কক্সবাজারে হোটেল কক্ষ থেকে মা-শিশুর মরদেহ উদ্ধার
কক্সবাজার শহরের একটি আবাসিক হোটেলের কক্ষ থেকে পর্যটক মা ও শিশু সন্তানের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। ঘটনার পর দুই সন্তান নিয়ে স্বামী পালিয়ে গেছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।
সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) (সদর সার্কেল) মো. মিজানুর রহমান জানান, আজ শুক্রবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে কলাতলী এলাকার আবাসিক হোটেল সি আলিফ থেকে মৃতদেহ দুটি উদ্ধার করা হয়।
নিহত সোমা রানী দে (৩৬) চট্টগ্রাম জেলার বাঁশখালী উপজেলার নাথপুরা এলাকার শনিন্দ্র দের মেয়ে এবং তাঁর (সোমার) এক বছর বয়সী এক মেয়ে শিশু। ঘটনার পর থেকে স্বামী জেমিন বিশ্বাস পলাতক রয়েছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।
হোটেল কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়ে এ পুলিশ কর্মকর্তা জানান, শহরের আবাসিক হোটেলটির একটি কক্ষে দুই পর্যটকের মরদেহ পড়ে থাকার খবর পেয়ে পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে পৌঁছে। পরে হোটেলটির চতুর্থ তলার ৪১১ নম্বর কক্ষের মেঝে ও খাটের উপর পড়ে থাকা অবস্থায় এক গৃহবধূ এবং আনুমানিক এক বছর বয়সী এক মেয়ে শিশুর মরদেহ পাওয়া যায়।
এ পুলিশ কর্মকর্তা আরও জানান, হোটেল কক্ষটির দরজা বাহির থেকে খোলা ছিল। নিহত মা ও শিশুর শরীরে কোনো ধরনের আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পেলে মৃত্যুর কারণ নিশ্চিত হওয়া যাবে।
এএসপি বলেন, কী কারণে এ খুনের ঘটনা ঘটেছে; তা এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে স্বামী অপর দুই সন্তান নিয়ে পলাতক থাকায় প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, দাম্পত্য কলহের জেরে এ হত্যার ঘটনা ঘটেছে।
হোটেল সি আলিফের জেনারেল ম্যানেজার (জিএম) মোহাম্মদ ইসমাঈল জানান, গত মঙ্গলবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে তিন শিশুসহ সুমা দে ও জেমিন বিশ্বাস হোটেলের ৪১১ নম্বর কক্ষে উঠেন। তাঁরা ১৭ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত হোটেলে অবস্থানের কথা বলে কক্ষটি ভাড়া নেন।
দুপুরে হোটেল কক্ষটি ছেড়ে দেওয়ার ব্যাপারে জেমিন বিশ্বাসের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করা হলেও কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি। পরে চেক আউট করতে হোটেলের এক কর্মচারি কক্ষটিতে যান। এ সময় বাহির থেকে দরজা খোলা পেয়ে ভিতরে মা ও শিশু সন্তানকে মৃত অবস্থায় দেখতে পান তিনি। পরে ঘটনার ব্যাপারে পুলিশকে অবহিত করা হয়।
হোটেলটির জিএম আরও জানান, তারা তিন শিশু সন্তানসহ হোটেল কক্ষে অবস্থান করলেও ঘটনার পর থেকে দুই সন্তানসহ স্বামীর খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না।
নিহত মা ও শিশুর মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন এএসপি মো. মিজানুর রহমান।
এদিকে ঘটনার পর কক্সবাজার সদর থানার পুলিশ ছাড়াও সিআইডির ক্রাইম সিন ইউনিট এবং ট্যুরিস্ট পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে।