প্রথম আলোয় প্রকাশিত সংবাদে ঢাকা বারের প্রতিবাদ
সম্প্রতি একটি জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় স্বাধীনতা দিবসে একটি সংবাদ প্রকাশ হয়। পরে সেই সংবাদের দায়ে সাংবাদিক গ্রেপ্তার হয়ে গাজীপুরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে আছেন। ওই সংবাদ প্রকাশকে মিথ্যা, বানোয়াট, ভিত্তিহীন ও স্বাধীনতা বিরোধী বলে প্রতিবাদ করেছে ঢাকা আইনজীবী সমিতি (ঢাকা বার)।
গতকাল বৃহস্পতিবার (৩০মার্চ) ঢাকা আইনজীবী সমিতির সভাপতি মিজানুর রহমান মামুন ও সাধারণ সম্পাদক খন্দকার গোলাম কিবরিয়া জোবায়ের সাক্ষরিত এক সংবাদ বিবৃতিতে এসব মন্তব্য করেন।
আজ শুক্রবার রাজধানীর রমনা থানার ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় প্রথম আলোর সাংবাদিক শামসুজ্জামান শামসকে কেরানীগঞ্জ কারাগার থেকে কাশিমপুর কারাগারে স্থানান্তর করা হয়েছে। দুপুরে তাকে কেরানীগঞ্জ থেকে কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে আনা হয়। গতকাল ঢাকার অতিরিক্ত মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট তোফাজ্জল হোসেন কারাগারে প্রেরণের নির্দেশ দেন।
প্রথম আলোর অনলাইন ভার্সনে গত ২৬ মার্চ ২০২৩ একটি প্রতিবেদন প্রকাশ হয়। ওই প্রতিবেদনের কিছু উদ্ধৃতি নিয়ে একটি গ্রাফিক্যাল ‘কার্ড’ তাদের অফিশিয়াল ফেসবুক পেজে প্রকাশ হয়। ওই কার্ডে একটি শিশুকে ফুল হাতে জাতীয় স্মৃতিসৌধের ফটকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। জাকির হোসেন নামে একজনের উদ্ধৃতি দিয়ে ওই কার্ডে লেখা হয়, ‘পেটে ভাত না জুটলে স্বাধীনতা দিয়ে কী করুম? বাজারে গেলে ঘাম ছুটে যায়। আমাগো মাছ, মাংস আর চাইলের স্বাধীনতা লাগব।’
এই বক্তব্য নিয়ে নেটিজেনদের মধ্যে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়। পরে একাত্তর টিভির একটি প্রতিবেদনে প্রথম আলোয় প্রকাশিত ওই প্রতিবেদনটি উদ্দেশপ্রণোদিত ও সাজানো বলে দাবি করা হয়। শিশুটির বরাতে বলা হয়, ‘প্রথম আলোর সাংবাদিক তার হাতে ১০ টাকা দিয়ে এ ছবি তুলেছে।’
প্রথম আলো দাবি করে, ‘পোস্ট দেওয়ার ১৭ মিনিটের মাথায় ছবি এবং উদ্ধৃতির মধ্যে অসংগতির বিষয়টি তাদের নজরে আসে এবং সঙ্গে সঙ্গে কার্ডটি সরিয়ে নেওয়া হয়। পাশাপাশি এ সংক্রান্ত প্রতিবেদনটি সংশোধনও করা হয়। এরপর সংশোধনীর বিষয়টি উল্লেখ করে পরে তা আবার অনলাইনে প্রকাশ করা হয়। তারা দাবি করে, প্রতিবেদনের কোথাও বলা হয়নি ওই উদ্ধৃতিটি ওই শিশুর। তারা উল্লেখ করে, প্রতিবেদনে স্পষ্টভাবেই বলা হয়েছে, উক্তিটি দিনমজুর জাকির হোসেনের।’
এর দুদিন পর ২৯ মার্চ ভোরে সাভারের বাসা থেকে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) সদস্য পরিচয়ে শামসুজ্জামানকে তুলে নেওয়া হয়। এদিন রাতে তার বিরুদ্ধে রাজধানীর রমনা থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা হয়। অ্যাডভোকেট আবদুল মশিউর মালেকের ওই মামলায় প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমান, পত্রিকাটির সাভারের নিজস্ব প্রতিবেদক শামসুজ্জামান শামস, সহযোগী একজন ক্যামেরাম্যান ও অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করা হয়। তার আগে তেজগাঁও থানায় সৈয়দ মো. গোলাম কিবরিয়া নামে এক যুবলীগ নেতা বাদী হয়ে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে আরও একটি মামলা করেন।