তিন মাসের আগাম জামিন পেলেন নিপুণ রায় চৌধুরী
কেরানীগঞ্জে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় করা মামলায় বিএনপিনেত্রী নিপুণ রায় চৌধুরীকে আগাম জামিন দিয়েছেন হাইকোর্ট।
আজ সোমবার (২৯ মে) হাসপাতালের বেড থেকে অ্যাম্বুলেন্সে করে আদালতে হাজির হয়ে নিপুণ রায় আবেদন জানালে বিচারপতি হাবিবুল গণি ও বিচারপতি আহমেদ সোহেলের বেঞ্চ তাকে তিন মাসের আগাম জামিন দেন।
নিপুণ রায় চৌধুরীর পক্ষে আদালতে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট নিতাই রায় চৌধুরী ও ব্যারিস্টার বদরুদ্দোজা বাদল।
এর আগে সকালে ব্যান্ডেজ মাথায় বাঁধা অবস্থায় হাইকোর্টে হাজির হন নিপুণ রায় চৌধুরী। জামিন শুনানি শেষে নিপুণ আবারও হাসপাতালে যাবেন বলে জানিয়েছেন তাঁর আইনজীবীরা। তারা জানান, রাজধানীর একটি হাসপাতালে নিপুণ রায় চৌধুরী চিকিৎসাধীন। তাঁর মাথার ব্যান্ডেজ এখনও খোলা হয়নি। গ্রেপ্তারের আশঙ্কায় তিনি হাসপাতাল থেকে সরাসরি হাইকোর্টে এসেছেন।
গত শুক্রবার (২৬ মে) কেরানীগঞ্জের জিনজিরায় আওয়ামী লীগ ও বিএনপি নেতাকর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এ ঘটনায় পরদিন শনিবার (২৭ মে) বিএনপির ঢাকা জেলা সাধারণ সম্পাদক নিপুণ রায় চৌধুরীসহ দলটির ১০৮ নেতাকর্মীর নামে মামলা হয়। কেরানীগঞ্জ মডেল থানায় মামলাটি করেন জিনজিরা ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহসভাপতি এস এম সুমন।
পুলিশ জানায়, এ মামলায় ঢাকা জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নিপুণ রায় চৌধুরী, নির্বাহী কমিটির সদস্য নাজিম উদ্দীন মাস্টার, দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মোজাদ্দেদ আলী বাবু, দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানা বিএনপির সহসভাপতি ওমর শাহনেওয়াজ, দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানা যুবদলের সাবেক সভাপতি মোকাররম হোসেন সাজ্জাদসহ ১০৮ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাতনামা অনেককে আসামি করা হয়েছে। মামলার এজাহারে আওয়ামী লীগ কার্যালয় ভাঙচুর, হত্যার উদ্দেশে মারধর করে গুরুতর জখম, চুরি ও প্রাণনাশের হুমকি দেওয়ার অভিযোগ করা হয়।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মুন্সি আসিকুর রহমান বলেন, ‘মামলার এজাহারভুক্ত ৯ আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তারা হলেন—কাইয়ুম, মাহবুব, আহসান হাবিব, কবির, সেলিম, জাকির, আসিক, নবাব আলী ও সোবহান। অন্যদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।’
গত শুক্রবার (২৬ মে) জিনজিরা দলীয় কার্যালয়ের সামনে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে জনসমাবেশ করে ঢাকা জেলা বিএনপি। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। কর্মসূচি চলার এক পর্যায়ে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি নেতাকর্মীদের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এ সময় ইটের আঘাতে নিপুণ রায়ের মাথা ফেটে যায়। এছাড়া বিএনপিকর্মীরা দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয় ভাঙচুর এবং নেতাকর্মীদের মারধর করে আহত করেন। সংঘর্ষে দুই পক্ষের ৩০ জন আহত হন।
কেরানীগঞ্জ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মামুনুর রশীদ বলেন, ‘শুক্রবার সকালে বিএনপিনেত্রী নিপুণ রায় চৌধুরীর নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে হামলা চালানো হয়েছে। এই ঘটনায় আওয়ামী লীগের ২০ থেকে ২৫ নেতাকর্মী আহত হয়েছেন।’