ফখরুলের ব্যাখ্যা হলফনামা আকারে চান সুপ্রিম কোর্ট
বিচার বিভাগ নিয়ে বিরূপ মন্তব্য করায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের কাছে হলফনামা আকারে লিখিত ব্যাখ্যা চেয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।
আগামীকাল মঙ্গলবার লিখিতভাবে এই ব্যাখা আদালতে দাখিল করতে বলা হয়েছে। একই সঙ্গে এদিন নাশকতার তিন মামলার আপিলের শুনানিও হওয়ার কথা রয়েছে।
আজ সোমবার প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের বেঞ্চ এ আদেশ দেন। বেঞ্চের অন্য সদস্যরা হলেন বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন, বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী, বিচারপতি মির্জা হোসেইন হায়দার ও বিচারপতি বজলুর রহমান।
এর আগে গত ১৮ ফেব্রুয়ারি মির্জা ফখরুলকে এ বিষয়ে ব্যাখা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন আপিল বিভাগ। এর পরিপ্রেক্ষিতে আজ আইনজীবীর মাধ্যমে ব্যাখা দিতে গেলে আদালত লিখিত হলফনামা আকারে ব্যাখ্যা দিতে নির্দেশ দেন।
গত ৭ ফেব্রুয়ারি সিলেট জেলা ও মহানগর বিএনপির দ্বিবার্ষিক সম্মেলনে নিজের বক্তব্যে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অভিযোগ করে বলেন, ‘সরকার বিচার বিভাগকে নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছে। গণতন্ত্রের সব প্রতিষ্ঠানকে সুপরিকল্পিতভাবে ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে। দেশে গণতন্ত্র নেই, বিচার বিভাগেরও স্বাধীনতা নেই।’
আজ আদালতে মির্জা ফখরুলের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার রফিক উল হক ও অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন ও রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম।
২০১৫ সালের ৫ জানুয়ারিকে ঘিরে ২০ দলীয় জোটের আন্দোলনের সময় পল্টন থানার নাশকতার তিন মামলায় মির্জা ফখরুলকে হাইকোর্ট অন্তর্বর্তীকালীন জামিন দিয়ে রুল জারি করেন। এর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ আপিলে গেলে আপিল বিভাগ রুল নিষ্পত্তি না হওয়া পযন্ত জামিন দেন। সেইসাথে জামিনের মেয়াদ শেষে আত্মসমর্পণ করতে নির্দেশ দেন। এ ছাড়া হাইকোর্টের রুলও নিষ্পত্তি করতে বলেন।
গত ২৪ নভেম্বর ওই তিন মামলায় রুল নিষ্পত্তি করে মির্জা ফখরুলকে তিন মাসের জামিন দেন হাইকোর্ট। ফখরুলের আইনজীবীদের দাবি, রুল নিষ্পত্তির মাধ্যমে সাধারণত মামলার বিচার শেষ না হওয়া পর্যন্ত জামিন হয়। কিন্তু এখানে মাত্র তিন মাসের জামিন দেওয়া হয়েছে। এ কারণে হাইকোর্টের আদেশ চ্যালেঞ্জ করে মির্জা ফখরুল ৭ জানুয়ারি লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) করেন।
পরে চেম্বার বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী আবেদনটি আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে শুনানির জন্য পাঠিয়ে দেন।
গত ১৮ ফেব্রুয়ারি আপিল বিভাগ এ বিষয়ে আদেশের জন্য ২২ ফেব্রুয়ারি দিন রাখেন। সেদিন আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জয়নুল আবেদীন। এ আবেদনের শুনানি সময় মির্জা ফখরুলের সিলেটে করা বক্তব্যের প্রসঙ্গ টেনে প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহা বক্তব্যটির বিষয়ে লিখিত ব্যাখ্যা জানতে চান।