গর্ভপাতের কত মাস পর গর্ভধারণের চেষ্টা করবেন
মাতৃত্বের স্বাদ কে না পেতে চায়। কিন্তু শারীরিক নানান জটিলতার কারণে অনেকের তা সম্ভব হয়ে ওঠে না। তবে বিজ্ঞান এখন বহু দূর এগিয়েছে। ট্রিটমেন্ট পদ্ধতিতে এসেছে পরিবর্তন। অনেকের বারবার গর্ভপাত হয়। কেন হয়, আজ আমরা একজন বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের কাছ থেকে জানব, গর্ভপাতের কত দিন পর থেকে বাচ্চা নেওয়ার পরিকল্পনা শুরু করা যায়।
এনটিভির নিয়মিত স্বাস্থ্যবিষয়ক অনুষ্ঠান স্বাস্থ্য প্রতিদিনের একটি পর্বে বারবার গর্ভপাত সম্পর্কে কথা বলেছেন বিআরবি হসপিটাল লিমিটেডে বন্ধ্যত্ব বিভাগের কনসালটেন্ট ডা. শাহীনা বেগম শান্তা। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেছেন পুষ্টিবিদ নুসরাত জাহান দীপা।
আপনাদের কাছে যখন কোনও রোগী প্রথম গর্ভপাত নিয়ে আসেন কিছু ট্রিটমেন্ট নিতে ও কিছু পরামর্শ নেওয়ার জন্য, তখন আসলে সেকেন্ড বেবি নেওয়ার জন্য আপনারা কত দিন পরে সাজেস্ট করে থাকেন যে সেকেন্ড বেবি তাঁরা ছয় মাস বা এক বছর বা কত মাস পর নেওয়ার জন্য আপনারা সাজেস্ট করে থাকেন এবং কতটা নিরাপদ, সঞ্চালকের এ প্রশ্নের জবাবে ডা. শাহীনা বেগম শান্তা বলেন, ছয় মাসের মতো লম্বা গ্যাপ দেওয়ার দরকার নেই। কারণ, একটা লসের পরে কাপলরা অনেক সময় উদ্বেগে ভোগে, ডিপ্রেশনে ভোগে। এক বছরও গ্যাপ দেওয়ার দরকার নেই। সে রকম যদি কোনও রিস্ক ফ্যাক্টর না থাকে; যেমন কারও যদি অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস থাকে, কারও থাইরয়েড হরমোন এমন অনিয়ন্ত্রিত যেটা প্রেগন্যান্সির ক্ষেত্রে অন্তরায় হবে, অথবা সে এমন কোনও ড্রাগস খাচ্ছে, যেটা প্রেগন্যান্সি নিলে বেবির জন্য ক্ষতির কারণ হবে এবং সেটা তাকে টারমিনেট করে ফেলতে হবে, সেসব ক্ষেত্রে আমরা নির্দিষ্ট সময় বেঁধে দিই। না হলে সাধারণত আমরা দুই থেকে তিন মাস পরেই বলি, একটা মিসকারেজের পরে প্রেগন্যান্সি ট্রাই করতে পারবে।
আপনি বলছিলেন, থাইরয়েড বা ডায়াবেটিসজনিত যদি কোনও সমস্যা থাকে, সে ক্ষেত্রে কিছু প্রবলেম হতে পারে। এই মিসকারেজ হওয়ার সাথে থাইরয়েড অথবা ডায়াবেটিসের সরাসরি কোনও সম্পর্ক আছে কি না, সঞ্চালকের এ প্রশ্নের জবাবে ডা. শাহীনা বেগম শান্তা বলেন, অবশ্যই সম্পর্ক আছে। এটাকে আমরা বলি এন্ডোক্রাইনোলজিক্যাল কজ। থাইরয়েড হরমোন যদি ইমব্যালেন্স থাকে, একটা গ্রুপ আছে যাদের হাইপোথাইরয়েডিজম, যাদের টিএইচএস হরমোন বেশি থাকে, কিন্তু তার শরীরে আসলে থাইরয়েড হরমোনের ঘাটতি আছে। তাদের ক্ষেত্রে অবশ্যই এবং অবশ্যই প্রেগন্যান্সির আগে থাইরয়েড হরমোন নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। সাধারণত আমরা টিএইচএস আমরা ২.৫-এর ভেতর রাখতে বলি।
ডা. শাহীনা বেগম শান্তা বলেন, আরেকটা গ্রুপ আছে, যাদের টিএইচএস হরমোন কম, কিন্তু আসলে তাদের শরীরে থাইরয়েড হরমোনের আধিক্য আছে। তাদের দেখা যায় যে পালস অনেক বেশি থাকে, তাদের বডি ওয়েট কমে যায়, মেজাজ খিটখিটে থাকে, চোখটা একটু বাইরের দিকে বের হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়, তাদের খুব এক্সেসিং সোয়েটিং হয়। তাদেরও থাইরয়েড হরমোনটা কন্ট্রোল করে নিয়ে প্রেগন্যান্সি প্ল্যান করাটা ভালো। যদি কোনও ওষুধ খেতে থাকে, বিশেষ করে হাইপারথাইরয়েডিজম রোগীরা, তাদের ক্ষেত্রে প্রেগন্যান্সি হওয়া মাত্র ডাক্তারের শরণাপন্ন হয়ে যেটা সেফ, সে রকম ওষুধে সুইচ করে যেতে হবে। হাইপোথাইরয়েডের রোগীদের দেখা যায়, রোগীদের ফলোআপ করতে হয় কিছুদিন পরপর এবং দেখা যায় যে থাইরয়েড হরমোনটার ডোজ আসলে বাড়তে থাকে প্রেগন্যান্সি পিরিয়ডে।
বারবার গর্ভপাত সম্পর্কে আরও জানতে উপর্যুক্ত ভিডিওটি সম্পূর্ণ দেখুন। এ ছাড়া স্বাস্থ্য সম্পর্কিত বিভিন্ন বিষয়ে বিস্তারিত জানতে এনটিভি হেলথ ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন এবং জানুন বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ।