যে কারণে ইউক্রেন ইস্যুতে রাশিয়ার বিপক্ষে ভোট দেয়নি বাংলাদেশ
রাশিয়া–ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে উত্থাপিত প্রস্তাবে ভোটদানে বিরত ছিল বাংলাদেশ। এই বিরত থাকা প্রসঙ্গে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সরকারের অবস্থানের পক্ষে যুক্তি তুলে ধরেছে। আজ রোববার (২৬ ফেব্রুয়ারি) এক সংবাদ সম্মেলনে এ বিষয়ে এক বিবৃতি পাঠ করেন মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র সেহেলি সাবরিন।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, ‘বাংলাদেশ একটি শান্তিকামী পররাষ্ট্রনীতি অনুসরণ করে, যা সার্বভৌম সমতা এবং সব রাষ্ট্রের আঞ্চলিক অখণ্ডতার প্রতি শ্রদ্ধা, আন্তর্জাতিক বিরোধের শান্তিপূর্ণ নিষ্পত্তি এবং সম্মানের নীতির ওপর ভিত্তি করে প্রতিষ্ঠিত।’
জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে গত বৃহস্পতিবার রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধের আহ্বান জানিয়ে প্রস্তাব উত্থাপিত হয়। সেই প্রস্তাবে ভোট দেওয়া থেকে বিরত থাকে বাংলাদেশসহ ৩২ দেশ। এরমধ্যে চীন, ভারত, পাকিস্তানও ছিল। যদিও সাধারণ পরিষদের ১৯৩টি দেশের মধ্যে ১৪১টি দেশ প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দেয়। আর সাতটি দেশ বিপক্ষে ভোট দেয়।
জার্মানভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ডয়চে ভেলের প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনের এক বছর পূর্তি উপলক্ষে বিশেষ এই ভোটাভুটি হয়। বহু আলোচনার পর জার্মানি প্রস্তাবটি পেশ করে। যেখানে বলা হয়, জাতিসংঘের চার্টার মেনে ইউক্রেনে দীর্ঘস্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠিত হোক।
এরপর আজ বাংলাদেশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সংবাদ সম্মেলন করে। সেখানে তুলে ধরা বিবৃতিতে বলা হয়, ইউক্রেনের পরিস্থিতি, বিশেষ করে বেসামরিক প্রাণহানি, সংঘাতপূর্ণ অঞ্চলে মানবিক পরিস্থিতির অবনতি এবং এর ফলে বিশ্বজুড়ে আর্থ-সামাজিক অবস্থার বিপর্যয়ের বিষয়ে বাংলাদেশের গভীর উদ্বেগ অব্যাহত রয়েছে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, ‘আমরা শত্রুতা বন্ধের আহ্বান জানাই। আমরা মনে করি—জাতিসংঘ সনদের উদ্দেশ্য এবং নীতিগুলি যেকোনো মূল্যে বহাল রাখা উচিত। জাতিসংঘে উত্থাপিত এ প্রস্তাবে ইউক্রেনে একটি ব্যাপক, ন্যায্য এবং স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য জাতিসংঘের মহাসচিব সদস্য দেশগুলির প্রতি যে আহ্বান জানিয়েছেন, আমরা তার গুরুত্ব অনুভব করছি। আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, আন্তর্জাতিক বিরোধের শান্তিপূর্ণ নিষ্পত্তি অবশ্যই সর্বজনীন হতে হবে। জাতিসংঘে উত্থাপিত প্রস্তাবেরও চূড়ান্ত উদ্দেশ ছিল ইউক্রেনে একটি ব্যাপক, ন্যায্য এবং দীর্ঘস্থায়ী শান্তি খোঁজা।’
বিবৃতিতে বলা হয়, ‘আমরা বিশ্বাস করি, বর্তমান সংঘাতের যেকোনো অর্থবহ এবং টেকসই সমাধানের জন্য অবশ্যই সংঘাতে জড়িত পক্ষগুলির মধ্যে নিবিড় কূটনৈতিক সম্পৃক্ততা এবং সংলাপ প্রয়োজন। আমাদের মতে, এই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো প্রস্তাবে অনুপস্থিত। ফলে আমরা এর থেকে বিরত থাকতে বাধ্য ছিলাম।