সম্পর্কের সুতায় টান পড়লে কী করবেন
সখি ভালোবাসা কারে কয়, সে কি কেবলই যাতনাময়... ভালোবাসা নিয়ে কবির নানান প্রশ্ন সাধারণের মনে দাগ কাটছে যুগ যুগ ধরে। আজ আমরা একজন বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের কাছ থেকে ভালোবাসায় টানাপোড়েন এবং এ কারণে ব্যক্তির মনোজগতে কী পরিবর্তন হয়, সে সম্পর্কে জানব।
এনটিভির নিয়মিত স্বাস্থ্যবিষয়ক অনুষ্ঠান স্বাস্থ্য প্রতিদিনের একটি পর্বে মনোবিদ্যা নিয়ে কথা বলেছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে মনোরোগবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ডা. সালাউদ্দিন কাউসার বিপ্লব। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেছেন ডা. সামিউল আউয়াল স্বাক্ষর।
আমরা অনেক সময় দেখি, নানা কারণে ভালোবাসায় একধরনের টানাপোড়েন চলে। এটি হতে পারে বাবা-মায়ের প্রতি ভালোবাসা, এটা হতে পারে প্রেমিক-প্রেমিকার ভালোবাসা কিংবা অন্যান্য সম্পর্কের ভালোবাসা। যখন আসলে সেই সুতোয় টান পড়ছে, তখন কী করণীয়, সঞ্চালকের এ প্রশ্নের জবাবে অধ্যাপক ডা. সালাউদ্দিন কাউসার বিপ্লব বলেন, আমরা যে কোনও আনওয়ান্টেড সিচুয়েশন, ইংরেজিতে বলছি; বাংলায় বললে যে বিষয়গুলো আমরা চাই না, যে ধরনের সিচুয়েশন আমরা চাই না, এটি কিন্তু সবার জীবনে ঘটে। এমন না যে আমি মানসিক রোগের ডাক্তার বলে আমার হবে না বা আরেক জনের হবে, এমন কোনও কথা নেই। এই পৃথিবীর সবচেয়ে বড় সেলিব্রেটি থেকে শুরু করে একজন সাধারণ মানুষ, প্রত্যেক মানুষের ভালো লাগা, খারাপ থাকা, ভালো সময়, খারাপ সময় যাবে।
অধ্যাপক ডা. সালাউদ্দিন কাউসার বিপ্লব বলেন, বিজ্ঞান যেটা বলছে, এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণ বা এখান থেকে বের হয়ে আসা। এটা কোপ করা। মানে সিচুয়েশনটার সাথে কোপ করা। তো এটাকে বিজ্ঞান বলছে, দুইভাবে করা সম্ভব। একটা হলো অ্যাডাপ্টিভ অথবা গ্রহণযোগ্য সমাধান। আরেকটা হলো, ম্যাল-অ্যাডাপ্টেভ বা অগ্রহণযোগ্য সমাধান। অনেকে যেটা করে, আমার খুব মন খারাপ, আমার খুব রাগ হচ্ছে অথবা আমার খুব দুঃখবোধ, তখন স্বাভাবিক প্রক্রিয়া হলো... একেক জনের জন্য একেকটা, কিন্তু স্বাভাবিকভাবে অপেক্ষা করা। অথবা এই দুঃখের বিষয়ে কারও সঙ্গে কথা বলা, কারও সাথে শেয়ার করা অথবা সিনিয়র যে, তার সাথে আলোচনা করে এর একটা সমাধান বের করা। অথবা আমি যাকে পছন্দ করি, ওই মানুষটা এ ধরনের সিচুয়েশনের কী ধরনের সমাধান পেতে পারত, সেটার জন্য ওইভাবে অপেক্ষা করা। অথবা বইপত্র-বিজ্ঞানের কোন জায়গা দিয়ে এটার সমাধান পেতে পারি, সেদিকে যাওয়া। এটা হলো গ্রহণযোগ্য বিষয়।
ডা. সালাউদ্দিন কাউসার বিপ্লব আরও বলেন, অগ্রহণযোগ্য যেটা, আমি শাউট করে উঠলাম, যখন-তখন মেজাজ খারাপ করে ফেললাম। তাতে হবে কি, আমার যে দৈনন্দিন কাজটা, সেটা আমি নষ্ট করে ফেললাম। আমি কাজ করব না, আমি চলে যাব, আমি ছুড়ে ফেললাম; একটা অফিস বা পরিবার বা সংগঠনের প্রোটোকল বা রুলস আছে, সেটা ব্রেক করলাম। আমি এমনভাবে কাজটা করলাম, যা অন্যদের কাছে কোনোভাবে গ্রহণযোগ্য না। আজকাল কেউ কেউ হাত-পা কাটে। বিভিন্ন জিনিস নষ্ট করে। আবার কেউ কেউ বিভিন্ন রকমের নেশার মধ্যে আসক্ত হয়ে যায়। যে প্রসিডিউরগুলো আমাদের সামাজিক, অর্থনৈতিক, পারিবারিক, বৈজ্ঞানিক, এমনকি ধর্মীয়ভাবে গ্রহণযোগ্য না, ওই প্রসেসে এ বিষয়গুলো সমাধান করতে যাওয়া ম্যাল-অ্যাডাপ্টিভ।
মন ও মনোরোগ সম্পর্কে আরও জানতে উপর্যুক্ত ভিডিওটি সম্পূর্ণ দেখুন। এ ছাড়া স্বাস্থ্য সম্পর্কিত বিভিন্ন বিষয়ে বিস্তারিত জানতে এনটিভি হেলথ ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন এবং জানুন বিশেষজ্ঞের পরামর্শ।