স্বামী-সন্তান খুঁজতে এসে রাজধানীতে ধর্ষণের শিকার নারী, গ্রেপ্তার ৫
ঢাকায় স্বামী-সন্তানকে খুঁজতে এসে দলগত ধর্ষণের শিকার হয়েছেন এক নারী। এ ঘটনায় পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গত ৩১ জানুয়ারি থেকে গতকাল শনিবার (৪ ফেব্রুয়ারি) পর্যন্ত ধারাবাহিক অভিযানে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
আজ রোববার রাজধানীর নিজ কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানিয়েছেন তেজগাঁও বিভাগের উপকমিশনার এইচ এম আজিমুল হক।
এ ঘটনায় গ্রেপ্তাররা হলেন—মো. শাহিন খান (১৯), বিল্লাল হোসেন (২৫), আল আমিন (২৬), মো. সবুজ (২৬), মো. রাসেল (২৪) ও মো. শফিকুল ইসলাম (২৬)।
এইচ এম আজিমুল হক জানান, ভুক্তভোগী নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মোহাম্মদপুর থানায় একটি মামলা করেন। সেই মামলায় পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের কাছ থেকে দুটি রিকশা উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় পলাতক আরও দুই সহযোগীকে গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
এইচ এম আজিমুল হক জানান বলেন, গত ২৫ জানুয়ারি ভুক্তভোগী ওই নারী দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমের একটি জেলা থেকে সন্তানদের সঙ্গে দেখা করার জন্য মোহাম্মদপুরের বসিলায় আসেন। বসিলা এলাকার এক বাসায় ভুক্তভোগী তার স্বামী-সন্তানসহ থাকতেন। আনুমানিক চার মাস আগে শারীরিক অসুস্থতার জন্য সন্তানদের স্বামীর নিকট রেখে বুক্তভোগী তার গ্রামের বাড়িতে চলে যান। পরে স্বামী তাকে ডিভোর্স দেন।
আজিমুল হক আরও জানান, ২৫ জানুয়ারি বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে ভুক্তভোগী ওই নারী তার আগের বাসায় এসে স্বামী-সন্তানকে না পেয়ে আশপাশে খোঁজাখুঁজি করতে থাকে। বাড়ির মালিক ও পাশের ভাড়াটিয়ারা তাঁর স্বামী-সন্তানদের কোনো ঠিকানা দিতে পারেননি। পরে রাত ৯টা পর্যন্ত বছিলা চল্লিশটি হাউজিং, ফিউচার হাউজিং, গার্ডেন সিটি হাউজিং, স্বপ্নধরা হাউজিংয়ের আশপাশের এলাকায় খোঁজাখুঁজি করে। পরে সন্তানদের সন্ধান না পেয়ে ফিরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, পরে ভুক্তভোগী রাত সাড়ে ৯টার দিকে বছিলা চল্লিশ ফিট তিনরাস্তার মোড় থেকে একটি রিকশা ভাড়া করেন। কিন্তু রিকশাওয়ালা ভুক্তভোগীকে গাবতলী বাসস্ট্যান্ডে না নিয়ে ঢাকা উদ্যান ও বসিলার বিভিন্ন রাস্তায় ঘোরাতে থাকেন। ওই সময় বিভিন্নজনের সঙ্গে মোবাইল ফোনে কথা বলেন রিকশাওয়ালা। ভুক্তভোগীকে তার স্বামীর বাসা খুঁজে দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে সবাইকে ফোন করে।
পুলিশের এই কর্মকর্তা জানান, রাত আনুমানিক সাড়ে ১২টার দিকে অজ্ঞাতনামা রিকশাচালক পরিকল্পনা অনুযায়ী ভুক্তভোগী নারীকে তার অন্যান্য সহযোগীদের নিয়ে বসিলা ফিউচার টাউন রোডের শেষ মাথায় একটি অস্থায়ী শ্রমিকদের টিনের ঘরে ভিকটিমকে ভয়ভীতি দেখিয়ে নিয়ে যায়। সেখানে ওই নারীকে পাঁচজন ধর্ষণ করে ও দুজন পাহারা দেয়। পরে ওই নারীর আত্মচিৎকারে এলাকার কর্তব্যরত নিরাপত্তার রক্ষী ও লোকজনের উপস্থিতি টের পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে আসামিরা পালিয়ে যায়। সংবাদ পেয়ে মোহাম্মাদপুর থানা পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছায় এবং ভুক্তভোগী ওই নারীকে উদ্ধার করে। পরে ভিকটিমকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) পাঠানো হয় এবং প্রয়োজনীয় আলামত সংগ্রহ করা হয়।