৫১২ কেজি পেঁয়াজ বেচে লাভ সোয়া ৩ টাকা!
লাভের আশায় পেঁয়াজ চাষ করেছিলেন এক কৃষক। হয়েছে বাম্পার ফলনও। তবে, তারপরেও মাথায় হাত ওই কৃষকের। ৫১২ কেজি বিক্রি করে তাঁর লাভ হয়েছে দুই দশমিক ৪৯ রুপি, বাংলাদেশি মুদ্রায় যা সোয়া তিন টাকা। ঘটনাটি ভারতের মহারাষ্ট্রের সোলাপুরের। আজ বৃহস্পতিবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে এনডিটিভি।
প্রতিবেদনে ভারতীয় সংবাদ মাধ্যমটি জানায়, মহারাষ্ট্রের সোলাপুরে একজন কৃষক এক ব্যবসায়ীর কাছে ৫১২ কেজি পেঁয়াজ বিক্রি করেন। বিক্রির পর তিনি যখন জানতে পারেন, এতে তার লাভ হয়েছে ২.৪৯ রুপি। এরপরেই জোরেশোরে ধাক্কা খান তিনি।
৬৩ বছর বয়সী রাজেন্দ্র চাভান নামের এই কৃষক বলেন, ‘আমি সোলাপুরের এক পেঁয়াজ ব্যবসায়ীর কাছে ১০ ব্যাগে ৫০০ কেজির মতো পেঁয়াজ বিক্রির জন্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু লোডিং, ট্রান্সপোর্ট, শ্রম এবং অন্যান্যের জন্য চার্জ কাটার পরে, আমি তার কাছ থেকে মাত্র দুই দশমিক ৪৯ রুপি নিট লাভ পেয়েছি। প্রতি কেজির জন্য তিনি আমাকে এক রুপি করে দিয়েছেন।’
রাজেন্দ্র চাভান আরও বলেন, ‘আমার পেঁয়াজের ওজন হয়েছিল ৫১২ কেজি। এগুলো বিক্রির জন্য আমি পেয়েছি ৫১২ রুপি। লোডিং, ট্রান্সপোর্ট, শ্রম এবং অন্যান্যের খরচ বাবদ আমার থেকে কাটা হয়েছে ৫০৯ দশমিক ৫১ রুপি। আমার লাভ হয়েছে দুই দশমিক ৪৯ রুপি। এটি আমার ও আমার মতো কৃষকের জন্য অপমানজনক। এরকম লাভ হলে আমরা কী করে বাঁচব।’
পেঁয়াজের জন্য আরও ভালো দাম ও ক্ষতি হলে কৃষকদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার জন্য দাবি জানিয়েছেন তিনি।
চাভান তার পেঁয়াজ ভালো মানের দাবি করলেও ওই ব্যবসায়ী বলেন, ‘পেঁয়াজগুলো নিম্নমানের ছিল।’ তিনি আরও বলেন, ‘চাভান নামের ওই কৃষক মাত্র ১০টি ব্যাগে করে পেঁয়াজ এনেছিলেন। পণ্যগুলোর মানও ভালো ছিল না। সেজন্য তিনি প্রতি ১০০ কেজিতে তিনি ১০০ রুপি পেয়েছেন। সব খরচ বাদ দেওয়ার পরে, তিনি দুই রুপি লাভ হিসেবে পেয়েছেন।’
ওই ব্যবসায়ীর দাবি, একই কৃষক সাম্প্রতিক সময়ে আমার কাছে ৪০০ ব্যাগ পেঁয়াজ বেচেছিল। সেগুলোর মান ভালো থাকায় তিনি ভালো দাম পেয়েছিলেন। এবার খারাপ মানের আনায় তিনি ন্যায্য দাম পেয়েছেন।
এ বিষয়ে কৃষক নেতা ও সাবেক আইন প্রণেতা রাজু শেট্টি বলেন, ‘এই মৌসুমে উৎপাদিত পেঁয়াজগুলো তেমন ভালো না। এগুলো সংরক্ষণ করা যাচ্ছে না। সহজেই পচে যাচ্ছে। এ জন্য দাম কম। এমনকি, সরকারও এই পেঁয়াজ কিনছে না।’