ফাঁকা রাজধানী নিরাপদ রাখতে অভিযান চলছে : ডিএমপি কমিশনার
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক বলেছেন, ঈদের ছুটিতে ফাঁকা রাজধানীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বিশেষ অভিযান চলমান রয়েছে। তিনি বলেন, ‘ঈদকে ঘিরে ছিঁচকে চোর, মলম পার্টি ও অজ্ঞান পার্টিসহ এ ধরনের পেশাদার অপরাধীদের বিরুদ্ধে ইতোমধ্যে এ বিশেষ অভিযান শুরু হয়েছে। ৬০০ পেশাদার অপরাধীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।’
গতকাল মঙ্গলবার (২৭ জুন) দুপুরে মহাখালী আন্তঃজেলা বাস টার্মিনাল পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন খন্দকার গোলাম ফারুক।
ঈদের সময় ফাঁকা ঢাকায় পর্যাপ্ত পুলিশ নিয়োজিত থাকার কথা উল্লেখ করে ডিএমপি কমিশনার বলেন, ‘ঈদের সময় ফাঁকা রাজধানী নিরাপদ রাখতে এসব পেশাদার অপরাধীরা যেন জামিন না পায় সে ব্যাপারে চেষ্টা করা হবে।’
খন্দকার গোলাম ফারুক বলেন, ‘ঈদকে সামনে রেখে গত এক মাস ধরে সিধেঁল চোর ও অজ্ঞান পার্টি বিরুদ্ধে অভিযান অব্যহত রয়েছে। এ ধরনের ঘটনায় জড়িত ৬০০ জনকে গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনা হয়েছে। পাশাপাশি জাল টাকা উদ্ধারের অভিযান চলমান রয়েছে। ইতোমধ্যে বিপুল পরিমাণ জাল টাকা উদ্ধার ও একটি চক্রের প্রধানসহ কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।’
ডিএমপি কমিশনার বলেন, ‘ঘরমুখো মানুষের ঈদযাত্রা নিরাপদ রাখতে এবং তাদের স্বাচ্ছন্দ্যে বাড়ি ফেরা নিশ্চিতে পুলিশ দিন-রাত কাজ করে যাচ্ছে। এবারও রাজধানীতে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা রয়েছে।’
তবে দুর্ঘটনা এড়াতে তরুণদের ফাঁকা ঢাকায় মোটরসাইকেল বা প্রাইভেটকার নিয়ে প্রতিযোগিতা না করার আহ্বান জানান এই পুলিশ কমিশনার।
যাত্রীদের ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়ে ডিএমপি কমিশনার বলেন, ‘এখন পর্যন্ত বিভিন্ন টার্মিনাল ও হাটবাজার ঘুরে যে পরিবেশ দেখা গেছে, তা সন্তোষজনক। তবে দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার থাকায় কোথাও একটু সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে। মহাখালী টার্মিনাল ঢাকা শহরের অন্যতম গুরত্বপূর্ণ বাস টার্মিনাল। এটা ঢাকা শহরের মাঝখানে অবস্থিত এবং জায়গাটাও অনেক সংকীর্ণ। এখানকার সার্বিক পরিস্থিতি কেমন, যাত্রীদের কাছ থেকে বাড়তি ভাড়া আদায় করছে কি না কিংবা কেউ বিড়ম্বনার শিকার হচ্ছে কি না তা দেখার জন্য আমরা বাস টার্মিনাল পরিদর্শনে এসেছি।’
যাত্রীদের উদ্দেশে খন্দকার গোলাম ফারুক বলেন, ‘কেউ বাড়তি ভাড়া দিয়ে টিকেট কাটবেন না। কারো কোনো অভিযোগ থাকলে তাৎক্ষণিক পুলিশ অথবা জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ নম্বরে যোগাযোগ করবেন। যেকোনো অনিয়মের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। গত ঈদুল ফিতরে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা ছিল। তাই ফাঁকা ঢাকায় তেমন বড় ধরনের ঘটনা ঘটেনি। এবারও আমাদের পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা রয়েছে। ইউনিফর্ম পুলিশের পাশাপাশি ডিবি পুলিশও সাদা পোশাকে নিয়োজিত রয়েছে।’
পরিবহণ মালিক ও শ্রমিক নেতাদের উদ্দেশে ডিএমপি কমিশনার বলেন, ‘ঈদের সময় ড্রাইভাররা নিজ বাড়িতে থাকেন। তখন হেলপাররা গাড়ি নিয়ে যাতে রাস্তায় বের না হয়, এ ব্যাপারে আপনারা সর্তক থাকবেন।’
ডিএমপি কমিশনার বলেন, ‘পশুর হাটের আশপাশে যানজট নিরসনে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ২১টি গরুর হাটের নিরাপত্তার জন্য সিসি ক্যামেরা, ওয়াচ টাওয়ার, জাল টাকার শনাক্তের মেশিন রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এছাড়াও হাসিল নিয়ে যাতে কোনো সমস্যা না হয় সেজন্য পুলিশ সদস্যরা সতর্ক রয়েছে। পাশাপাশি গরু ব্যবসায়ীদের সুবধার্থে ব্যাংকের অস্থায়ী বুথেরও ব্যবস্থা করা হয়েছে।’
বাস টার্মিনাল পরিদর্শনকালে ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (অ্যাডমিন) এ কে এম হাফিজ আক্তার, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস) ড. খ. মহিদ উদ্দিন, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (লজিস্টিকস, ফিন্যান্স এন্ড প্রকিউরমেন্ট) মুহা. আশরাফুজ্জামান, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) মো. মুনিবুর রহমান, যুগ্ম ও উপপুলিশ কমিশনার, ডিএমপির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন।