লক্ষ্মীপুরে শিশু কাউছার হত্যায় মায়ের ১০ বছরের কারাদণ্ড
লক্ষ্মীপুরে আট বছর বয়সী শিশু কাউছারকে হত্যার দায়ে তার মা স্বপ্না বেগমকে ১০ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে তাকে ৫ হাজার টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরও ৬ মাস কারাদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়েছে।
আজ বুধবার (১ মার্চ) দুপুরে জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. রহিবুল ইসলাম এ আদেশ দেন।
দণ্ডপ্রাপ্ত স্বপ্না সদর উপজেলার চররুহিতা ইউনিয়নের চররুহিতা গ্রামের হাসানুজ্জামানের মেয়ে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে লক্ষ্মীপুর জেলা জজ আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) জসিম উদ্দিন বলেন, ‘১০ টাকা চাওয়ায় নিজ ছেলেকে আসামি গলা টিপে হত্যা করে। আদালতে আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তাকে ১০ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। তবে আসামির বয়স, আচরণ ও শিশুকে লালনপালন করাসহ মানবিক কারণে বিচারক প্রোভিশনাল রায় দেন। এতে আসামিকে সাজার সময়কাল বাড়িতে থাকার সুযোগ দেওয় হয়। এরমধ্যে তিনি কোনো অপরাধে জড়াতে পারবেন না। এটি জেলা সমাজসেবা কার্যালয় তদারকি করবে।’
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ২০১৯ সালের ১৪ অক্টোবর ১০ টাকা চাওয়ায় শিশু কাউছারকে তার মা স্বপ্না গলা টিপে হত্যা করে। পরে শিশুটির বাবা রাসেল হোসেন বাদী হয়ে থানায় মামলা করেন। ২০১৭ সালে রাসেল চট্টগ্রামের এক নারীকে দ্বিতীয় বিয়ে করেন। এ নিয়ে স্বপ্নার সঙ্গে তার কলহ সৃষ্টি হয়। এতে প্রায়ই স্বপ্না বিভিন্ন কারণে কাউছার ও তার ভাই ছাব্বিরকে মারধর করতেন। এর ধারাবাহিকতায় একদিন কাউছার ভাত না খেয়ে ১০ টাকা চাইলে রেগে তাকে গলা টিপে হত্যা করেন মা স্বপ্না। ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠায়। এ ঘটনার পরদিন শিশুটির বাবা রাসেল বাদী হয়ে সদর থানায় হত্যা মামলা করেন। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনে শিশু কাউছারকে গলা টিপে হত্যা করা হয়েছে বলে প্রমাণ মিলে। ২০২০ সালের ১০ মার্চ স্বপ্নার বিরুদ্ধে তদন্তকারী কর্মকর্তা ও সদর মডলে থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আবুল বাশার খন্দকার আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করে। দীর্ঘ শুনানি ও সাক্ষীদের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আদালত আজ এ মামলায় রায় দেয়।