সেই রনির এবারের দাবি দ্রব্যমূল্যের নিয়ন্ত্রণ
বাংলাদেশ রেলওয়ের অনিয়ম, দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনার প্রতিবাদে একাই আন্দোলন করে দেশজুড়ে মানুষের কাছে পরিচিত মুখ হয়ে ওঠেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শিক্ষার্থী মহিউদ্দিন রনি। এর আগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডা. শহিদ মোর্তজা মেডিকেল সেন্টারের আধুনিকায়নসহ ছয় দফা দাবিতে একাই অনশন কর্মসূচি করে পুরো ক্যাম্পাসে আসেন আলোচনায়। কিছুদিন আগে চা বিক্রি করে ফের নজর কাড়েন তিনি। এবার দেশজুড়ে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য ঊর্ধ্বগতি নিয়ন্ত্রণের ‘এক দফা এক দাবি’ ঘোষণা করেছেন তিনি, ঢাবিতে শুরু করেছেন অবস্থান কর্মসূচি।
আজ বৃহস্পতিবার (২৩ মার্চ) বিকেল ৪টা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসির রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে কর্মসূচি পালন করেন রনি। দামে পরিবর্তন না আসা পর্যন্ত তার এই কর্মসূচি চলবে বলে এনটিভি অনলাইনকে জানান তিনি।
ঢাবির থিয়েটার অ্যান্ড পারফরম্যান্স স্টাডিজ বিভাগের ২০১৭-২৮ সেশনের শিক্ষার্থী এই মহিউদ্দিন রনি তার কর্মসূচির বিষয়ে বলেন, ‘গত পাঁচ মাস ধরে পড়াশোনার পাশাপাশি চা বিক্রির সুবাদে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের বাজার দরের ওঠানামা, অধিক মুনাফালোভী ব্যবসায়ীদের কৃত্রিম সংকটে পরে মানুষের নাভিশ্বাস তোলা আহাজারি খুব কাছ থেকে দেখেছি। দেখেছি মূল্যসংযোজনের নামে সিন্ডিকেটের পাতা ফাঁদে পরে উচ্চবিত্ত, মধ্যবিত্ত, নিম্নবিত্ত সকল স্তরের শ্রেণিপেশার মানুষ কীভাবে বোকা হয়ে অপলক তাকিয়ে থাকে। সেখান থেকেই আমার এই দাবি–দ্রব্যমূল্যের দাম নিয়ন্ত্রণে আনতে হবে।’
রনি বলেন, ‘দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির দায়ে সকল উৎপাদন কাঁচামাল, পণ্য, সেবাও প্রচণ্ড ব্যয়বহুল হওয়ায় মানুষ বাধ্য হয়ে ঝুকছে চুরি, ছিনতাই, ডাকাতির মতো সব অনৈতিক কাজে। চাল, ডাল, তেল, আলু সব জিনিসের দাম বাড়ে, কই বাবার বেতন তো আর বাড়ে না! শিক্ষাসামগ্রীর দাম এত বেশি যে পড়াশোনাও এখন বিলাসিতা মনে হয়। হলে থাকি, ক্যান্টিনে খাই। তবুও এত দাম যেন পড়াশোনা করতে এসে বাবার ঘাড়ে হাতি তুলে দিয়েছি।’
রনি আরও বলেন, ‘রমজান মাসে যেখানে পৃথিবীর সব দেশে দাম কমানোর প্রতিযোগিতা চলে, তার উল্টোরথে আমাদের দেশে দ্রব্যমূল্যের দাম বাড়িয়ে চলে মানুষের গলাকাটার মহোৎসব। নিরব দুর্ভিক্ষের এই সময়ে না খেয়ে মৃত্যুবরণ করার আগে জোরে বলে দিতে চাই–হে দেশবাসী; সিন্ডিকেট, কালোবাজারি, খাদ্য মজুতকারি, মধ্যস্বত্বভোগী হঠাও।’
রনি বলেন, ‘এবারের সংগ্রাম হোক নিজের বাবার শ্রমের মর্যাদা নিশ্চিত করার সংগ্রাম। এবারের সংগ্রাম দ্রব্যমূল্যের দাম কমিয়ে দৃষ্টান্তমূলক মানবতা স্থাপন করার সংগ্রাম। তাই আজ থেকে বাংলাদেশের ১৬ কোটি মানুষের পক্ষে এক দফা এক দাবি—দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।’