দুদকের মামলায় মির্জা আব্বাস দম্পতির বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র গ্রহণ ১৫ মার্চ
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস ও তাঁর স্ত্রী আফরোজা আব্বাসের বিরুদ্ধে করা দুদকের মামলায় অভিযোগপত্র গ্রহণের জন্য আগামী ১৫ মার্চ পরবর্তী দিন ধার্য করেছেন আদালত।
আজ সোমবার (১৬ জানুয়ারি) ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আছাদুজ্জামান এই দিন নির্ধারণ করেন। এদিন মামলার অভিযোগপত্র গ্রহণের জন্য দিন ধার্য ছিল। সকালে মির্জা আব্বাস ও তাঁর স্ত্রী আফরোজা আব্বাস আদালতে হাজিরা দেন। পরবর্তীতে বিচারক আগামী ১৫ মার্চ অভিযোগপত্র গ্রহণের জন্য নতুন দিন ধার্য করেন।
এর আগে, গত বছরের ২৭ ডিসেম্বর তদন্তকারী কর্মকর্তা দুদকের উপপরিচালক মোহা. নুরুল হুদা আদালতে মির্জা আব্বাস ও তাঁর স্ত্রী আফরোজা আব্বাসের নামে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। এ মামলায় দুজনেই জামিনে রয়েছেন।
তদন্ত প্রতিবেদন সূত্রে জানা যায়, ‘আফরোজা আব্বাসের নামে ২০ কোটি ৭৪ লাখ ৪৭ হাজার ৮২৮ টাকার সম্পদ প্রকৃত পক্ষে তার স্বামী মির্জা আব্বাস উদ্দিন আহমেদের সহায়তায় অর্জন করেছেন। কেননা আফরোজা আব্বাস একজন গৃহিণী, সে হিসাবে ওই সম্পদ অবৈধ উৎসের আয় থেকে অর্জিত বলে প্রমাণ মিলেছে। মির্জা আব্বাস ১৯৯১ সাল থেকে ১৯৯৫ সাল পর্যন্ত সংসদ সদস্য, মন্ত্রী এবং ঢাকা সিটি করপোরেশনের মেয়র এবং ২০০১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রী ছিলেন। তিনি সংসদ সদস্য, মেয়র ও মন্ত্রী হওয়ার সুবাদে ঘুষ ও দুর্নীতির মাধ্যমে অবৈধ উপায়ে ২০০৭ সালের ১৬ আগস্ট পর্যন্ত আফরোজা আব্বাসের নামে ওই টাকার সম্পদ অর্জন করেছেন।’
দুদক আফরোজা আব্বাসকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তিনি বলেছেন, ‘ব্যবসায়ী এম এন এইচ বুলুর কাছ থেকে এক কোটি ৫০ লাখ টাকা ঋণ ও বাবা-মা এবং বোনের কাছ থেকে এক কোটি ১৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা দান হিসেবে নিয়েছেন। তবে, ওই টাকাসহ মোট সম্পদের হিসাবের স্বপক্ষে কোনো রেকর্ড দেখাতে পারেননি।’
আফরোজা আব্বাস একজন গৃহিণী। তাঁর স্বামী মির্জা আব্বাস বিভিন্ন খাতের টাকা স্ত্রীর নামে হস্তান্তর করেছেন। আফরোজা আব্বাস নিজেকে একজন হস্তশিল্প ব্যবসায়ী হিসেবে আয়কর নথিতে উল্লেখ করলেও তাঁর নিজের আয়ের কোনো বৈধ উৎস নেই।
দুদকের তদন্তে অবৈধ ওই সম্পদ হস্তান্তর, রূপান্তর ও অবস্থান গোপনকরণে কৌশল অবলম্বন করার অপরাধ প্রমাণিত হওয়ায় তদন্তকারী কর্মকর্তা আফরোজা আব্বাস ও তাঁর স্বামী মির্জা আব্বাস উদ্দিন আহমেদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন-২০০৪-এর ২৭(১) ধারা, দণ্ডবিধির ১০৯ ধারায় এবং সেই সঙ্গে মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন-২০০৮; মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন-২০০৯ ও মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন-২০১২-এর ৪ ধারায় অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
এর আগে, ২০১৯ সালের ৭ জুলাই রাজধানীর শাহজাহানপুর থানায় দুদকের সাবেক সহকারী পরিচালক ও অনুসন্ধানকারী কর্মকর্তা মো. সালাহউদ্দিন মামলাটি দায়ের করেন। মামলায় ২০ কোটি ৭৬ লাখ ৯২ হাজার টাকার সম্পদ অভিযোগ আনা হয়েছিল।