এনআইডি জালিয়াতির মামলায় জামিন পেলেন ডা. সাবরিনা
অবশেষে এনআইডি জালিয়াতি মামলায় জামিন পেলেন চিকিৎসক সাবরিনা শারমিন ওরফে সাবরিনা আরিফ চৌধুরী। করোনার সময় দুর্নীতির অভিযোগে আলোচিত ও সমালোচিত হন জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের সাবেক এই চিকিৎসক। তথ্য গোপন করে দ্বিতীয় এনআইডি করার অভিযোগে নির্বাচন কমিশন এই মামলা করে। আদালত গতকাল সোমবার (১৭ এপ্রিল) এই প্রতারণার মামলায় জামিন দেন। ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মাহবুব আহমেদ এই আদেশ দেন।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, গতকাল মামলার অভিযোগ গঠনের জন্য দিন ধার্য ছিল। তার আইনজীবী জামিন চেয়ে আবেদন করলে বিচারক শুনানি শেষে তা মঞ্জুর করেন। একইসঙ্গে এ মামলার অভিযোগ গঠন শুনানির জন্য আগামী ১৫ জুন দিন ধার্য করেছেন আদালত।
এর আগে ২০২০ সালের ৩০ আগস্ট সাবরিনার বিরুদ্ধে বাড্ডা থানায় মামলাটি দায়ের করেন গুলশান থানা নির্বাচন অফিসার মোহাম্মদ মমিন মিয়া। এ মামলায় গত বছরের ২৪ নভেম্বর গোয়েন্দা পুলিশের উপপরিদর্শক রিপন উদ্দিন আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন।
অভিযোগপত্রে যা বলা আছে
অভিযোগপত্রে তদন্ত কর্মকর্তা বলেছেন, সাবরীনার প্রথম জাতীয় পরিচয়পত্রে (এনআইডি) জন্ম তারিখ দেওয়া হয় ১৯৭৬ সাল। দ্বিতীয় এনআইডিতে জন্ম তারিখ দেওয়া হয় ১৯৮৩ সাল। অথচ তিনি ১৯৯১ সালে রাজধানীর ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে এসএসসি পাস করেন। ২০০০ সালে স্যার সলিমুল্লাহ (মিটফোর্ড) মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে এমবিবিএস পাস করেন। ১৯৮৩ সালে জন্ম তারিখ ধরলে তিনি মাত্র আট বছর বয়সে এসএসসি ও ১৭ বছরে এমবিবিএস পাস করেন।
তদন্ত কর্মকর্তা অভিযোগপত্রে উল্লেখ করেন, ডা. সাবরিনা সম্পূর্ণ মিথ্যা তথ্য দিয়ে প্রথম এনআইডির তথ্য গোপন করে দ্বিতীয় এনআইডি তৈরি করেছেন, যা আইনগত অপরাধ। অভিযোগপত্রে আরও বলা হয়েছে, ডা. সাবরিনার সঠিক জন্ম তারিখ দেওয়া হয়েছে ১৯৭৬ সালের ২ ডিসেম্বর। তিনি ২০১৬ সালে দ্বিতীয় এনআইডিতে ১৯৮৩ সালের ২ ডিসেম্বর জন্ম তারিখ সংক্রান্ত সম্পূর্ণ মিথ্যা তথ্য দেন।
তদন্ত কর্মকর্তা অভিযোগপত্রে আরও উল্লেখ করেন, ডা. সাবরিনা শারমিনের বিরুদ্ধে জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন আইন ২০১০-এর ১৪ ধারা অনুসারে জাতীয় পরিচয়পত্র প্রাপ্তির লক্ষ্যে বিকৃত ও মিথ্যা তথ্য দেওয়া ও ১৫ ধারা অনুসারে একাধিক জাতীয় পরিচয়পত্র নেওয়ার অপরাধ সত্য বলে প্রমাণিত হয়েছে। তিনি বয়স কমিয়ে জালিয়াতির উদ্দেশে দ্বিতীয় টিআইএন নম্বর প্রাপ্ত হয়েছে এবং প্রতারণামূলকভাবে দ্বিতীয় এনআইডি খাটি দলিল হিসেবে তার অফিসে এইচআরআইএস এ ব্যবহার করে পিআরএলের সময় বৃদ্ধি করায় পেনাল কোডের ৪৬৫/৪৬৮/৪৭১ ধারায় অপরাধ করেছে।
এর আগে, গত ২০২০ সালের ৩০ আগস্ট সাবরিনার বিরুদ্ধে বাড্ডা থানায় মামলাটি করেন গুলশান থানা নির্বাচন কর্মকর্তা মোহাম্মদ মমিন মিয়া।
এজাহার থেকে জানা গেছে, বর্তমানে সাবরিনার দুটি এনআইডি কার্ড সক্রিয়। দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) বিষয়টি টের পাওয়ার পর বিস্তারিত জানতে ইসির কাছে তথ্য চায়।
গত বছরের ১৯ জুলাই ঢাকার অতিরিক্ত মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট তোফাজ্জল হোসেন জাল করোনা সনদ দেওয়ার মামলায় সাবরিনা ও তার স্বামী আরিফুলসহ ছয়জনকে ১১ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেন। এ মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত হয়ে কারাগারে সাবরিনা।