আন্দোলন করুক, জ্বালাও-পোড়াও করলে ছাড় দেওয়া হবে না : প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘আন্দোলন করুক কোনো আপত্তি নেই, কিন্তু জ্বালাও-পোড়াও এবং মানুষ হত্যা করলে তাহলে তাদের ছাড়ব না। মানুষের ক্ষতি আর করতে দেব না।’ আজ সোমবার (১৫ মে) বিকেলে সদ্য সমাপ্ত ত্রিদেশীয় সফর নিয়ে গণভবনে সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রীকে এসময় নির্বাচনের বিষয়ে প্রশ্ন করলে জবাবে তিনি বলেন, ‘নির্বাচন আসছে, ভয় পাব কেন? আমি জনগণের জন্য কাজ করেছি। জনগণ যদি চায়, আমরা আছি, না চাইলে নেই।’
‘আজকে বাংলাদেশ ডেভোলপমেন্ট দেশের মর্যাদা পেয়েছে’ উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘ব্রিটেনে যেভাবে ইলেকশন করে, আমরাও সেভাবে ইলেকশন করব। পার্লামেন্টে যে সদস্যরা আছে, তারা যদি নির্বাচনকালীন সরকারে আসতে চায়; তাহলে আমরা আছি। এর আগেও আমরা নিয়েছি। এমনকি, ২০১৪ সালে খালেদা জিয়াকে আহ্বান করেছি, তাও তো তিনি অসেনি। তারাও (বিএনপি) তো এখন পার্লামেন্টে নেই। তারা মাইক লাগিয়ে বলে সরকার হটাবে। আমরা তো তাকে কিছু বলছি না, আমাদের সময় কি নামতে দিয়েছে?’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘গ্রেনেড হামলা করেও হত্যার চেষ্টা করেছে। আমাদের ২১ হাজার নেতাকর্মীদের হত্যা করেছে। আগুন দিয়ে পুড়িয়ে পুড়িয়ে মানুষ মেরেছে। নির্বাচন ঠেকাতে ৫০০ স্কুল পুড়িয়ে দিয়েছে। সাড়ে তিন হাজার লোক আগুনে পোড়া, তিন হাজার ৮০০ গাড়ি পুড়িয়েছে, ২৭টি রেল পুড়িয়েছে, ৯টি লঞ্চ পুড়িয়েছে এবং ৭০টি সরকারি অফিস পুড়িয়েছে।’
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘তারা তো জ্বালাও-পোড়াও, ওই গুলো করে গেছে। আমি বলে দিয়েছে—আন্দোলন করুক কোন আপত্তি নেই। কিন্তু জ্বালাও-পোড়াও যদি করে, মানুষ হত্যা করে, তাহলে তাদের ছাড়ব না। মানুষের ক্ষতি আর করতে দেব না। সেই পোড়া মানুষদের যন্ত্রণা ও চেহারা দেখলে আপনাদের কষ্ট হয় না? একটা পরিবার কী দুরবস্থায় আছে, কেউ কি খবর রাখেন? নিজের সন্তানকে কোলে নিতে পারে না, নিজের সন্তানের চেহারা দেখতে পারে না। কী বিভৎস অবস্থার সৃষ্টি করেছে বিএনপি জামায়াত।’
শেখ হাসিনা আরও বলেন, ‘২০০৮ সালের নির্বাচনের তাদের ২০ দলীয় ঐক্যজোট সিট পেল ২৯টা। আর দালালি! কার পয়সায় এই আন্দোলন করছে? কোথা থেকে এই টাকা পাচ্ছে? বাংলাদেশের মানুষ কি অন্ধ হয়ে গেছে, চোখে দেখে না?’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘হাজার হাজার টাকা লুট করে নিয়ে গেছে, আর কাদের মদদে করছে সেটা একটু খোঁজ নিন। এত টাকা কোথায় পাচ্ছে, এই যে এত এত লোক নিয়ে আসে, আর প্রতিদিন মাইক লাগিয়ে বক্তৃতা দিচ্ছে, এটা তো এমনি এমনি বিনা পয়সায় হচ্ছে না।’
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘তারা যতটুকু পারুক আন্দোলন করুক। আমার জনগণ শক্তি। আমার হারানোর কিছু নেই। আমি আমার দেশের জন্য কাজ করছি।’ তিনি বলেন, ‘মানিল্ডারিং করেছে খালেদা জিয়া ও তার দুই ছেলে। এখনও বিএনপির বড় নেতাদের টাকা বিভিন্ন দেশের ব্যাংকে জমানো আছে ও টাকা ফ্রিজ করা আছে। আর মানিলন্ডারিং করে কারা টাকা বিদেশে পাচার করে নিয়ে বিদেশে বড় বড় নাম কিনেছে, তাও খুঁজে বের করেন।’ তিনি আরও বলেন, ‘আওয়ামী লীগ যত বেশি কাজ করে, তার পেছনে বেশি লেগে থাকে, ওটা আমি কেয়ার করি না। আমি দেশের জন্য কাজ করি, মানুষের কল্যাণের জন্য কাজ করি। মানুষের কল্যাণ করাই আমার কাজ। আমাদের সাকসেস এখানে। আজকে বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট কান্ট্রি হিসেবে উপাধি পেয়েছে। বাংলাদেশ এখন এগিয়ে যাচ্ছে।’
এদিকে, সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, জাতীয় সংসদের উপনেতা ও সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম ও প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম প্রমুখ।