করোনার পর চলচ্চিত্রশিল্প ঘুরে দাঁড়িয়েছে : ড. হাছান মাহমুদ
তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, করোনার মন্দা কেটে বঙ্গবন্ধুকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমাদের চলচ্চিত্রশিল্প ঘুরে দাঁড়িয়েছে। আমাদের লক্ষ্য বিশ্ব অঙ্গনে জায়গা করে নেওয়া এবং সেটি সম্ভব।
রাজধানীর তেজগাঁওয়ে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশন-বিএফডিসিতে আজ বুধবার (২১ জুন) দুপুরে প্রয়াত চিত্রনায়ক ও সংসদ সদস্য আকবর হোসেন পাঠান ফারুক স্মরণে সম্মিলিত চলচ্চিত্র পরিষদ আয়োজিত ‘হৃদয়ে জাগ্রত তুমি’ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তথ্যমন্ত্রী এ কথা বলেন। এ সময় প্রয়াত চিত্রনায়ক ফারুকের স্মৃতির প্রতি সম্মান জানিয়ে চলচ্চিত্র ও রাজনীতিতে তার কর্মময় জীবন স্মরণ করেন হাছান মাহমুদ।
সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, করোনায় আমাদের আড়াই বছর মন্দা গেছে। এখন মহামারি কেটে গেছে, সিনেমা শিল্প ঘুরে দাঁড়িয়েছে, প্রদর্শক সমিতি বলছেন, এখন অনেক সিনেমা হচ্ছে। সিনেপ্লেক্স-সিনেমা হল নির্মাণ ও পুনঃনির্মাণের জন্য স্বল্পতম সুদে এক হাজার কোটি টাকার ঋণ তহবিল হয়েছে। এক হাজার আসনের মিলনায়তন, চারটি শুটিং ফ্লোর, দুটি সিনেপ্লেক্স, দুটি সুইমিংপুলসহ বিএফডিসিতে নতুন কমপ্লেক্স নির্মাণ হচ্ছে।
সরকারের পক্ষ থেকে সিনেমার অনুদান বাড়ানো হয়েছে জানিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, এ বছর ২৩টি পূর্ণদৈর্ঘ্য ছবিতে অনুদান দেওয়া হয়েছে। আগে ১০টাতে দেওয়া হতো। তবে সিনেমা শিল্প কখনো অনুদাননির্ভর হতে পারে না, সে কথাও তিনি স্মরণ করিয়ে দেন।
দেশের চলচ্চিত্র অঙ্গনকে মেধাসমৃদ্ধ বর্ণনা করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, আমাদের পরিচালকরা, অভিনয়শিল্পীরা, কলাকুশলীরা যেভাবে কৃতিত্বের স্বাক্ষর রেখে নিয়মিতভাবে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক অঙ্গনে পুরস্কার পাচ্ছে, তা তাদের মেধার পরিচয়। এই মেধা কাজে লাগালে আমাদের সিনেমা শিল্প বিশ্ব অঙ্গনেও জায়গা করে নেবে। আসুন সবাই মিলে সেই লক্ষ্য নিয়ে কাজ করি।
সম্প্রচারমন্ত্রী চিত্রনায়ক ফারুকের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে বলেন, ফারুক ভাই অনেক কালজয়ী ছবিতে অভিনয় করেছেন। বিশেষ করে ‘গোপালী এখন ট্রেনে’, ‘সারেং বৌ’, ‘সুজন সখী’ সিনেমাগুলো তাকে বাঁচিয়ে রাখবে। সহজাত নেতৃত্বের এই মানুষটি মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন, সংসদ সদস্য ছিলেন এবং সবাইকে আপন করে নিতে পারতেন।
হাছান বলেন, ‘আমি কখনো ভাবিনি যে ফারুক ভাই এতো তাড়াতাড়ি চলে যাবেন, কারণ আপাতদৃষ্টিতে তাকে অসুস্থ মনে হতো না। প্রায় দুই বছর তিনি সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন ছিলেন। মাঝেমধ্যে আমি খবর নিতাম। শেষ পর্যন্ত তিনি আমাদের ছেড়ে চলে গেলেন। তিনি চলচ্চিত্রে আজীবন সম্মান পেয়েছেন এবং চলচ্চিত্র শিল্পের উন্নয়নের জন্য আজীবন সোচ্চার ছিলেন। আমরা তাঁকে ভুলবো না।
সম্মিলিত চলচ্চিত্র পরিষদের আহ্বায়ক খোরশেদ আলম খসরুর সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব শাহ আলম কিরণ, যুগ্ম আহ্বায়ক কাজী হায়াৎ, অভিনয়শিল্পী রোজিনা, রিয়াজ, অরুণা বিশ্বাস, নিপুণ, পরিচালক মুশফিকুর রহমান গুলজার, প্রযোজক-পরিবেশক মোহাম্মদ হোসেন, চিত্রগ্রাহক আব্দুল লতিফ বাচ্চু, সম্পাদক আবু মুসা দেবু, বিএফডিসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক নুজহাত ইয়াসমিন প্রমুখ তাদের বক্তব্যে চিত্রনায়ক ফারুকের স্মৃতিচারণ ও তার আত্মার শান্তি কামনা করেন। চলচ্চিত্র অঙ্গনের বিশিষ্টজনেরা অনুষ্ঠানে যোগ দেন।