নাসের রহমানের ওপর হামলার প্রতিবাদে বিএনপির বিক্ষোভে পুলিশের বাধা
মৌলভীবাজার জেলা বিএনপির সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য এম নাসের রহমানসহ অন্য নেতাকর্মীদের ওপর আওয়ামী যুবলীগ ও ছাত্রলীগের হামলার প্রতিবাদে বিএনপি ও অঙ্গসংগঠন বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ করলে পুলিশ তাতে বাধা দেয়। আজ সোমবার (১৩ মার্চ) বিকেল এ ঘটনা ঘটে।
আজ বিকেল সাড়ে ৪টায় শহরের শাহ ঈদগাহ প্রাঙ্গণ থেকে বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়ে শাহ মোস্তফা সড়কে যাওয়ার পথে পুলিশ বাধা দেয়। পরে লেইক রোড হয়ে চৌমুহনায় যাওয়ার পথে সাইফুর রহমান সড়কে ওয়েস্টার্ন প্লাজার সামনে পুলিশ ব্যারিকেড দিয়ে মিছিলটি আটকে দেয়। এ সময় রাস্তার দুই পাশে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পরে জেলা বিএনপির সিনিয়র সহসভাপতি সাবেক পৌর মেয়র ফয়জুল করিম ময়ুন বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীদের শান্ত হওয়ার আহ্বান জানিয়ে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য দেন।
সেখানে উপস্থিত নেতাকর্মী ও জনতার উদ্দেশে ফয়জুল করিম ময়ুন বলেন, বর্তমান ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকারের পেটুয়াবাহিনী আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর উপস্থিতিতে ছাত্রলীগ-যুবলীগের সন্ত্রাসীরা পূর্ব পরিকল্পিতভাবে অতর্কিতভাবে লাঠিসোঁটা, দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র হাতে নিয়ে গত ১১ মার্চ দুপুরে শহীদ মিনারের সামনে আমাদের কেন্দ্রঘোষিত মানববন্ধন কর্মসূচিতে উপস্থিত নেতাকর্মীদের ওপর হামলা চালায়। শুধু তাই নয় সাবেক এমপি এম নাসের রহমানসহ দলের নেতাকর্মীদের ওপর নগ্ন হামলা করে গুরুতর আহত করে। পুলিশ প্রশাসন এ সময় নীরব ছিল। তারা কাউকে আটকায় নাই। বরং বিএনপির নেতাকর্মীরা যাতে নিষ্পেষিত হয়-নির্যাতিত হয়, মার খায়—এটা তারা প্রত্যক্ষ করে। এ ঘটনা মৌলভীবাজারবাসী স্বচক্ষে দেখেছেন। তিনি আরও বলেন, দ্রব্যমূল্য কমানোসহ ১০ দফা দাবিতে মানববন্ধনের মতো একটি শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পর্যন্ত তারা আজ করতে দিচ্ছে না। তারা রাস্তায় মানুষ নামলেই ভয় পায়।
ফয়জুল করিম ময়ুন এই হামলার সঙ্গে জড়িত আওয়ামী সন্ত্রাসীদের হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, ‘এখনও সময় আছে মৌলভীবাজারের অতীতের রাজনৈতিক সম্প্রতি বিনষ্ট করবেন না। সন্ত্রাসের পথ বেছে নিবেন না। বিএনপির সেই সক্ষমতা আছে সন্ত্রাসীদের রাজপথে রুখে দিতে পারে। ভবিষ্যতে সব ধরনের হামলা রাজপথেই মোকাবিলা করা হবে। কিন্তু প্রয়াত অর্থ ও পরিকল্পনামন্ত্রী এম সাইফুর রহমান সন্ত্রাসের রাজনীতি পছন্দ করতেন না। তিনি এ শিক্ষা আমাদের দেননি। তিনি করতেন উন্নয়নের রাজনীতি যার কারণে তিনি নিজ জেলা মৌলভীবাজার তথা দেশবাসীর কাছে চিরস্মরণীয় হয়ে আছেন।’
জেলা বিএনপির সহসভাপতি ফয়সল আহমেদের পরিচালনায় বিক্ষোভ মিছিলপূর্ব সমাবেশে বক্তব্য দেন জেলা বিএনপির সহসভাপতি আশিক মোশাররফ, কেন্দ্রীয় যুবদলের সহসভাপতি ও জেলা যুবদলের সভাপতি জাকির হোসেন উজ্জ্বল, সাধারণ সম্পাদক এম এ মোহিত, জেলা স্বেচ্ছাসেবকদলের সাধারণ সম্পাদক জি এম এ মুক্তাদির রাজু, সদর উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক সফিউর রহমান, সহসাংগঠনিক সম্পাদক শামীম আহমেদ, যুবদলনেতা আবুল কাশেম, স্বেচ্ছাসেবকদলের প্রথম যুগ্ম সম্পাদক পিপলু আব্দুল হাই, জেলা ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাহান চৌধুরী, জেলা ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক ইমামুল হক রিপন, সদর উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট সৈয়দ জাবেদ আলী নাইম।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন জেলা বিএনপির সহসভাপতি মো. হেলু মিয়া, প্রথম যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. ফখরুল ইসলাম, সাংগঠনিক সম্পাদক বকসী মিসবাহউর রহমান, জেলা বিএনপির সহসাধারণ সম্পাদক ও জেলা কৃষকদলের আহ্বায়ক শামীম আহমেদ, জেলা বিএনপির সহসাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহিম রিপন, প্রচার সম্পাদক মো. ইদ্রিছ আলী, সাংস্কৃতিক সম্পাদক মারুফ আহমেদ, কৃষিবিষয়ক সম্পাদক মুজাহিদ খান, সদর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান নিজাম, জেলা কৃষকদলের যুগ্ম আহ্ববায়ক আব্দুল করিম ইমানী বিভিন্ন উপজেলা কমিটির নেতারা।
উল্লেখ্য, গত ১১ মার্চ বিএনপির কেন্দ্রঘোষিত মানবন্ধন কর্মসূচি পালন করতে গেলে যুবলীগ ও ছাত্রলীগের হামলায় সাবেক সংসদ সদস্য এম নাসের রহমানসহ অন্তত ২০ জন আহত হন।