গোপালগঞ্জে ৩০০ হেক্টর জমিতে বেড়েছে ফসলের আবাদ
গোপালগঞ্জ সদর উপজেলায় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তত্ত্বাবধানে ৩০০ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন ফসলের আবাদ বেড়েছে। এসব ফসলের মধ্যে রয়েছে ধান, তরমুজ, সবজি, ডাল ও তেল।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ফসল উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে এক ইঞ্চি জমিও আনাবাদি না রেখে আবাদের আওতায় আনার আহ্বান জানান। এ আহ্বানে সাড়া দিয়ে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের গোপালগঞ্জ সদর উপজেলা কৃষি অফিস বিভিন্ন ফসলের আবাদ বাড়ানোর জন্য গত বছরের নভেম্বর থেকে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করতে শুরু করে। তারা কৃষকদের বিনামূল্যে প্রশিক্ষণ, প্রণোদনার বীজ, সার ও কৃষি উপকরণ বিতরণ করে। এছাড়া কৃষকের ক্ষেত সরেজমিনে পরিদর্শন করে তারা কৃষককে পরামর্শ দিয়েছে। কৃষকরাও আনাবাদি জমি চাষাবাদে ব্যাপক আগ্রহ প্রকাশ করেন। তারা মাঠে নেমে গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার ৩০০ হেক্টর জমিতে ফসলের আবাদ করেন।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের গোপালগঞ্জ সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মাফরোজা আক্তার বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর আহ্বানে সাড়া দিয়ে আমরা গোপালগঞ্জ সদর উপজেলায় ফসলের আবাদ বাড়ানোর উদ্যোগ গ্রহণ করি। কৃষকের মাঠে গিয়ে আমরা সরেজমিনে পরামর্শ দিয়েছি। কৃষকরা ৩০০ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন ফসলের আবাদ বাড়িয়েছে। এরমধ্যে কৃষক ১৩৪ হেক্টরে বোরোধান, ১০৪ হেক্টরে সবজি, ৩৮ হেক্টরে ডাল, ১৯ হেক্টরে তরমুজ ও পাঁচ হেক্টরে তেল ফসলের আবাদ করেন।’
গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার গোবরা ইউনিয়নের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা পার্বতী বৈরাগী বলেন, ‘কৃষি উৎপাদন বাড়ানোর লক্ষ্যে আমরা মাঠে মাঠে গিয়েছি। অনাবাদি জমি চাষাবাদের আওতায় আনতে তাদের উদ্বুদ্ধ করেছি। তারা আমাদের আহ্বানে ব্যাপক সাড়া দিয়েছে। তাই আনাবাদি জমি চাষাবাদের আওতায় আনা সম্ভব হয়েছে। এ কাজ করতে গিয়ে কৃষকদের সাথে আমাদের সম্পর্ক আরও নিবিড় হয়েছে।’
গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার চন্দ্রদীঘলিয়া গ্রামের কৃষক চয়ন ভূইয়া বলেন, ‘কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের গোপালগঞ্জ সদর উপজেলা কৃষি অফিসের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের উৎসাহে উদ্বুদ্ধ হয়ে আনাবাদি দুই একর জমিতে পেঁপের আবাদ করেছি। পেঁপে গাছের অবস্থা বেশ ভালো। এছাড়া বিভিন্ন সবজির চাষাবাদ করে ভালো ফলন পেয়েছি। এ ব্যাপারে গোপালগঞ্জ সদর উপজেলা কৃষি অফিস আমাদের সব ধরনের সহযোগিতা দিয়েছে। তাই আনাবাদি অন্তত চার একর জমিতে সবজি ও ফলের আবাদ করেছি।’
গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার গোপীনাথপুর গ্রামের কৃষক হাবিব শেখ বলেন, ‘আমার ২ বিঘা জমি আছে। বছরে এই দুই বিঘা জমিতে দুই বার ফসল ফলাই। বছরের অন্য সময় জমি পানির নিচে থাকে। আমার বাড়ির পাশের ৩০ শতাংশ বসত বাড়ির জমি সারা বছর পতিত থাকে। তাই কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর এ পতিত জমিতে ফসল চাষাবাদে আমাকে উদ্বুদ্ধ করে। তাদের কাছ থেকে বীজ পেয়ে প্রথম লাল শাক আবাদ করি। লাল শাক বিক্রির পর লাউ চাষ করি। লাউ শেষ হলে সেখানে ডাটার চাষ করেছি। এখান থেকে এখন ডাটা তুলে বাজারে বিক্রি করছি। গত পাঁচ মাসে এ জমি থেকে উৎপাদিত শাক, সবজি দিয়ে পরিবারের পুষ্টির চাহিদা পূরণ করেছি। বাড়তি শাক, সবজি বাজারে বিক্রি করে অন্তত ৩০ হাজার টাকা আয় করেছি। আমার দেখাদেখি প্রতিবেশিরা বাড়ির পাশের পতিত জমি চাষাবাদের উদ্যোগ নিয়েছেন।’