দারিদ্র্য হার ১৬ শতাংশে নেমে এসেছে : তথ্যমন্ত্রী
তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘আমাদের দারিদ্র্য হার মোট জনসংখ্যার ২০ শতাংশের বেশি থেকে এখন ১৬ শতাংশে নেমে এসেছে। আমাদের মাথাপিছু আয় ভারতকে ছাড়িয়ে গেছে। বিশ্বে আমরা ৩৫তম জিডিপির দেশ আর পারচেজিং পাওয়ার প্যারিটি বা পিপিপিতে আমাদের অর্থনীতি হচ্ছে ৩১তম। এখন জিডিপির আকারে মালয়েশিয়ার চেয়ে বড় অর্থনীতির দেশ আমরা এবং আগামী কয়েক বছরের মধ্যে আমাদের দেশ ২৭তম অর্থনীতির দেশ হবে।’
আজ সোমবার (৩ এপ্রিল) জাতীয় চলচ্চিত্র দিবস ২০২৩ উদযাপন উপলক্ষে রাজধানীর তেজগাঁওয়ে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন কর্পোরেশনের (বিএফডিসি) জহির রায়হান কালার ল্যাব মিলনায়তনে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
দেশের চলচ্চিত্র ইতিহাসের দিকে তাকিয়ে সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, ‘১৯৫৭ সালের এই দিনে তৎকালীন তরুণ নেতা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান প্রাদেশিক পরিষদে চলচ্চিত্র উন্নয়ন কর্পোরেশন বিল উত্থাপন করেছিলেন। তিনি অনুধাবন করেছিলেন যে, সংস্কৃতির সমস্ত শাখার সন্নিবেশে যা সৃষ্টি হয়, সেটি হলো চলচ্চিত্র। চলচ্চিত্রে গান থাকে, নৃত্য থাকে, চলচ্চিত্র সমস্ত শাখার সন্নিবেশ ঘটায়। জাতির পিতা এ সকল কিছু তখনই অনুধাবন করেছিলেন বলেই বিলটি উত্থাপন করেছিলেন।’
বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আবার আমাদের চলচ্চিত্র শিল্প ঘুরে দাঁড়িয়েছে, এ জন্য অনেকগুলো পদক্ষেপ তিনি গ্রহণ করেছেন উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘সিনেমা হল নির্মাণ এবং পুরনো হল সংস্কারের জন্য সহজ শর্তে ১ হাজার কোটি টাকার এক বিশেষ তহবিল গঠন করা হয়েছে। ইতোমধ্যে অনেকেই দরখাস্ত করেছেন। অনেকে সিনেপ্লেক্স চালু করেছেন এবং বন্ধ হয়ে যাওয়া সিনেমা হলও চালু হয়েছে। দু’বছর করোনা মহামারির বেড়াজালে আবদ্ধ না থাকলে আরও সিনেমা হল চালু হতো।’
হাছান মাহমুদ জানান, ‘চলচ্চিত্রে অনুদানের পরিমাণ ও সংখ্যা দুইই বেড়েছে। এফডিসিতে নতুন দৃষ্টিনন্দন কমপ্লেক্স নির্মাণ কাজ চলছে, সেখানে চারটি শুটিং স্পট থাকবে এবং একজন নির্মাতা সেখান থেকে একটা সিনেমা বানিয়ে মুক্তি দিতে পারবে। এছাড়াও চলচ্চিত্র শিল্পের জন্য নেওয়ায় ১শ’ একর জায়গায় চলচ্চিত্র নির্মাণের সকল সুবিধা সৃজন করা হচ্ছে।’
এ সময় নির্বাচন কমিশন থেকে সদ্য পাওয়া সিদ্ধান্ত নিয়ে সাংবাদিকরা মন্ত্রীকে প্রশ্ন করেন। তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেন, ‘আমরা দেশকে ডিজিটাল করতে পেরেছি। বহু নাগরিক সেবা ও সুবিধা এখন ডিজিটাল। তবে নির্বাচন কমিশন স্বাধীন। কী পদ্ধতিতে নির্বাচন হবে সেই সিদ্ধান্ত নেওয়ার এখতিয়ার নির্বাচন কমিশনের আছে। আমি এই মাত্র আপনাদের মাধ্যমে জানতে পারলাম তারা ঘোষণা করেছে যে, ৩০০ আসনেই প্রচলিত পদ্ধতিতে নির্বাচন হবে। এ নিয়ে আমাদের দল দলীয়ভাবে আলাপ আলোচনা করে জানাবে। তবে নির্বাচন কমিশন স্বাধীন এবং স্বাধীনভাবেই যে কোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে পারে।’
মন্ত্রী আরো বলেন, ‘আরেকটি বিষয় হচ্ছে, ইভিএম কেনা আর মেরামতের জন্য নির্বাচন কমিশন থেকে যে বাজেট চাওয়া হয়েছে সেটি এক বিলিয়ন ডলারের বেশি। আজকের পরিস্থিতিতে এই এক বিলিয়ন ডলার খরচ করার যৌক্তিকতা আছে কি না তা নিয়েও অনেকে প্রশ্ন তুলেছেন।’
বিএফডিসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক নুজহাত ইয়াসমিনের সভাপতিত্বে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. ফারুক আহমেদ বিশেষ অতিথি হিসেবে এবং চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির সভাপতি কাজী হায়াৎ, পরিচালক মতিন রহমান এবং প্রযোজক খোরশেদ আলম খসরু আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন।