চিন্তাধারা ও দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন আনতে হবে : শিক্ষামন্ত্রী
শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেছেন, আমাদের চিন্তাধারা, সাংস্কৃতিক ও দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন আনতে হবে। ছেলেমেয়েদের সমান সুযোগ নিশ্চিত করা গেলে তারা সমানতালে কাজ করতে সক্ষম, এটা এখন প্রমাণিত।
আজ বুধবার দুপুরে খুলনা সরকারি মহিলা কলেজের ‘হীরকজয়ন্তী’ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিক্ষামন্ত্রী এসব কথা বলেন।
বর্তমান সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের বর্ণনা দিয়ে নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেন, ‘গতানুগতিক শিক্ষার পরিবর্তে কারিগরি শিক্ষার ওপর সরকার গুরুত্ব দিচ্ছে। যার ফলে বর্তমানে ১২ শতাংশ শিক্ষার্থী কারিগরি শিক্ষায় পড়াশোনা করছে, যা আগে ছিল ১ শতাংশে। পরিকল্পনা নিয়ে নতুন শিক্ষাব্যবস্থা চালু করা হয়েছে। এরই মধ্যে শিক্ষা নীতিমালা প্রণয়ন করা হয়েছে। বৈষম্য দূর করে বছরের শুরুতে ধনী-গরিব সব ছেলেমেয়েদের হাতে বই পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে।’
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘শিক্ষার মূল লক্ষ্য হচ্ছে জ্ঞান ও দক্ষতা অর্জন। যে শিক্ষায় এটা নেই তা কোনো কাজে আসে না।’ লক্ষ্য অর্জনে যার যার অবস্থানে থেকে কাজ করার জন্য শিক্ষার্থীদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘তোমাদের নৈতিক মূল্যবোধ এবং মানুষের সঙ্গে ভালো ব্যবহার করার গুণ অর্জন করতে হবে।’
নরুল ইসলাম নাহিদ আরো বলেন, ‘আমাদের স্বাধীনতার মূল উদ্দেশ্য ছিল সমৃদ্ধ ও উন্নত দেশ গড়া। বর্তমানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশের আপামর জনগণের ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। স্বাস্থ্য, শিক্ষা, যোগাযোগসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে অভূতপূর্ব উন্নয়ন হয়েছে। মানুষের গড় আয়ু ৩৯ থেকে বেড়ে ৭০ বছর হয়েছে। কৃষিক্ষেত্রে প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে পাঁচ বছরের মধ্যে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছি। আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে অর্থনৈতিকভাবে বেশি দিন দরিদ্র থাকব না। আর্থিকভাবে এখনো দরিদ্র থাকলেও আমাদের নতুন প্রজন্ম বিশ্বের যে কোনো প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে সক্ষম।’
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নারায়ণ চন্দ্র চন্দ, সংসদ সদস্য তালুকদার আবদুল খালেক, মন্নুজান সুফিয়ান এবং খুলনা জেলা পরিষদের প্রশাসক শেখ হারুনুর রশিদ। সভাপতিত্ব করেন কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক মো. আবদুল আলীম। স্বাগত বক্তব্য দেন উপাধ্যক্ষ অধ্যাপক মো. মঞ্জুরুল ইসলাম।
অনুষ্ঠানে সাবেক সংসদ সদস্য হাবিবুন নাহার, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব মোল্লা জালাল উদ্দিন, শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী দেওয়ান মো. হানজালা, খুলনার জেলা প্রশাসক নাজমুল আহসানসহ বিপুলসংখ্যক সরকারি কর্মকর্তা, বিভিন্ন কলেজের অধ্যক্ষ, শিক্ষক এবং কলেজের সাবেক ও বর্তমান ছাত্রীরা উপস্থিত ছিলেন।
প্রসঙ্গত ১৯৪০ সালের ১৮ জুলাই প্রয়াত রায়বাহাদুর মহেন্দ্র কুমার ঘোষ এই কলেজ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। প্রথমে এর নাম ছিল রাজেন্দ্র কুমার গার্লস কলেজ। প্রথম ক্যাম্পাস ছিল খুলনা সরকারি করোনেশন গার্লস স্কুল এবং দ্বিতীয় ক্যাম্পাস খুলনা সিটি ল কলেজে। ১৯৬৫ সাল থেকে এটি বর্তমান বয়রায় নিজস্ব ক্যাম্পাসে অবস্থান করে কার্যক্রম পরিচালনা করছে। এটি ১৯৬৮ খ্রিস্টাব্দে সরকারীকরণ করা হয়। বর্তমানে উচ্চ মাধ্যমিক, স্নাতকসহ ১২টি বিষয়ে অনার্স ও ছয়টি বিষয়ে মাস্টার্স কোর্স চালু রয়েছে। বর্তমানে ১০ হাজার ১২৭ জন ছাত্রী অধ্যয়নরত এবং ৮২ জন শিক্ষক ও ৬৬ জন কর্মচারী কর্মরত আছেন।