পুড়েছে বঙ্গবাজার, কাঁদছেন নারায়ণগঞ্জের ব্যবসায়ীরাও
রাজধানীর বঙ্গবাজারে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় শুধু সেখানকার ব্যবসায়ীরাই নন, ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন নারায়ণগঞ্জের সবচেয়ে বড় পাইকারি রেডিমেড গার্মেন্টস ও হোসিয়ারি শিল্পের ব্যবসায়ীরাও। বঙ্গবাজারের অগ্নিকাণ্ডে প্রায় চার হাজার ব্যবসায়ী নিঃস্ব হয়ে গেছেন। আর তাদের সঙ্গে ব্যবসায়িক লেনদেন থাকায় নারায়ণগঞ্জের বিখ্যাত পাইকারি পোশাকের শতাধিক ব্যবসায়ীর প্রায় ৩০০ কোটি টাকা বকেয়া থাকায়, তা পাওনা নিয়ে অনিশ্চয়তায় পড়েছেন। এতেই মাথায় হাত তাদের। সেই চিন্তার ভাঁজ পড়েছে এখনকার পোশাক ব্যবসায়ীদের। তবে উভয়পক্ষের সংকট নিরসনে তদন্ত কমিটি করা হয়েছে নারায়ণগঞ্জ চেম্বার অব কমার্সের পক্ষ থেকে।
শীতলক্ষ্যার নদীর কূলঘেঁষা শত বছরের পুরোনো ছোট বড় মিলিয়ে ২০ হাজারের অধিক দেশের একমাত্র বৃহৎ পাইকারি রেডিমেড গার্মেন্টস, হোসিয়ারিশিল্প ও বিক্রয়কেন্দ্রের জন্য বিখ্যাত বাণিজ্যনগরী নারায়ণগঞ্জ। এখানে বিদেশি পোশাকের আদলে তৈরি হয় স্কার্ট, ফ্রগ, লেহেঙ্গা, থ্রিপিস, পাঞ্জাবি ও সেন্ডুগেঞ্জিসহ বিভিন্ন পোশাক। প্রতিবছর বঙ্গবাজারসহ সারা দেশে এখান থেকে পাইকারি পোশাক বিক্রি হয় প্রায় দুই হাজার কোটি টাকার।
বঙ্গবাজারের ভয়াবহ আগুনের ঘটনায় এবার দুশ্চিন্তায় সময় পার করছেন এখানকার ব্যবসায়ীরা। যেখানে ঈদের আগে এই সময় মার্কেট থাকে জমজমাট এখন তার উল্টোচিত্র। মার্কেটগুলোতে পাইকারদের আসা শূন্যের কোঠায় নেমেছে।
এখানকার ব্যবসায়ী মেসার্স নিউ আল মাহমুদ গার্মেন্টসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জানে আলম, প্রাইম গার্মেন্টসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক নূর হোসেন মনির, আল মুজিব গার্মেন্টসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. সেলিম, রাফসান ফ্যাশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কাউসার আহমেদ, আওলাদ গার্মেন্টসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আওলাদ, একে ফ্যাশন এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবুল কালামসহ বেশ কয়েকজন ব্যবসায়ী এনটিভি অনলাইনকে জানান, শবে মেরাজ থেকে মূলত বাকি পোশাক কিনে নিয়ে থাকেন বঙ্গবাজারের ব্যবসায়ীরা। সেগুলো বিক্রি শেষে ২০ রমজান থেকে ঈদের দুই-একদিন আগ পর্যন্ত পরিশোধ করা হয় বকেয়া টাকা। পাশাপাশি বিক্রি হয় প্রচুর পরিমাণে পোশাক। আগুনের আগে তাদের কাছ থেকে কেউ ৩৫ লাখ, কেউ বা ২ কোটি কেউ আবার ৩ কোটি এমন করে শতাধিক ব্যবসায়ী প্রায় ৩০০ কোটি টাকা পাবে বঙ্গবাজারের ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে। এই টাকার কিছু অংশ পরিশোধ না করা হলে কর্মচারীদের বেতন, পাইকারি থান কাপড়ের ব্যবসায়ীদের পাওনা টাকা পরিশোধ না করতে পারলে বড় ক্ষতির মুখে পড়তে পারে বলে জানান এখানকার ব্যবসায়ীরা।
নারায়ণগঞ্জ চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রিজের পরিচালক শেখ নাজমুল আলম সজল এনটিভি অনলাইনকে জানান, বঙ্গবাজার ও নারায়ণগঞ্জের ব্যবসায়ীদের ক্ষতি নিরসনে চেম্বার অব কমার্সের পক্ষ থেকে ৭ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। বঙ্গবাজারের ব্যবসায়ীদের সাথে নারায়ণগঞ্জের কোন ব্যবসায়ীর কি পরিমাণ টাকা পাওনা তা তদন্ত করে, তদন্ত কমিটি এক সপ্তাহের মধ্যে রিপোর্ট দেবে। রিপোর্ট পেলে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের মাধ্যমে সুষ্ঠু সমাধান করা হবে।