সরকারের পতন না ঘটিয়ে ঘরে ফিরব না : মুফতি ফয়জুল করিম
বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ভোট জালিয়াতির অভিযোগ এনে ইসলামী আন্দোলনের মেয়র পদপ্রার্থী মুফতি সৈয়দ মোহাম্মদ ফয়জুল করিম বলেছেন, ‘আমরা রাজপথে নেমেছি, আমার রক্ত ঝরেছে। এ সরকারের পতন না ঘটিয়ে ঘরে ফিরব না। আমাদের তীব্র আন্দোলনেই এই জালেম সরকার ও জালেম বাহিনীর পতন ঘটবে।’
অভিযোগ রয়েছে, আজ সোমবার (১২ জুন) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে বরিশাল নগরীর কাউনিয়া মেইন রোডের একটি কেন্দ্রে প্রবেশ করাকে কেন্দ্র করে হামলার শিকার হন হাতপাখার প্রার্থী মুফতি সৈয়দ ফয়জুল করিম। এ হামলার জন্য তিনি ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের স্থানীয় নেতারা দায়ী বলে জানান তিনি।
নিজের রক্তাক্ত শরীর সাংবাদিকদের দেখিয়ে ফয়জুল করিম বলেন, ‘আমার গায়ে সরকারের লোকেরা হাত দিয়েছে ও রক্তাক্ত করেছে। আমি একজন মুরব্বি, একজন আলেম। আমার দাঁড়ি পেকেছে। এরপরও তারা আমাকে এতটুকু সম্মানও করল না। এত জানোয়ার, এতটা পিচাশ ও নিকৃষ্ট হতে পারে এরা।’
সরকারের বিরুদ্ধে হুঁশিয়ারি দিয়ে হাতপাখার এ মেয়র পদপ্রার্থী এক ব্রিফিংয়ে বলেন, ‘রাস্তায় আমি রক্ত ঝরিয়েছি। এ আওয়ামী লীগের পতন না হওয়া পর্যন্ত আমরা রাস্তা ছাড়বো না। প্রয়োজনে আরও রক্ত দেব। আমরা সত্যকে প্রতিষ্ঠা করেই ঘরে যাব, ইনশা আল্লাহ।’
হাতপাখার এই প্রার্থী বলেন, ‘আমি মহান আল্লাহ পাকের দরবারে বলছি–আল্লাহ যেনো এদের ওপরে পরিপূর্ণ গজব ঢালেন। এ গজব যেনো আমি নিচের চোখে দেখে যেতে পারি। আমি নিশ্চিত—আওয়ামী লীগের ওপর গজব পড়বে, এটা খুব তাড়াতাড়িই পড়বে।’
এর আগে মুফতি ফয়জুল করিম পুলিশ কমিশনার মো. সাইফুল ইসলামের কাছে ঘটনার বিবরণ তুলে ধরে বলেন, ‘একটি কেন্দ্রে প্রবেশ করেই দেখতে পেলাম, বুথের মধ্যে একজন ভোট দিচ্ছেন আর বুথের পর্দার ওপর দিয়ে একজন তাকে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছেন। আমি এতে বাধা দিয়ে বলি, আপনি এখান থেকে চলে আসুন। এ ঘটনা আমি দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকেও বলি। সেখান থেকে আরেক জায়গায় গিয়ে আমি কেন্দ্রে ঢুকতে গেলে কয়েকজন আমাকে বাধা দেয়। আমি তাদের বলি—আপনারা কারা? আমি একজন প্রার্থী, আমাকে কেনো ঢুকতে দিচ্ছেন না? আপনারা কি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য?’
‘এসময় সেখানে পুলিশ থাকলেও তারা ছিল নির্বাক’ বলে অভিযোগ করেন হাতপাখার প্রার্থী। তিনি আরও বলেন, ‘ওই কেন্দ্রের উচ্শৃঙ্খল লোকজন আমার সঙ্গে কথা কাটাকাটি করে। তারা আমাকে বলে, আপনি এখানে কেন এসেছেন? আমি বললাম, আমি একজন প্রার্থী। আমি এখানে আসবে না তো কে আসবে? এরপরই তারা আমার ওপর হামলা করে। তারা আমাকে মারধর করে।’
ফয়জুল করিম বলেন, ‘আজ নির্বাচনটা শেষ হোক, আমরা রাজপথে নেমেছি। সরকারের পতন না ঘটিয়ে ঘরে ফিরব না।’
এদিকে, নৌকার আহত কর্মী বিদ্যুৎ জানান, তারা দলবল নিয়ে কেন্দ্রে ঢুকতে চায়। তখন তাদের বলি এতো মানুষ ঢোকা যাবে না। তারপর আমার ওপর হাতপাখার কর্মী-সমর্থকরা চাকু নিয়ে হামলা করে। এতে আমরা বহুজন আহত হয়েছি।’
রিটার্নিং কর্মকর্তা হুমায়ুন কবির জানান, হাতপাখার প্রার্থী দলবল নিয়ে ঢুকতে চেয়েছিল। এই নিয়ে নাকি ঝামেলা হয়েছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখছি। এটি কেন্দ্রের বাইরের বিচ্ছিন্ন ঘটনা।