থানায় অভিযোগ করায় ব্যবসায়ীর ওপর হামলা
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় মাদক ব্যবসার অভিযোগ করার জেরে সন্ত্রাসি হামলায় সজিব কর্মকার (৩০) নামের এক ব্যবসায়ী চোখের কর্নিয়া হারিয়েছেন। বর্তমানে সেই ব্যবসায়ী ভারতের হায়দ্রাবাদে চিকিৎসাধীন। সজিব কর্মকার জেলা শহরের পূর্ব পাইকপাড়ার সুধাংশু কর্মকারের ছেলে। তিনি শহরের পুরাতন সিনেমা হল রোডে ইলেকট্রনিক মালামাল ব্যবসায়ী। এই ঘটনায় তার বড় ভাই রাজিব কর্মকার বাদি হয়ে সদর মডেল থানায় তিনজনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও ৪-৫ জনকে আসামি করে মামলা করেন।
হামলার শিকার সজিবের বড় ভাই মামলার বাদি রাজিব কর্মকার বলেন, ‘আমি ও আমার ছোট ভাই সজিব সিনেমা হল রোডে উজ্জল ইলেকট্রনিক দোকানে ব্যবসা করিছি। আমাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের আশপাশে শহরের কান্দিপাড়ার কেশব কর্মকার নামে এক যুবক সঙ্গীদের নিয়ে মাদক ব্যবসা করে আসছিল। এতে এই এলাকায় চুরি ও ছিনতাইসহ বিভিন্ন অপকর্ম বাড়ছিল। গত একবছর আগে আমরা দুই ভাই ও অন্যান্য ব্যবসায়ী ও মহল্লাবাসী সদর মডেল থানায় মাদক ব্যবসার বিরুদ্ধে অভিযোগ করি। এর পরিপ্রেক্ষিতে মাদক ব্যবসায়ী কেশব থানায় এই জাতীয় অপরাধ করবে না মর্মে মুচলেকা প্রদান করে ছাড়া পায়। এরপর থেকেই ক্ষুব্ধ হয়ে নানান সময় আমাকে ও আমার ভাইকে হুমকি দিয়ে আসছিল।’
রাজিব কর্মকার আরও বলেন, ‘এরই ধারাবাহিকতায় চলতি বছরের ২০ ফেব্রুয়ারি রাতে আমার ভাই দোকান থেকে বাড়ি ফিরছিলেন। পথিমধ্যে ফরিদুল হুদা ক্লিনিকের সামনে কেশব কর্মকার তার ভাই মাধব কর্মকারকে সঙ্গে নিয়ে দলবদ্ধভাবে দেশি অস্ত্রসস্ত্রসহ হামলা করে। এসময় তারা আমার ভাইকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে রক্তাক্ত করে চলে যায়। এই ঘটনায় আমার ভাইয়ের চোখ, নাক-ঠোঁট সহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে মারাত্মক জখম হয়। বিশেষ করে চোখের ওপর কোপ পড়ায় বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। আহত অবস্থায় চিকিৎসার জন্য তাকে উদ্ধার করে প্রথমে জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে চিকিৎসকরা তাকে ঢাকায় পাঠান। ঢাকায় চিকিৎসকরা জানিয়েছেন তার বাম চোখের কর্নিয়া নষ্ট হয়ে গেছে। চিকিৎসকদের পরামর্শে আমার ভাইকে ভারতের চেন্নাইয়ে শঙ্কর নেত্রালয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য পাঠিয়েছি। সেখানেও চিকিৎসকরা একই কথা জানিয়েছেন। চেন্নাই থেকে তাকে হায়দ্রাবাদে পাঠিয়েছেন চিকিৎসকরা। বর্তমানে তিনি হায়দ্রাবাদে চিকিৎসাধীন আছেন।’
রাজিব কর্মকার অভিযোগ করে বলেন, ‘তারা আমার ভাইয়ের এক চোখ নষ্ট করে দিয়েছে। মামলা করার প্রায় একমাস হলেও কোনো আসামিকে এখনও গ্রেপ্তার করেনি পুলিশ।’
এই বিষয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ এমরানুল ইসলাম বলেন, ‘ওই ঘটনায় একজন চোখে আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছিলেন। ইতিমধ্যে তার পরিবার থেকে মামলা করা হয়েছে। আসামিরা পলাতক রয়েছে। আসামিদের গ্রেপ্তার করতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।’