রাবি শিক্ষার্থীকে ছাত্রলীগ নেতার নির্যাতন ও প্রাণনাশের হুমকি
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) কৃষ্ণ রায় নামের এক শিক্ষার্থীকে আটকে রেখে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন এবং তাকে হত্যার হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে ছাত্রলীগের দুই নেতার বিরুদ্ধে।
আজ মঙ্গলবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর বরাবর এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ দেন কৃষ্ণ রায় নামের এক শিক্ষার্থী।
কৃষ্ণ রায় বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী হলের প্রাধ্যক্ষের অনুমতি সাপেক্ষে ৩৮৩ কক্ষে থাকেন তিনি৷
অভিযুক্তরা হলেন—সোহরাওয়ার্দী হল শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নাঈম ইসলাম ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. সোলাইমান।
লিখিত অভিযোগে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী জানান, গত রোববার (১২ ফেব্রুয়ারি) রাতে সোহরাওয়ার্দী হল শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নাঈম ইসলামের সাত-আটজন অনুসারী এসে কৃষ্ণ রায়কে তার রুম থেকে বের হয়ে যেতে বলেন। কৃষ্ণ বের হতে রাজি না হলে তার জিনিসপত্র ফেলে দিয়ে অন্য একজনকে তার বেডে তুলে দেন। এ সময় সোলায়মান নামে এক ছাত্রলীগ নেতা তাকে মারধর করেন। পরে তাকে আবার সাধারণ সম্পাদকের রুমে নিয়ে মারধর ও মানসিক নির্যাতন করা হয়। একপর্যায়ে সাধারণ সম্পাদক নাঈম ইসলাম ‘তোকে মেরে শিবির বলে চালিয়ে দেবো’ বলে হুমকি দেন। পরে কৃষ্ণ রায় একজন সনাতন ধর্মাবলম্বী জানার পর নাঈম বলেন, ‘এখন তো তোকে মেরে ফেললেও কেউ কিছু বলতে পারবে না’।
এ বিষয়ে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর বন্ধু মাহবুব বিল্লাহ বলেন, ‘আমি একই হলে ওর (কৃষ্ণ রায়) রুমের বিপরীত দিকে আরেকটি কক্ষে থাকি। ওর সঙ্গে ছাত্রলীগের ছেলেদের ধস্তাধস্তি দেখে ছুটে যাই। কিন্তু আমি রুমে ঢুকতে চাইলে তারা ভেতরে যেতে বাধা দেয়। আমি জোর করে রুমে ঢুকলে আমার কাছ থেকে একজন মোবাইল কেড়ে নিয়ে চলে যায়। এ সময় তারা অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে এবং কৃষ্ণকে মেরে শিবির নামে চালিয়ে দেওয়ার হুমকি দেয়।’
তবে অভিযোগের বিষয়টি অস্বীকার করে ছাত্রলীগ নেতা নাঈম ইসলাম বলেন, ‘ওই শিক্ষার্থীর সিট নিয়ে একটু কথা কাটাকাটি হয়েছিল। পরে বিষয়টি সমাধান করে দেওয়া হয়েছে।’
এ ঘটনা প্রসঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ রুনু বলেন, ‘বিষয়টি সম্পর্কে আমি জানতে পেরেছি। সেখানে মারধরের কোনো ঘটনা ঘটেনি। একটা ভুল বোঝাবুঝি থেকে তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়েছে। পরে এটির সমাধান হয়েছে।’
এ বিষয়ে সোহরাওয়ার্দী হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ‘হল শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা বিভিন্ন রুমে গিয়ে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করে। আমি গতকাল (সোমবার) রাত ৪টার সময় গিয়ে গার্ডের কাছে এ বিষয়ে খোঁজ নিয়েছি। আরও খোঁজখবর নিয়ে খুব দ্রুতই পদক্ষেপ গ্রহণ করব।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক আসাবুল হক বলেন, ‘আমরা একটি অভিযোগ পেয়েছি। এ ঘটনায় তদন্তসাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’