পশুর হাটে ও কুরবানিকালীন স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার নির্দেশিকা
আসন্ন ঈদুল আজহা উপলক্ষে পশুর হাট ব্যবস্থাপনায় এবং কুরবানিকালীন স্বাস্থ্যবিধি সম্পর্কিত নির্দেশিকা জারি করেছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ। এসব নির্দেশনা পালনের জন্য সরকার সকলের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।
নির্দেশনাসমূহ হলো— হাট বসানোর জন্য পর্যাপ্ত খোলা জায়গা নির্বাচন করতে হবে। কোনো অবস্থায় বদ্ধ জায়গায় হাট বসানো যাবে না; হাট ইজারাদার কর্তৃক হাট বসানোর আগে মহামারি প্রতিরোধী সামগ্রী যেমন-মাস্ক, সাবান, জীবাণুমুক্তকরণ সামগ্রী ইত্যাদি সংগ্রহ করতে হবে। পরিষ্কার পানি সরবরাহ ও হাত ধোয়ার জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণে তরল বা সাধারণ সাবানের ব্যবস্থা রাখতে হবে। নিরাপদ বর্জ্য নিষ্কাশন ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে।
পশুর হাটের সাথে জড়িত সকল কর্মকর্তা, কর্মচারী ও হাট কমিটির সকলকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। হাট কমিটির সকলের ব্যক্তিগত সুরক্ষা জোরদার করা এবং মাস্ক ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে।
হাটের সাথে জড়িত সকল কর্মীকে স্বাস্থ্যবিধির নির্দেশনা দিতে হবে। জনস্বাস্থ্যের বিয়ষগুলো যেমন- মাস্ক এর সঠিক ব্যবহার, হাঁচি-কাশির শিষ্টাচার, শারীরিক দূরত্ব, হাত ধোয়া, জীবাণুমুক্তকরণ বিষয়গুলোকে গুরুত্ব দিতে হবে। স্বাস্থ্যবিধিসমূহ সার্বক্ষণিক মাইকে প্রচার করতে হবে। মাস্ক ছাড়া কোনো ক্রেতা-বিক্রেতা হাটের ভিতরে প্রবেশ করতে পারবেন না। হাট কর্তৃপক্ষ চাইলে বিনামূল্যে মাস্ক সরবরাহ করতে পারেন বা এর মূল্য নির্ধারণ করে দিতে পারেন।
প্রতিটি হাটে সিটি করপোরেশন কর্তৃক ডিজিটাল পর্দায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্দেশনা অনুযায়ী স্বাস্থ্যবিধি প্রচার করতে হবে; পশুর হাটে প্রবেশের জন্য গেট (প্রবেশপথ ও বাহিরপথ) নির্দিষ্ট করতে হবে; পর্যাপ্ত পানি ও ব্লিচিং পাউডার দিয়ে পশুর বর্জ্য দ্রুত পরিস্কার করতে হবে। কোথাও জলাবদ্ধতা তৈরি করা যাবে না।
প্রতিটি হাটে সিটি করপোরেশন/পৌরসভা/ইউনিয়ন পরিষদ কর্তৃক এক বা একাধিক ভ্রাম্যমাণ স্বেচ্ছাসেবী মেডিকেল টিম গঠন করে সেবা প্রদানের ব্যবস্থা করা যেতে পারে। মেডিকেল টিমের কাছে শরীরের তাপমাত্রা মাপার জন্য ডিজিটাল থার্মোমিটার রাখা যেতে পারে, যাতে প্রয়োজনে হাটে আসা সন্দেহজনক করোনা আক্রান্ত ব্যক্তিদের দ্রুত চিহ্নিত করা যায়। এছাড়া, তাৎক্ষণিকভাবে রোগীকে আলাদা করে রাখার জন্য প্রতিটি হাটে একটি আইসোলেশন ইউনিট (একটি আলাদা কক্ষ) রাখা যেতে পারে।
একটি পশুর থেকে আরেকটা পশু এমনভাবে রাখতে হবে যেন ক্রেতারা কমপক্ষে ৩ ফুট বা ২ হাত দূরত্ব বজায় রেখে পশু ক্রয় করতে পারেন। ভিড় এড়াতে মূল্য পরিশোধ ও হাসিল আদায় কাউন্টারের সংখ্যা বাড়াতে হবে। মূল্য পরিশোধের সময় সারিবদ্ধভাবে লাইনে দাঁড়ানোর সময় যেন কম হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। লাইনে ৩ ফুট বা কমপক্ষে ২ হাত দূরত্ব বজায় রেখে দাঁড়াতে হবে। প্রয়োজনে রেখা টেনে বা গোল চিহ্ন দিতে হবে।
সকল পশু একত্রে হাটে প্রবেশ না করিয়ে, হাটের ধারণ ক্ষমতা অনুযায়ী পশু প্রবেশ করাতে হবে; হাটের ধারণ ক্ষমতা অনুযায়ী, নিরাপদ দূরত্ব বজায় রেখে কেনাকাটা করা সম্ভব, এমন সংখ্যক ক্রেতাকে হাটে প্রবেশের সুযোগ দিতে হবে। অবশিষ্ট ক্রেতারা হাটের বাইরে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রেখে অপেক্ষা করবেন। একটি পশু ক্রয়ের জন্য ১ বা ২ জনের বেশি ক্রেতা হাটে প্রবেশ করবেন না; শিশু, বৃদ্ধ ও অসুস্থরা হাটে আসতে পারবেন না। অনলাইনে পশু কেনা-বেচার জন্য জনগণকে উৎসাহিত করা যেতে পারে; স্থানীয় প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এবং স্বাস্থ্য বিভাগের সাথে সমন্বয় করে সকল কাজ নিশ্চিত করতে হবে।
পশু কুরবানির সময় প্রয়োজনের অধিক লোকজন একত্রিত হবেন না এবং কুরবানির মাংস সংগ্রহের জন্য একত্রে অধিক লোক চলাফেরা করতে পারবে না। পশুর চামড়া দ্রুত অপসারণ করতে হবে এবং কোরবানির নির্দিষ্ট স্থানটি ব্লিচিং পাউডারের দ্রবণ দিয়ে ভালোভাবে জীবাণুমুক্ত করে নিতে হবে।