নির্বাচনে রাশিয়ার হস্তক্ষেপের প্রমাণ রয়েছে, দাবি এরদোয়ানের প্রতিদ্বন্দ্বীর
দরজায় কড়া নাড়ছে তুরস্কের নির্বাচন। এই নির্বাচনে রাশিয়া হস্তক্ষেপ করছে এমন অভিযোগ করেছেন বর্তমান প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ানের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী ও রিপাবলিকান পিপলস পার্টির (সিএইচপি) নেতা কেমাল কিলিকদারোগলু। রুশ হস্তক্ষেপের প্রমাণ তার পার্টির কাছে রয়েছে বলে দাবি করেছেন প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী। তিনি অভিযোগ করেন, রোববারের নির্বাচনকে সামনে রেখে অনলাইনে মিথ্যে কনটেন্ট প্রচার করছে রাশিয়া, যার প্রমাণ রয়েছে।
আজ শুক্রবার (১২ মে) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে লন্ডন ভিত্তিক সংবাদ সংস্থা রয়টার্স।
আজ রয়টার্সকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে কিলিকদারোগলু বলেন, ‘তুরস্কের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে রাশিয়ার হস্তক্ষেপ গ্রহণযোগ্য নয়। তবে, আমি জয়ী হলে মস্কোর সঙ্গে আঙ্কারার ভালো সম্পর্ক বজায় রাখব।’
সামরিক জোট ন্যাটোর সদস্য তুরস্ক জ্বালানি আমদানির দিক থেকে রাশিয়ার ওপর অনেকটা নির্ভরশীল। দুটি সূত্র এই সপ্তাহে রয়টার্সকে জানিয়েছে, প্রাকৃতিক গ্যাসের বিল হিসেবে রাশিয়াকে ৬০ কোটি মার্কিন ডলার দেওয়া থেকে বিরত রয়েছে আঙ্কারা। এই অর্থ পিছিয়ে ২০২৪ সালে দিবে তুরস্ক। আর এতেই বুঝা যায় এরদোয়ান ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সম্পর্ক কতটা অটল।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম টুইটারে নির্বাচনে রাশিয়ার হস্তক্ষেপের কথা জানিয়েছিলেন কিলিকদারোগলু। বিষয়টি নিয়ে রয়টার্সের পক্ষ থেকে এই প্রেসিডেন্ট প্রার্থীকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘মস্কো অনলাইনে মিথ্যে কনটেন্ট ছড়াচ্ছে, এমন প্রমাণ আমার কাছে রয়েছে। প্রমাণ না থাকলে আমি টুইট করতাম না। তবে, এ বিষয়ে আমাদের দল রুশ দূতাবাসে যোগাযোগ করেনি।’ তবে, ওই অনলাইন কনন্টেন্টটি কী সে বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানাননি সিএইচপির এই নেতা।
রাশিয়ার বিরুদ্ধে অন্যদেশের নির্বাচনে হস্তক্ষেপ করার বিষয়টি নতুন নয়। যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনেও হস্তক্ষেপ করার অভিযোগ রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে। তবে, বিষয়টি অস্বীকার করে আসছে মস্কো।
আগামী রোববারের ভোটটিকে তুরস্কের ইতিহাসের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচন বলা চলে। কারণ, অর্থনৈতিক সংকটে থাকা তুরস্কের ভবিষ্যৎ কী হবে, আন্তর্জাতিক জোটে তাদের অবস্থান ও আঙ্কারার পথ কোন দিকে যাবে তা নির্ধারিত হবে।
কিলিকদারোগলু বলেন, ‘বিদেশি একটি দেশ নির্দিষ্ট একটি রাজনৈতিক দলের জন্য আমাদের নির্বাচনে হস্তক্ষেপ করছে। আমি চাই, বিষয়টি গোটা বিশ্ব জানুক। এ জন্যই আমি সবার জন্য উন্মুক্ত টুইটারে বিষয়টি তুলে ধরেছি।’
তবে, তুরস্কের নির্বাচনে হস্তক্ষেপের বিষয়টি অস্বীকার করেছে মস্কো। ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেন, ‘যারা কিলিকদারোগলুর কাছে এসব অভিযোগ দিয়েছে তারা মিথ্যাবাদী। রাশিয়া তুরস্কের সঙ্গে তার সম্পর্ককে অত্যন্ত মূল্য দেয়।’
এদিকে, আঙ্কারায় নিজ কার্যালয়ে দেওয়া সাক্ষাৎকারে নির্বাচনে জয়ী হওয়ার আশা পুর্নব্যক্ত করেছেন কিলিকদারোগলু। প্রাক্তন সরকারি কর্মকর্তা ৭৪ বছর বয়সী সিএইচপির এই নেতা রাশিয়ার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়িক, অর্থনৈতিক ও পর্যটন সম্পর্ক আরও জোরদার করার কথা জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘আমরা আমাদের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক নষ্ট করব না। তবে, আমাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ কাম্য নয়।’
প্রেসিডেন্ট হলে রাশিয়া ও ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে কাজ করার কথা জানিয়েছেন কিলিকদারোগলু। তবে, একটি স্বাধীন দেশকে অন্য একটি দেশের দখল করাকে সঠিক মনে না করার কথাও জানিয়েছেন তিনি।