হজের আনুষ্ঠানিকতায় মিনায় হাজিরা
লাখ লাখ হাজি আজ সোমবার (২৬ জুন) হজের আনুষ্ঠানিকতায় পায়ে হেঁটে অথবা বাসে চড়ে পবিত্র নগরী মক্কার পাশে তাঁবুর শহর মিনায় পৌঁছেছেন। পবিত্র কাবা শরীফ প্রদক্ষিণ শেষে মক্কা থেকে সাত কিলোমিটার দূরে মিনার উদ্দেশে যাত্রা শুরু করেন হাজিরা। সৌদি কর্তৃপক্ষের সরবরাহ করা শত শত শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত বাসে করে ও পায়ে হেঁটে এহরাম (হজের পোশাক) পরে এবং স্যান্ডেল পায়ে প্রচণ্ড রোদে ছাতা মাথায় এই যাত্রায় অংশ নিয়েছেন হাজিরা।
এবারের পবিত্র হজে অংশ নেওয়া হাজিদের সংখ্যা অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে ফেলতে পারে বলে মনে করছেন সৌদি আরবের সরকারি কর্মকর্তারা।
মিনা শহরে স্থাপিত হাজার হাজার তাঁবুর নিচে আজকের রাতটি মহান আল্লাহর নৈকট্যলাভে প্রত্যাশা নিয়ে এবাদত বন্দেগির মধ্য দিয়ে কাটাবেন হাজিরা। প্রতি বছর হজের আনুষ্ঠানিকতার এই অবস্থানটি বিশ্বের সবচেয়ে বড় শিবির হিসেবে পরিচিত।
ইসলামের পাঁচটি স্তম্ভের একটি হজ। আর এবারের হজটি হতে পারে ইতিহাসের সবচেয়ে বড়। এর আগে, ২০১৯ সালে ২৫ লাখ হাজি অংশ নিয়েছিলেন হজে। তবে, ২০২০, ২০২১ ও ২০২২ সালে কোভিড অতিমারীর কারণে হাজিদের সংখ্যা নিয়ন্ত্রণ করা হয়।
এদিকে, হাজিদের নিরাপত্তায় নেওয়া হয়েছে কঠোর ব্যবস্থা। মিনায় হাজিদের যাত্রা পথে নিরাপত্তায় নিয়োজিত রয়েছে হেলিকপ্টার ও ড্রোন। এ ছাড়া মিনায় হাজিদের সেবা দিয়ে যাচ্ছে চারটি হাসপাতাল ও ২৬ ক্লিনিক। প্রস্তুত রাখা হয়েছে ১৯০টি অ্যাম্বুলেন্স।
তাবুনগরী মিনায় এখন উচ্চারিত হতে শোনা যাচ্ছে—লাব্বাইকা আল্লাহুম্মা লাব্বাইক, লাব্বাইকা লা শারিকা লাকা লাব্বাইক, ইন্নাল হাম্দা ওয়ান্নি’মাতা লাকা ওয়াল্মুল্ক্, লা শারিকা লাকা। (আমি হাজির, হে আল্লাহ আমি হাজির, তোমার কোনো শরিক নেই, সব প্রশংসা ও নিয়ামত শুধু তোমারই, সব সাম্রাজ্যও তোমার)।
আগামীকাল মঙ্গলবার (২৭ জুন) সূর্যোদয় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আরাফাত ময়দানের উদ্দেশে রওনা হবেন হাজিরা। আরাফাত ময়দানে জোহর ও আসর নামাজ একসঙ্গে আদায় করবেন তাঁরা। তারপর সূর্যাস্তের সঙ্গে সঙ্গে হাজিরা মুজদালিফার উদ্দেশে রওনা দেবেন এবং রাতে সেখানেই অবস্থান করবেন। পথে শয়তানকে নিক্ষেপ করার জন্য পাথর সংগ্রহ করবেন।
হজের সময় বাদে মিনার পুরো এলাকা খালি পড়ে থাকে। চারপাশের প্রবেশদ্বারও তখন বন্ধ করে দেওয়া হয়। বন্ধ করে দেওয়া হয় বৈদ্যুতিক সংযোগ, পানির লাইন, টেলিফোন সংযোগ। হজের দুদিন আগে মিনা এলাকার ফটক খোলা হয়। আর হজের দুদিন পর আবার সব বন্ধ করে দেওয়া হয়।