগ্য ব্যক্তিকে শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হলে আগামীতে শিক্ষার উন্নয়ন হবে। স্কুলের গভর্নিং বডির নির্বাচনে এমপি নির্বাচনের চেয়েও বেশি তোড়জোড় চলে। বর্তমানে একটি স্কুলের প্রধান শিক্ষক নিয়োগে ২২ থেকে ২৩ লাখ টাকার দুর্নীতি হয়। স্কুলটিকে তারা একটি ব্যবসার জায়গা করে নিয়েছেন।
আজ বুধবার দুপুরে কবি জসীমউদ্দিন হলে ফরিদপুর জেলা পরিষদের উদ্যোগে এসএসসি ও এইচএসসির মেধাবী শিক্ষার্থীদের বৃত্তি প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে নিক্সন চৌধুরী এসব কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে এসএসসির ২২১জন এবং এইচএচসির ১০০জন শিক্ষার্থীকে এ বছরের জেলা পরিষদ মেধা বৃত্তি প্রদান করা হয়। সভার শুরুতে শহীদ বুদ্ধিজীবী হত্যা দিবস উপলক্ষে নিহতদের স্মরণে এ কমিনিট নিরবতা পালন ও তাদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন।
এ সময় প্রধান অতিথির বক্তব্যে নিক্সন চৌধুরী বলেন, ‘২০১৪ সালে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছি। তখন বিদ্যালয়ে ভবন তৈরির জন্য শিক্ষকেরা, অভিভাবকেরা বারবার ধর্ণা দিতেন। আজ প্রধানমন্ত্রী প্রতিটি প্রাইমারি ও উচ্চ বিদ্যালয়ে চারতলা ভবন করে দিয়েছেন। এজন্য এখন শিক্ষক বা অভিভাবকেরা আর ভবনের জন্য আসেন না। প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সব ধরনের সহযোগিতা করা হচ্ছে। তবে, আমরা যতই চেষ্টা করি, কাজ করে যাই বা ভবন বানাই না কেনো—যদি শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতি হয় তাহলে কোনোভাবেই শিক্ষার উন্নতি হতে পারে না।’
নিক্সন চৌধুরী বলেন, ‘আজ একটি বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক নিয়োগ দিতে ২২ থেকে ২৩ লাখ টাকাও লেনদেন হয়। মাঝেমধ্যেই দেখি বিদ্যালয় কমিটি নিয়ে লাখ লাখ টাকা খরচ করছে। গভর্নিং কমিটি নিয়ে রাজনীতি হচ্ছে। মনে হচ্ছে চেয়ারম্যান, উপজেলা চেয়ারম্যান, এমপি নির্বাচন নিয়েও এতো দৌড়াদৌড়ি হয় না—যতো দৌড়াদৌড়ি গভর্নিংবডি নিয়ে হচ্ছে। আবার এটার পাশাপাশি দেখি নিয়োগ বাণিজ্য চলছে। স্কুলের সভাপতি হওয়ার পেছনে অনেক লোভ-লালসা থাকে। শিক্ষক নিয়োগ করে, পিয়ন নিয়োগ করে, বিদ্যালয়ের জমিতে দোকান ও প্লট বানিয়ে অনেক ব্যবসা তৈরি করা হয়।’
যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য নিক্সন বলেন, ‘আমরা ভবন করব, মাঠ করব, সব করব। কিন্তু শিক্ষক নিয়োগে যদি দুর্নীতি হয় সব উন্নয়ন ব্যর্থ হবে। তাই শিক্ষক দুর্নীতি বন্ধ করতে হবে। প্রধানমন্ত্রীর কাছে দাবি করব, যাকে দিয়ে বিদ্যালয়ের উন্নয়ন হবে, যে দুর্নীতি করতে পারবে না তাঁকে গভর্নিং বডিতে নিয়োগ দেন। এই বিষয়ে আরও দরদ দিয়ে যদি যোগ্য ব্যক্তিকে শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হয়, তাহলে আগামীতে শিক্ষার উন্নয়ন হবে। সংসদ সদস্য হিসেবে আমি সংসদেও একথা বলব।’
ফরিদপুর জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী মুজিবুর রহমানের সভাপতিত্বে সভায় আরও বক্তব্য দেন জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শাহাদাৎ হোসেন ও সরকারি সারদা সুন্দরী মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক কামরুজ্জামান চৌধুরী, মেধাবী শিক্ষার্থী তারানা জাহান সন্ধি ও সাদিয়া আফরিন এ্যনি।
এ সময় সরকারি রাজেন্দ্র কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক অসীম কুমার সাহা, ভাঙ্গা উপজেলা চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান, রুকসুর সাবেক ভিপি কাওসার আকন্দ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।