ঈদ কেনাকাটা শুরু হলেও জমে ওঠেনি নিউমার্কেট
বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে রাজধানীর আজিমপুরে থাকেন শরিফুল। আগামীকাল অর্থাৎ, সোমবার স্ত্রী রাহেলা ও দেড় বছর বয়সী মেয়ে ফাতেমাকে পাঠিয়ে দেবেন রাজশাহীর নিজ গ্রামে। ভোগান্তি এড়াতে আগেভাগেই স্ত্রী-সন্তানকে পাঠিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি। আর এ জন্যই আজ রোববার (২ এপ্রিল) মেয়ে ও স্ত্রীকে নিয়ে নিউমার্কেটে এসেছেন এই চাকরিজীবী। উদ্দেশে ঈদের কেনাকাটা।
মার্কেটের নিচের দোকান থেকে প্রথমেই মেয়ে ফাতেমার জন্য একটি ফ্রক কিনেছেন শরিফুল। দাম পড়েছে সাড়ে চারশ টাকা। এ সময় বাবার কাঁধে ঘুমিয়ে ছিল মেয়ে। দাম কেমন এই প্রতিবেদকের প্রশ্নের জবাবে শরিফুল বলেন, ‘সব ধরনের কাপড়-চোপড়ের দাম বেশি। কিন্তু, কী আর করা। মেয়ে আর বউকে গ্রামে পাঠিয়ে দেব। সেজন্য, এখনি কিনতে হচ্ছে।’
শরিফুল যে দোকান থেকে মেয়ের জন্য ফ্রক কিনেছেন সেটির বিক্রেতা আলমগীর হোসেনও পণ্যের দাম বেশির কথা জানালেন। বললেন, ‘মানুষ কিনছে, দাম বেশির কথাও বলছে।’
পাশের একটি দোকানে নজরুল নামের আরেক ক্রেতা স্ত্রী জলিকে নিয়ে থ্রিপিস দেখছিলেন। শরিফুল তার স্ত্রীকে দুটি থ্রিপিস নিতে বলেন। কিন্তু, রাহেলা পারভীন স্বামীকে বললেন, ‘অন্য সময় নেব। অনেক দাম।’
এ কথা শুনে বিক্রেতা মাজহারুল ইসলাম বলেন, ‘সব পোশাকের দাম বেশি। সেজন্য বিক্রি কম।’ কেনাকাটা জমে না ওঠা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘চাকরিজীবীরা বেতন পাননি। তবে, ঈদের কেনাকাটা শুরু হয়ে গেছে।’
ছেলের জন্য জিনস প্যান্ট ও পাঞ্জাবি কিনেছেন তরিকুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘রোজা শুরুর পর থেকে ছেলে বারবার বলছিল, বাবা পাঞ্জাবি কিনে দাও। সেজন্য চলে এলাম।’
পুরোদমে ঈদের ছুটি শুরু না হলেও আগেভাগে গ্রামে ফেরা মানুষজন পরিবার-পরিজনের জন্য কেনাকাটা করছেন। তবে, এখনও জমে ওঠেনি বাজার। দাম বেশি নিয়ে ক্রেতারা অসন্তুষ্ট থাকলেও নিজেদের অপরাগতার কথা জানাচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। তাদের দাবি, বেশি দামে কিনতে হচ্ছে বলে বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। আর বেতন পেলেই ক্রেতা বাড়বে বলে আশা করছেন তারা।
নিউমার্কেটের পলি ফ্যাশনের দোকানি বলেন, ‘এখনও জমে ওঠেনি কেনাকাটা। তবে, ঈদের বিক্রি শুরু হয়েছে। গত বছর ১০ রোজার দিকে এ বছরের চেয়ে ভালো বিক্রি হয়েছিল। আগামী পাঁচ দিনের মধ্যেই বিক্রি বাড়বে, এই আশায় রয়েছি।’
নিউমার্কেটের আশপাশে মিরপুর রোডের ফুটপাতেও কিছু ক্রেতার আনাগোনা ছিল আজ। নিউমার্কেটের দ্বিতীয় তলা, গাউসিয়া ও চাঁদনি চকেও ছিল ক্রেতারা। তবে, ঈদ কেনাকাটার যে বিশেষ ভিড়, তা ছিল না কোথাও। যদিও বেচাবিক্রি শুরু হয়েছে, জানান বিক্রেতারা।
চাঁদনি চকের নারী শিশুদের পোশাক বিক্রেতা হাবিবুল ইসলাম বলেন, ‘বিক্রি কম হলেও ঈদের কেনাকাটা শুরু হয়ে গেছে। একই পোশাকের দাম গত বছরের চেয়ে অন্তত ১৫০ টাকা বেশি।’