সিটি ব্যাংকের তিন কর্মকর্তাসহ বিদেশি গ্রেপ্তার
রাজধানীতে বিভিন্ন ব্যাংকের এটিএম কার্ড জালিয়াতির ঘটনায় জড়িত সন্দেহে পোল্যান্ডের নাগরিকসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। গতকাল রোববার সন্ধ্যায় গুলশান এলাকায় অভিযান চালিয়ে এদের গ্রেপ্তার করা হয়।
আজ সোমবার দুপুর ১২টার দিকে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার মো. মনিরুল ইসলাম এ তথ্য জানান।
গ্রেপ্তার হওয়া পোল্যান্ডের নাগরিকের নাম পিওতর স্চেপান মাজুরেক। অন্য তিনজন বাংলাদেশি নাগরিক। তিনজনই সিটি ব্যাংকের কর্মকর্তা। তাঁরা হলেন মকসেদ আলম ওরফে মাকসুদ, রেজাউল করিম ওরফে শাহিন ও রেফাজ আহমেদ ওরফে রনি। এ সময় তাদের কাছ থেকে একটি পাসপোর্ট ও জার্মান সরকারের দেওয়া পরিচয়পত্র (আইডি কার্ড) জব্দ করা হয়েছে। ডিএমপির গোয়েন্দা ও অপরাধতথ্য বিভাগের (উত্তর) সাইবার অপরাধ প্রতিরোধ টিমের অভিযানে এঁদের গ্রেপ্তার করা হয়।
মনিরুল ইসলাম জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে পিওতর জানান যে, তিনি ইউক্রেনে জন্মগ্রহণ করলেও মূলত জার্মানির নাগরিক। কিন্তু অন্যের পাসপোর্ট চুরি করে টমাস থেকে পিওতর বনে যান। এই নাম নিয়ে মিথ্যা পরিচয় দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেন। পুলিশ কর্মকর্তা আরো জানান, এই জালিয়াতির সঙ্গে আন্তর্জাতিক চক্র জড়িত। পূর্ব ইউরোপ মূলত রোমানিয়া, বুলগেরিয়া, ইউক্রেন ও পোল্যান্ডভিত্তিক এ আন্তর্জাতিক অপরাধ চক্র ইউরোপসহ আফ্রিকা এশিয়ার বিভিন্ন দেশে তৎপর রয়েছে। এক লন্ডন প্রবাসী বাংলাদেশি, বুলগেরিয়ার একজন ও ইউক্রেনের এক নাগরিককে নিয়ে এর পুরো পরিকল্পনা করেন পিওতর স্চেপান মাজুরেক।
ডিএমপি জানিয়েছে, গত ৭ ও ৮ ফেব্রুয়ারি ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক, সিটি ব্যাংক ও ইস্টার্ন ব্যাংক লিমিটেডের (ইবিএল) এটিএম বুথ থেকে জালিয়াতির মাধ্যমে মোটা অঙ্কের অর্থ হাতিয়ে নেয় এই জালিয়াত চক্র। বিদেশি নাগরিকের হাতে সাইবার সংক্রান্ত এমন অপরাধ দেশে এটাই প্রথম। আধুনিক তথ্যপ্রযুক্তির অপব্যবহারের মাধ্যমে ব্যাংকের এটিএম বুথের নিরাপত্তা দুর্বলতাকে কাজে লাগিয়ে কার্ড স্কিমিং পদ্ধতিতে তথ্য চুরি করে অবিকল কার্ড বানিয়ে জালিয়াতির অনন্য উদাহরণ সৃষ্টি করেছে এ অপরাধী চক্র।
ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মনিরুল ইসলামের সার্বিক নির্দেশনায় গোয়েন্দা ও অপরাধ তথ্য বিভাগের উপকমিশনার শেখ নাজমুল আলম, অতিরিক্ত উপকমিশনার মো. শাহাজাহান ও সিনিয়র সহকারী পুলিশ কমিশনার মো. নাজমুল ইসলামের নেতৃত্বে অভিযানটি পরিচালিত হয়।