নর্থসাউথ রোডে বিস্ফোরণে নিহত বাবুল মোল্লার মরদেহ দাফন
রাজধানীর নর্থসাউথ রোডের সিদ্দিকবাজারে ভয়াবহু বিস্ফোরণের ঘটনায় নিহতদের একজন মানিকগঞ্জের ওবায়দুল হাসান বাবুল ওরফে বাবুল মোল্লা (৫৫)। তিনি পৌর এলাকার চর বেউথা গ্রামের মৃত শেখ মো. সাহেব আলীর ছেলে। আজ বুধবার (৮ মার্চ) সকালে জানাজা শেষে তাঁর মরদেহ এলাকার কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে।
নিহত বাবুল মোল্লা ঢাকায় প্রিন্টিং সাপ্লায়ার হিসেবে কাজ করতেন। তিনি পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি ছিলেন। তাঁকে হারিয়ে পরিবারে শোকের মাতম চলছে।
আজ সকালে বাবুলের মরদেহ দেখতে বাড়িতে এলাকাবাসী ও স্বজনদের ভিড় জমে যায়। বাড়ির আঙিনায় খাটিয়ায় মরদেহ রাখা হয়। এ সময় স্ত্রী, সন্তান আর স্বজনদের আহাজারিতে এক হৃদয় বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়। আকস্মিক এই মৃত্যু কিছুতেই মেনে নিতে পারছেন না স্বজনরা।
বাবুল মোল্লার স্বজনরা জানান, তাঁর এক ছেলে ও দুই মেয়ে। মেয়েদের বিয়ে হয়ে গেছে। ছেলে মাদ্রাসায় লেখাপড়া করে। খুবই ধর্মপ্রাণ মানুষ ছিলেন তিনি।
দুর্ঘটনার বর্ণনা দিয়ে নিহত বাবুলের বন্ধু আবুল বাশার জানান, গুলিস্তানের পাশে নর্থসাউথ রোডে ওই ভবনের নিচ তলায় তাঁর ‘বিসমিল্লাহ স্যানেটারি’ নামে একটি দোকান আছে। তাঁরা ১০ বন্ধু মিলে টাঙ্গাইলে সবেবরাত উপলক্ষে একটি ওয়াজ মাহফিলে যোগ দেওয়ার কথা ছিল। ট্রেনের টিকেট ছিল নিহত বাবুলের কাছে। বিকেলে বাবুল তার দোকানে এলে যাওয়ার বিষয়ে কথা হচ্ছিল। বাবুলকে দোকানে বসিয়ে রেখে তিনি ওয়াশরুমে যান। এ সময় বিকট শব্দে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। সঙ্গে সঙ্গে নিচ তলা ধ্বসে পড়ে। চারদিক লণ্ডভণ্ড হয়ে যায়। তিনি ফিরে এসে ধ্বংসস্তূপের মধ্যে বন্ধুকে খুঁজতে থাকেন। না পেয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যান। সেখানে ছুটে আসেন স্বজনরাও। কিন্তু ধ্বংসস্তূপে চাপা পড়ে বাবুলের মরদেহ বিকৃত হয়ে যায়। পরে তার পরনের জুব্বা ও তসবিহ দেখে মরদেহ শনাক্ত করা হয়।
নিহত বাবুলের ভাতিজি জামাই আব্দুর রশিদ জানান, বাবুলের শরীর থেকে একটি হাত বিচ্ছিন্ন ছিল। হয়তো হাতটি দুর্ঘটনাস্থলেই রয়ে গেছে। হাসপাতাল থেকে রাত ৪টার দিকে তাঁর মরদেহ বাড়িতে আনা হয়। বাড়ি আনার পথে তাঁর পীরের দরবার শরীফ সিদ্দিকনগরে প্রথম জানাজা পড়া হয়। এরপর সকাল ৯টায় বাড়ির পাশে চর বেউথা বায়তুল আমান জামে মসজিদ প্রাঙ্গণে দ্বিতীয় জানাজা শেষে তাঁর মরদেহ এলাকার কবরস্থানে দাফন করা হয়।