‘সাধারণ ক্ষমায় জেল থেকে মুক্তি’, নকল ডেপুটি জেলার সেজে প্রতারণা
নকল ডেপুটি জেলার সেজে ঝালকাঠির এক নারীর কাছ থেকে স্বামীকে মুক্তি দেওয়ার কথা বলে ৫০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় ঝালকাঠি সদর উপজেলার সারেঙ্গল গ্রামের সিরাজুল ইসলাম খানের স্ত্রী শাহনাজ পারভীন শনিবার (২০ মে) রাতে থানায় অভিযোগ করেছেন।
অভিযোগে জানা যায়, শাহনাজ পারভীনের স্বামী সিরাজুল ইসলাম ফৌজদারী মামলায় সাজাপ্রাপ্ত হয়ে বরিশাল কেন্দ্রীয় কারাগারে আছেন। শাহনাজ বেগম বর্তমানে ঝালকাঠি শহরের মধ্য চাঁদকাঠি এলাকায় একটি ভাড়া বাসায় বসবাস করেন। বৃহস্পতিবার সকাল ৯টায় তাঁর মোবাইলফোনে ০১৮৩৫১২২৮৮০ ও ০১৮৭১৫৪৮২০৩ এ নম্বর থেকে দুই দফায় কল আসে। তাকে জানানো হয়, বরিশালের কেন্দ্রীয় কারাগারে ডেপুটি জেলার শহিদুল ইসলাম তাঁর সঙ্গে কথা বলবেন। শাহনাজ পারভীনকে ফোনে কথিত জেলার শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘সরকার কিছু সাজাপ্রাপ্ত আসামিকে সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করেছেন। এই তালিকায় আপনার স্বামীর নামও রয়েছে। তাকে মুক্ত করার জন্য জরুরি ভিত্তিতে ০১৮৩৫১২২৮৮০ নম্বরে ৫০ হাজার টাকা পাঠাতে হবে।’ শাহনাজ বেগম স্বামীর মুক্তির খবর শুনে আত্মহারা হয়ে কোনকিছু বিবেচনা না করেই ওই ব্যক্তির নম্বরে বিকাশ করে ২৭ হাজার টাকা এবং ঢাকায় অবস্থানকারী তাঁর মেয়ের নম্বর থেকে আরও ২৩ হাজার টাকাসহ সর্বমোট ৫০ হাজার টাকা পাঠিয়ে দেন। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় তিনি বরিশাল কেন্দ্রীয় কারাগারে যান। কারাগারে গেটে ডিউটিরত কারারক্ষী সুবেদার মাইনুল ইসলামের কাছে তাঁর স্বামীর সাধারণ ক্ষমা ও মুক্তির বিষয়ে জানতে চান। ডেপুটি জেলার শহিদুল ইসলাম তাকে ফোন করেছেন বলেও জানান। কারারক্ষী সুবেদার মাইনুল ইসলাম তাকে জানান, বরিশাল কেন্দ্রীয় কারাগারে ডেপুটি জেলার শহিদুল ইসলাম নামে কেউ নেই। কারা কর্তৃপক্ষ আসামিকে কোনো সাধারণ ক্ষমা করেননি।
এ সময় শাহনাজ বেগম কান্নায় ভেঙে পড়েন। তিনি বুঝতে পারেন ওই ব্যক্তি মোবাইলফোনে তাঁর সঙ্গে প্রতারণা করেছে। প্রতারণার বিষয়টি তাৎক্ষণিকভাবে বরিশালের কারা কর্তৃপক্ষ অবগত করা হয়। কারা কর্তৃপক্ষ বিষয়টি থানা পুলিশ ও র্যাবকে জানানোর পরামর্শ দেন। মোবাইলফোনের রেকর্ড অনুযায়ী, এই দুই প্রতারকদের মধ্যে ০১৮৩৫১২২৮৮০ নম্বর ব্যবহারকারী ব্যক্তির নাম মো. আকাশ এবং ০১৮৭১৫৪৮২০৩ নম্বর ব্যবহারকারী ব্যক্তির নাম মেহেদী রহমান।
ঝালকাঠি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাসির উদ্দিন সরকার বলেন, আমরা অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করেছি। দুই প্রতারক ব্যক্তির মুঠোফোন নম্বর থেকে আমরা তাদের জাতীয় পরিচয়পত্র সংগ্রহ করেছি। তাদের অবস্থান নিশ্চিত করে গ্রেপ্তার করা হবে।