গরমে ৫ উপায়ে ত্বকের যত্ন
গরমকালের তাপ কেবল আপনার শরীরেই না, ত্বকেও প্রভাব ফেলে। যদি এ সময় অনেকে ফ্লোরাল টপস, পনিটেইল, হাই হিল পড়ে অনেকেই ফ্যাশন করেন। কিন্তু যদি ত্বকই সুন্দর না থাকে তাহলে ফ্যাশনে নিজেকে সুন্দর দেখানো মুশকিল। গরমের তাপ, দূষণ এবং ময়লা ত্বককে নিস্তেজ, ডিহাইড্রেটেড, ঘামযুক্ত এবং তৈলাক্ত করে তুলতে পারে। তাই মেনে চলতে হবে কিছু স্কিনকেয়ার রুটিন। যা অনুসরণ করলে আপনার ত্বক সতেজ এবং হাইড্রেটেড থাকবে। ত্বকের ধরণ অনুযায়ী উপযুক্ত পণ্যগুলি ব্যবহার করুন।
কসমেটিক ইঞ্জিনিয়ার এবং স্কিনেলার প্রতিষ্ঠাতা ডলি কুমার এইচটি লাইফস্টাইলের সাথে কিছু টিপস শেয়ার করেছেন, যা গরমকালে ত্বকের সুপারফুড হিসেবে কাজ করবে। প্রচন্ড গরমেও ত্বক রাখবে উজ্জ্বল।
পেঁপের ফেস ক্লিনজার
পেঁপে পেপাইন এবং কাইমোপ্যাপাইন এনজাইম সমৃদ্ধ। এটি একটি ভাল এক্সফোলিয়েটর বটে। পেঁপে ভিত্তিক ক্লিনজার ব্রণ কমায়। ত্বকের মৃত কোষ দূর করতে সাহায্য করে। বাড়িতে এই প্রাকৃতিক ক্লিনজারটি তৈরি করতে, তিন টেবিল চামচ পেঁপের পাল্প, এক টেবিল চামচ লেবুর রস এবং এক টেবিল চামচ মধু মিশিয়ে মসৃণ পেস্ট বানিয়ে নিন। এটি আপনার মুখ এবং ঘাড়ে প্রয়োগ করুন। ২০ মিনিটের জন্য রেখে দিন। তারপরে ঠাণ্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
জাফরানের টোনার
জাফরান স্কিনকেয়ারের মূল্যবান উপাদানগুলির মধ্যে একটি। এটি প্রদাহ কমায়। ব্রণ মোকাবেলায় কার্যকর। ত্বককে পুনরুজ্জীবিত এবং উজ্জ্বল করতে এই গরমে জাফরান-ভিত্তিক স্কিনকেয়ার রুটিন ব্যবহার করে দেখুন। এক কাপ কাঁচা দুধে জাফরান ১-২ মিনিটের জন্য ভিজিয়ে রাখুন। এবার এই জাদুকরী মিশ্রণটি আপনার মুখে প্রয়োগ করুন। শুকিয়ে গেলে হালকা গরম পানি দিয়ে আপনার মুখ ধুয়ে ফেলুন। আপনি চাইলে গোলাপজল দিয়েও জাফরানের টোনার বানিয়ে নিতে পারবেন। এ ক্ষেত্রে, গোলাপজলে দুই ঘন্টা জাফরান ভিজিয়ে রেখে দিন। তারপরে ব্যবহারের জন্য স্প্রে বোতলে স্থানান্তর করুন। এটি একটি প্রাকৃতিক টোনার হিসেবে ব্যবহার করতে পারবেন।
হলুদের স্ক্রাব এবং মাস্ক
হলুদ অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ। এতে অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি বৈশিষ্ট্য রয়েছে। হলুদ আপনার ত্বককে উজ্জ্বল এবং পুনরুজ্জীবিত করতে পারে। গরমকালে স্কিনকেয়ার রুটিনে হলুদ অন্তর্ভুক্ত করার সর্বোত্তম উপায় হল স্ক্রাব হিসেবে ব্যবহার করা। এটি তৈরি করতে, ১ টেবিল চামচ বেসন , ১/২ চা চামচ হলুদ, ২-৩ টেবিল চামচ কাঁচা দুধ এবং ১ টেবিল চামচ মধু মিশিয়ে নিন। আলতো করে পেস্টটি আপনার ত্বকে প্রয়োগ করুন। দশ থেকে পনের মিনিটের জন্য অপেক্ষা করুন। এবার একটু পানি নিয়ে বৃত্তাকার গতিতে আলতো করে ত্বক স্ক্রাব করুন। এরপর হালকা গরম পানি দিয়ে আপনার মুখ ধুয়ে ফেলুন।
ফেস মাস্ক তৈরি করতে ২ টেবিল চামচ দই, ১/২ থেকে ১ চা চামচ হলুদ এবং ১ টেবিল চামচ মধু মিশিয়ে নিন। পেস্টটি আপনার মুখে লাগান। ১০-১৫ মিনিট পরে ধুয়ে ফেলুন।
তরমুজের ফেস মাস্ক
গরমকালে আমরা ত্বকের ক্ষেত্রে যে প্রধান সমস্যার মুখোমুখি হই তা হল সান ট্যান। ট্যানিং এবং পিগমেন্টেশন থেকে মুক্তি পাওয়ার উপায় হল প্রাকৃতিক ফেস মাস্ক প্রয়োগ করা। তরমুজ ভিটামিন এ এবং সি দিয়ে ভরপুর। যা স্বাস্থ্যকর এবং তারুণ্যময় ত্বকের জন্য অপরিহার্য। হাইপারপিগমেন্টেশনকে দূর করতে তরমুজের ফেস মাস্ক লাগান। মধু এবং ঠাণ্ডা তরমুজের রস সমান পরিমাণে মিশিয়ে নিন। এটি আপনার মুখ এবং ঘাড়ে প্রয়োগ করুন। নিয়মিত ব্যবহারে ট্যান অদৃশ্য হয়ে যাবে।
অ্যালোভেরা
গরমে প্রাকৃতিক অ্যালো-ভিত্তিক ময়েশ্চারাইজার ক্রিম ব্যবহার করুন। এটি আপনার ত্বককে হাইড্রেটেড রাখবে। বাদাম এবং নারকেল তেলের সাথে অ্যালোভেরা জেল মিশ্রিত করুন। ভাল ফলাফলের জন্য প্রতিদিন এটি ব্যবহার করুন। আপনার ত্বক কোমল এবং হাইড্রেটেড থাকবে।
ডলি কুমার ত্বক উজ্জ্বল রাখতে আরও জানিয়েছেন, "আপনি যা খান তা আপনার ত্বকে প্রদর্শিত হয়। অতএব, আপনার এ সময় মৌসুমী ফল এবং সুষম খাদ্য গ্রহণ করা উচিত। লেবু পানি, নারিকেলের পানি বেশি করে পান করা উচিত। এসব শীতল পানীয় আপনাকে হাইড্রেটেড রাখবে। একই সময়ে, বাড়িতে বসে ত্বকের যত্ন নিন। পছন্দের সুপারফুডগুলি নির্বাচন করুন”।
সূত্র- হিন্দুস্তান টাইমস