এখানে তো গণতন্ত্রের ‘গ’ও নাই : খুলনা বিভাগীয় কমিশনার
“এখানে তো গণতন্ত্রের ‘গ’ও নাই। সাবধান করে দিলাম আপনাকে। আপনার ছবি আমি তুলেছি।” খুলনা সিটি করপোরেশনের নির্বাচনি মতবিনিময় সভায় সরকারদলীয় নেতাকর্মীদের এমন হুঁশিয়ারি দিয়েছেন খুলনার বিভাগীয় কমিশনার।
আজ মঙ্গলবার (৩০ মে) দুপুরে খুলনা শিল্পকলা একাডেমিতে সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়রসহ সব প্রার্থীর সঙ্গে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের (সিইসি) মতবিনিময় সভায় এ হুঁশিয়ারি দেন খুলনার বিভাগীয় কমিশনার।
উচ্চ আদালতের নির্দেশে স্বতন্ত্র মেয়র পদে প্রার্থিতা ফেরত পাওয়া শফিকুর রহমান মুশফেক সিইসির দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, আসন্ন নির্বাচনে প্রতিটি ওয়ার্ডে ছাত্রলীগ, যুবলীগসহ অঙ্গ সংগঠনগুলোর কার্যালয়কে ভোটের ক্যাম্প করা হয়েছে। সেখান থেকে নির্বাচনি প্রচারণা চালানো হচ্ছে। এ সময় পেছন থেকে সরকারদলীয় এক কাউন্সিলর ‘ভুয়া ভুয়া, কথা সত্য না, মিথ্যা’ বলে চিৎকার করছিলেন। তাঁর চিৎকারে স্বতন্ত্র মেয়র পদপ্রার্থীর অভিযোগ অন্যরা শুনতে পাচ্ছিল না।
এই সময় মতবিনিময় সভার সভাপতি খুলনা বিভাগীয় কমিশনার মো. জিল্লুর রহমান চৌধুরী চেয়ার ছেড়ে মাইকের সামনে এসে চিৎকারকারীর উদ্দেশে বলেন, “পেশি শক্তি শো করছেন? বেশি বাড়বেন না। আইন হাতে নিবেন না। সে কথা বলছে, তাকে কথা বলতে দেন। নির্বাচন কমিশনের মাননীয় সচিবের অনুমতি নিয়ে সে কথা বলছে প্রধান নির্বাচন কমিশনার মহোদয়ের উপস্থিতিতে। আপনি তাকে ভুয়া ডাকবেন কেন? এখানে তো গণতন্ত্রের ‘গ’ও নাই। সাবধান করে দিলাম আপনাকে। আমি আপনার ছবি তুলেছি। এখানে রাষ্ট্র বসে আছে। আপনাদের সবাইকে অনুরোধ করি, যে যার কথা বলেন—শালীনতার সাথে বলেন, নিয়মের সাথে বলেন। নিজেকে মহামহীম মনে করবেন না।”
বিভাগীয় কমিশনার আরও বলেন, “এখানে পানি ঘোলা করার চেষ্টা করবেন না। এটা আমরা করতে দেব না। কেউ বেশি বাড়াবাড়ি করলে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। খুলনায় নির্বাচনের সুন্দর একটি পরিবেশ রয়েছে। নির্বাচন নিরপেক্ষ হবে, সুন্দর হবে।”
বিভাগীয় কমিশনারের এমন হুঁশিয়ারিতে চিৎকারকারীরা চুপ হয়ে যান এবং স্বতন্ত্র মেয়র পদপ্রার্থী শফিকুর রহমান মুশফেক তাঁর অভিযোগ পুনরায় বলেন। এই ঘটনায় হলজুড়ে পিনপতন নীরবতার সৃষ্টি হয়।
শিল্পকলা একাডেমিতে আজ সকাল সাড়ে ১০টা থেকে বেলা সোয় ১টা পর্যন্ত চলে এ মতবিনিময় সভা। সিইসি কাজী হাবিবুল আওয়াল, নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. আহসান হাবিব, নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের সচিব মো. জাহাংগীর আলম, পুলিশ কমিশনার, ডিআইজি, জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার উপস্থিতিতে নির্বাচনে অংশ নেওয়া প্রার্থীদের নানা অভিযোগ ও দাবি-দাওয়া শোনেন এবং আইনগত ব্যাখা দেন।
পরে বিকেলে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এক সাংবাদিক নির্বাচনে অনিয়মের ব্যাপারে ইসির অবস্থান বিষয়ে সিইসির দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তিনি জানান, প্রমাণসহ অভিযোগ করলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।