পরবর্তী নির্বাচন নয় শেখ হাসিনা পরবর্তী প্রজন্ম নিয়ে ভাবেন : ওবায়দুল কাদের
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘এই মুহূর্তে বাংলাদেশে সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ জীবনের নাম শেখ হাসিনা। ২০ বার তাঁকে হত্যাচেষ্টা করা হয়েছে। মৃত্যুর মুখে দাঁড়িয়ে তিনি জীবনের জয়গান করেন। পরবর্তী নির্বাচন নিয়ে শেখ হাসিনা ভাবেন না। শেখ হাসিনা পরবর্তী প্রজন্ম নিয়ে ভাবেন। পরবর্তী প্রজন্মের উন্নয়ন সাধনই তাঁর চূড়ান্ত লক্ষ্য।’
আজ রোববার (১৯ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘দেশরত্ন শেখ হাসিনার স্বর্ণযুগ’ শীর্ষক বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ সব কথা বলেন ওবায়দুল কাদের। জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য এবং জাতীয় সংসদের সড়ক পরিবহণ ও সেতু মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি রওশন আরা মান্নান এ বইটির লেখক।
সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘শেখ হাসিনা সব বাধা উপেক্ষা করে দেশে ফিরে এসেছিলেন বলেই বাংলাদেশের গণতন্ত্র শৃঙ্খলমুক্ত হয়েছে। যুদ্ধাপরাধী, বঙ্গবন্ধু হত্যাকারী ও জেল হত্যার বিচার হয়েছে। দেশে প্রথম আইনগতভাবে নির্বাচন কমিশন গঠিত হয়েছে। আওয়ামী লীগ সরকার ক্রমেই গণতন্ত্র ও নির্বাচন ব্যবস্থাকে ত্রুটিমুক্ত করছে। আর বিএনপি গণতন্ত্রের নবজাতককে গলাটিপে মেরে ফেলেছে। এদেশে ভোট জালিয়াতি, রাষ্ট্রপতি নিয়ে হ্যা, না ভোট, দলীয় লোক আজিজকে নির্বাচন কমিশনের প্রধান বানানো, মাগুরা মার্কা নির্বাচন, ১ কোটি ২৩ লাখ ভুয়া ভোটার বানিয়েছিল বিএনপি। যার জন্য ওয়ান ইলেভেন সৃষ্টি হয়েছিল।’
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘নির্বাচন সংবিধান অনুযায়ীই হবে। সংবিধানের মধ্য থেকে অন্য পথ থাকলে তা বিএনপি খুঁজে বের করুক। ক্ষমতার পরিবর্তন চাইলে নির্বাচনে অংশগ্রহণের বিকল্প নেই। বিএনপি মার্কা তত্ত্বাবধায়ক আমরা চাই না। বিএনপির নিজস্ব সৃষ্টি তত্ত্বাবধায়ক সরকার। যে তত্ত্বাবধায়ক ২০০১ সালে বিএনপির ফল দিয়েছে সেই তত্ত্বাবধাবয়ক আমরা চাই না।’
উচ্চ আদালতের রায়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিলের বিষয়টি তুলে ধরে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘যত চেষ্টাই করুন বাংলাদেশের সংবিধান অনড় থাকবে। সংবিধানের মধ্যে কোনো ক্ষেত্র খুঁজে পান কি—না যাতে বেনিফিটেড হবেন, সেটা খুঁজুন।’
বিএনপির ৫০ লাখ নেতাকর্মীর নামে মামলার দাবিকে অযৌক্তিক, বানোয়াট ও মিথ্যা বলে মন্তব্য করেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক। তিনি বলেন, ‘মামলা পরের কথা তাদেরতো এতো নেতাকর্মীই নেই। এগুলো বিএনপির মিথ্যাচারের গল্প। বিএনপি ক্ষমতায় থাকার সময় আওয়ামী লীগের হাজার হাজার নেতাকর্মীকে নির্যাতন করেছে, মামলা দিয়েছে। মায়ের জানাজা এমনকি ঈদের নামাজে অংশ নিতে পারেনি আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। আমার বিরুদ্ধে তারেক রহমান ৩৭টি মানহানির মামলা দিয়েছিল, তার না—কি মানহানি হয়েছে।’
ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, ‘আমাদের নেতাকর্মীর নামে যত মামলা দিয়েছে তা হিসেব করলে অনেক হবে। নির্বাচনের আগে পাঁচশ স্কুল পুড়িয়েছে, ভূমি অফিসে আগুন দিয়েছে, মানুষ পুড়িয়েছে। কী বীভৎস দিন! কত নিষ্ঠুর বিএনপি! মির্জা ফখরুল এখন খুন ও মাদকের মামলার আসামির পক্ষে বিবৃতি দেন।’
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আওয়ামী লীগ জনস্বার্থে পাহারাদারে আছে, থাকবে। যে হাতে আগুন দিতে আসবে সেই হাত ভেঙে দেওয়া হবে। আক্রমণ করতে এলে ছেড়ে দেওয়া হবে না। আমরা পাহারাদার জনস্বার্থে, আমরা ক্ষমতায় জনগণের জানমাল রক্ষা আমাদের দায়িত্ব।’
আওয়ামী লীগের এই নেতা বলেন, ‘আপনারা আগুন সন্ত্রাস নিয়ে আসবেন, আমরা বসে বসে ললিপপ খাবো? আপনারা ভাঙচুর করবেন, আমরাও শপথ নিয়েছি আগুন নিয়ে যে হাত পোড়াতে আসবে মানুষকে, ঘর বাড়ি, জনগণের জানমাল, সে হাত আমরা ভেঙে দেবো। আমাদের কর্মীদের নির্দেশ দিয়েছি যেই হাত ভাঙচুর করতে আসবে সেই হাত ভেঙে দিতে হবে।’
বইয়ের লেখক এবং সড়ক পরিবহণ ও সেতু মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি অধ্যক্ষ রওশন আরা মান্নানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে সংসদ সদস্য মেরিনা জাহান, গাজী মোহাম্মদ শাহনেওয়াজ, জাকিয়া তাবাসসুম, গ্রন্থের সম্পাদক সাংবাদিক ফিরোজ আলম খানসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।