সরকারের ব্যর্থতায় দেশে অসহিষ্ণুতা তৈরি হয়েছে : মঈন খান
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারের ব্যর্থতায় দেশে অসিষ্ণুতা ও বৈষম্য দেখা দিয়েছে উল্লেখ করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান বলেছেন, ‘বিশ্বের যে দেশে এ ধরনের বৈষম্য বিরাজমান সে দেশে প্রবৃদ্ধি অর্জন সম্ভব নয়। আজকে ঢাকা শহরে শুধু ফ্লাইওভার আর এক্সপ্রেসওয়ে দিয়ে দেশের মানুষের উন্নয়ন হয় না। যদি না আমরা মানুষের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও নিরাপত্তা দিতে না পারি।’
আজ বুধবার রাজধানীতে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের সংগঠন ইউনিভার্সিটি টিচার্স এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে ইফতার পূর্ব সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ড. আব্দুল মঈন খান বলেন, ‘বাংলাদেশ আমরা স্বাধীন করেছিলাম পাকিস্তানের শোষণ ও নিপীড়ন থেকে মুক্তির জন্য। কিন্তু এই সরকার আবারও দেশে অলিখিত বাকশাল কায়েম করেছে। তারা মানুষের মতামতের তোয়াক্কা করে না। যেমনটি তারা ৭২ সালে একদলীয় বাকশাল কায়েম করেছিল। আজকে বিএনপির ৩৫ লাখ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়েছে। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে কারারুদ্ধ করেছে। ইনশাআল্লাহ সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে দেশে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার হবে, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে আমরা মুক্ত করতে পারবো।’
ড. মঈন খান বলেন, ‘আমাদের স্বাধীনতার লক্ষ্য ছিলো বাংলাদেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা ও অর্থনৈতিক মুক্তি। সেই লক্ষ্যে বাংলাদেশের মানুষ একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়ে দেশ স্বাধীন করেছিল। আমরা সেই গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করবো ইনশাআল্লাহ। হারানো গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করে জনগণের কাছে ফেরত দেওয়া হবে।’
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘শিক্ষকেরা যে মানুষের জন্য নিবেদিত প্রাণ সেটি ইউট্যাবের এই ইফতার আয়োজন প্রমাণ করে। স্বাধীনতার ৫০ বছর পার হলেও এই বাংলাদেশে কেন আজও পথশিশু রয়েছে। এই সরকারের ব্যর্থতায় সমাজে ব্যবধান ও অসহিষ্ণুতা তৈরি হয়েছে। বাংলাদেশে এখন ধনী-গরিবের ব্যবধান দ্রুতগতিতে বেড়ে চলেছে। এটাকে রোধ করতে না পারলে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বা সমৃদ্ধি কোনোটাই টেকসই হবে না।’
ড. মঈন খান আরও বলেন, ‘শিক্ষা জাতির মেরুদণ্ড। কিন্তু এই সরকারের শিক্ষানীতি হলো দেশের মানুষকে অশিক্ষিত করে রাখা। মানুষ যাতে তাদের অধিকারের কথা বলতে না পারে, তারা শিক্ষিত হয়ে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে না পারে সেজন্য সরকার শিক্ষা ব্যবস্থা ধ্বংস করে দিচ্ছে। তবে আমরা শিক্ষা ব্যবস্থা উন্নত করবো। আমাদের চলমান আন্দোলন শান্তিপূর্ণভাবে চলছে।’
অনুষ্ঠানে সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেন, ‘ইউট্যাব যে ব্যাতিক্রম ইফতার অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে তা সরকারের জন্য চরম শিক্ষা। দেশের গরিব মানুষকে সাথে নিয়ে যে ইফতার করতে পারে এটি তার অনন্য দৃষ্টান্ত। কেননা বর্তমান সরকার জনগণের প্রতি উদাসীন। দেশে চলছে হাহাকার। এরইমধ্যে রাজধানীর বঙ্গবাজারে যে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা তা খুবই রহস্যময়। ক্ষতিগ্রস্থ ব্যবসায়ীদের অভিযোগ তাদেরকে উচ্ছেদ করার জন্য এটা ঘটানো হতে পারে। আজকে দেশের মানুষ তাদের মুক্তির জন্য লড়াই শুরু করেছে। কারণ তারা প্রকৃতপক্ষে স্বাধীন বা মুক্ত নয়।’
রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) এই দোয়া ও ইফতার মাহফিল হয়। বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সুস্থতা কামনা ও সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব কারাবন্দী রুহুল কবির রিজভীসহ সব রাজবন্দীর মুক্তি দাবিতে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের সংগঠন ইউনিভার্সিটি টিচার্স এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ইউট্যাব)।
দোয়া ও ইফতার মাহফিলে গরিব, অসহায় ও পথশিশুদের মধ্যে ৬০ জনকে ঈদের নতুন পোশাক উপহার হিসেবে প্রদান করেন অতিথিবৃন্দ। ইউট্যাবের প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক ড. এবিএম ওবায়দুল ইসলামের সভাপতিত্বে ও মহাসচিব অধ্যাপক ড. মো. মোর্শেদ হাসান খান ও সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যাপক নূরুল ইসলামের যৌথ পরিচালনায় ইফতারের আগে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য দেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, ইউট্যাবের সাবেক সভাপতি অধ্যাপক ড. আ ফ ম ইউসুফ হায়দার, বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. ফরহাদ হালিম ডোনার, সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের সদস্যসচিব কাদের গণি চৌধুরী, ডক্টরস এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ড্যাব) অধ্যাপক ডা. হারুন আল রশিদ, ইফতার মাহফিল উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক লুৎফর রহমান প্রমুখ।