প্যানিক ডিজঅর্ডারের জন্য কী কী কারণ দায়ী
অনেকেই প্যানিক ডিজঅর্ডারে ভুগছেন। একটা কিছু হলে সেটা নিয়ে রোগীর বাড়তি মনোযোগ দেখা যায়। এটি এক ধরনের মানসিক সমস্যা। অনেক সময় এটি খারাপ ফল বয়ে আনে। আজ আমরা একজন বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের কাছ থেকে জানব, প্যানিক ডিজঅর্ডারের জন্য কী কী কারণ দায়ী।
এনটিভির নিয়মিত স্বাস্থ্যবিষয়ক অনুষ্ঠান স্বাস্থ্য প্রতিদিনের একটি পর্বে প্যানিক ডিজঅর্ডার ও এ থেকে পরিত্রাণের উপায় নিয়ে কথা বলেছেন স্কয়ার হসপিটালে মনোরোগবিদ্যা বিভাগের সিনিয়র কনসালটেন্ট অধ্যাপক ডা. ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) মো. আজিজুল ইসলাম। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেছেন ডা. সামিউল আউয়াল স্বাক্ষর।
প্যানিক ডিজঅর্ডারের জন্য কী কী কারণ দায়ী, সঞ্চালকের এ প্রশ্নের জবাবে অধ্যাপক ডা. ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) মো. আজিজুল ইসলাম বলেন, প্যানিক ডিজঅর্ডার কিন্তু প্রথমেই চিহ্নিত করা সম্ভব হবে না। কারণ, এই যে করিম সাহেব গেলেন ডাক্তারের কাছে, ডাক্তার কিন্তু চিন্তা করবে অনেক কিছু। এক নম্বর তার হার্টের কোনও সমস্যা আছে কি না। হার্টের সমস্যা হলে কিন্তু এই লক্ষণগুলো হতে পারে। সুতরাং ডাক্তারকে এই জিনিসটা প্রমাণ করতে হবে যে তার হার্টের কোনও অসুখ নেই। তাই কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে হবে। ডাক্তার কিন্তু চিন্তা করতে পারে, তার ডায়াবেটিস ছিল, ডায়াবেটিস কমে গিয়ে শূন্যের দিকে চলে গেল কি না। হাইপোগ্লাইসেমিয়া, তাতেও কিন্তু এই লক্ষণটা হতে পারে। সুতরাং তাকে ডায়াবেটিসের পরীক্ষাটা করে নিতে হবে। তার অক্সিজেন লেভেলটা দেখতে হবে। ডাক্তার অস্থির হয়ে যাবে, তার ফুসফুসের কোনও সমস্যা হলো কি না। ফুসফুসের সমস্যা থেকেও এ রকম লক্ষণ হতে পারে। সুতরাং তার সেই পরীক্ষাও করতে হবে।
অধ্যাপক ডা. ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) মো. আজিজুল ইসলাম বলেন, ডাক্তারকে আরও পরীক্ষা করতে হবে, রোগীর ইলেক্ট্রোলাইটে কোনও সমস্যা হলো কি না। সুতরাং সেটাও তাকে করে ফেলতে হবে। হার্ট হোক, ফুসফুস হোক, ব্রেইনের অন্য কারণ হোক, আমরা বলি এন্ডোক্রাইন মেটাবলিক, সেগুলো দেখে যদি কিছু না থাকে তখন চিন্তা করতে হবে তার প্যানিক অ্যাটাক হয়েছে। কারণ, এ সমস্ত পরীক্ষা-নিরীক্ষা ভালো। এখন সে হয়তো রেফারড হবে একজন মনোরোগ বিশেষজ্ঞের কাছে। মনোরোগ বিশেষজ্ঞ চিন্তা করবেন কী কারণে তার এ রকম ঘটল। তাহলে পেছনের কারণে যেতে হবে। কারণগুলো অনেক রকম হতে পারে। আমরা মনোরোগের তিনটি কারণ হিসাব করি। একটি বায়োলজিক্যাল, একটি সাইকোলজিক্যাল ও একটি সোশ্যাল কারণ।
অধ্যাপক ডা. ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) মো. আজিজুল ইসলাম যুক্ত করেন, বায়োলজিক্যাল কারণে মানুষের কেমিক্যালসের মধ্যে পরিবর্তন হয়, ব্রেইনে নিউরোকেমিক্যাল বা নিউরোট্রান্সমিটারে পরিবর্তন হয়। সে ক্ষেত্রে বা প্যানিকের ক্ষেত্রে নরেপিনেফ্রিন, এপিনেফ্রিন বা কর্টিসল, এ রকম ভাবে বা ডোপামিন; এ সমস্ত নিউরোকেমিক্যালস বেড়ে যায়। সে জন্য তার পালপিটেশনস হয়, বুক ধড়ফড় করে, অস্থিরতা লাগে, শরীর ঘেমে যায়। বায়োলজিক্যাল কারণগুলোকে আমরা চিন্তা করতে পারি। আর সাইকোলজিক্যাল কারণটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, সেখানে একটি স্ট্রেস বা সাইকোলজিক্যাল ট্রমা, মানসিক একটি কষ্ট থেকে এই জিনিসটা হতে পারে। এ জন্য সাডেনলি কোনও একটা জিনিস তার ভেতরে অ্যাফেক্ট পড়েছে, তার মাথায় কষ্ট দিয়েছে, মনের ভেতর কষ্ট দিয়েছে, সে কষ্টটা সামলাতে পারেনি। তার মধ্যে প্যানিকটা শুরু হতে পারে।
প্যানিক ডিজঅর্ডার সম্পর্কে আরও জানতে উপর্যুক্ত ভিডিওটি সম্পূর্ণ দেখুন। এ ছাড়া স্বাস্থ্য সম্পর্কিত বিভিন্ন বিষয়ে বিস্তারিত জানতে এনটিভি হেলথ ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন এবং জানুন বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ।