নুরুল হক নুরের নামে রাষ্ট্রদ্রোহিতার মামলার আবেদন
গণঅধিকার পরিষদের সদস্য সচিব নুরুল হক নুরের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহিতার মামলার আবেদন করা হয়েছে। বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের সাধারণ সম্পাদক আল মামুন এ আবেদন করেছেন। আজ শুক্রবার (৭ জুলাই) বিকেল পাঁচটার দিকে শাহবাগ থানায় এই আবেদন করা হয়েছে। রাতে বিষয়টি এনটিভি অনলাইনকে জানিয়েছেন আল মামুন ও শাহবাগ থানার দায়িত্বরত কর্মকর্তা উপপরিদর্শক (এসআই) আশরাফুল শিকদার।
আল মামুন বলেন, ‘মামলার আবেদন করেছি। বিকেল ৫টার দিকে ডিউটি অফিসার ছিল আব্দুল্লাহ। তিনি আমাকে বলেছেন, তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
আশরাফুল শিকদার বলেন, ‘মামলার আবেদনের বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা জানেন। বিষয়টি তদন্ত করে পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।’
মামলার আবেদনে বলা হয়েছে, দেশের একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে আমি গণমাধ্যম ও সামাজিক মাধ্যমে চলতি বছরের তিন জানুয়ারি দেখতে পাই, বাংলাদেশ গণঅধিকার পরিষদ নামের তথাকথিত রাজনৈতিক দলের সদস্য সচিব নুরুল হক নুর হজ করার কথা বলে বিদেশে যান। সেখানে গিয়ে সংযুক্ত অরব আমিরাতের দুবাইয়ে অস্বীকৃত ইসরাইল রাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের এজেন্ট মেন্দি এন সাফাদির সঙ্গে বৈঠক করে বাংলাদেশের নির্বাচিত সরকার উৎখাতের দেশবিরোধী রাষ্ট্রবিরোধী ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে।
আবেদনে বলা হয়, মোসাদ এজেন্ট মেন্দি এন সাফদির সঙ্গে নুরুল হক নুরের ছবি ও তার স্বীকারোক্তিমূলক কথোপকখন ইতিমধ্যেই ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিকমাধ্যমে এখন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু। আল্লার পবিত্র কাবাঘর তাওয়াফের নাম করে বিদেশে গিয়ে ইয়াহুদিচক্রের সঙ্গে হাত মিলিয়ে নুরুল হক নুর প্রকৃতপক্ষে রাষ্ট্র, সরকার ও পবিত্র ধর্ম ইসলামের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টির হীন চক্রান্তে লিপ্ত হয়েছে। ইসলামের খোলসে মাখা নেড়িয়ে টুপি পরে জুয়িশ-জায়নবাদী প্রজেক্ট বাস্তবায়নের জন্য বাংলাদেশের শান্তিপ্রিয় মুসলমানদের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টির পায়তারা করছে এবং সরকারের বিভিন্ন ব্যক্তিকে ফেসবুক লাইভে হুমকি-ধমকি দিচ্ছে।
আবেদনে আল মামুন আরও বলেছেন, সম্প্রতি গণঅধিকার পরিষদের আহ্বায়ক রেজা কিবরিয়ার বক্তব্যে ইসরায়েলের মোসাদের সঙ্গে নুরুল হক নুরের যোগাযোগ ও আর্থিক লেনদেনের বিষয়টি প্রমাণিত হয়েছে। সম্প্রতি ডিবিসি ও সময় টিভিতে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, পার্বত্য চট্টগ্রামের বিদ্রোহী জঙ্গি গোষ্ঠী কুকিচীনের সঙ্গে নুরুল হক নুরের যোগাযোগ রয়েছে যা দেশের প্রচলিত আইন পরিপন্থী এবং রাষ্ট্রদ্রোহিতার শামিল। বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব বিরোধী জঙ্গি গোষ্ঠীর সাথে নুরুল হক নুরের যোগাযোগ প্রমাণ করে নুর বিদেশী শক্তির নির্দেশে জনগণের আবেগকে ব্যবহার করে রাজনীতির নামে প্রকৃতপক্ষে দেশের শান্তি-শৃঙ্খলা ও সম্প্রীতি বিনষ্ট করতে চায়।
আবেদনে বলা হয়েছে, দেশের অভ্যন্তরে কুকিচীনসহ কতিপয় জঙ্গি গোষ্ঠীকে ব্যবহারের মাধ্যমে নুরুল হক নুর রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন। বাংলাদেশ রাষ্ট্র নির্যাতিত-নিপীড়িত ফিলিস্তিনদের অধিকারের পক্ষে সবসময় থাকলেও ইসরাইল ও মোসাদের সহযোগিতায় নুরুল হক নুর ও তার রাজনৈতিক দল গণঅধিকার পরিষদ সাধারণ নেতাকর্মীদের উসকে দিয়ে রাষ্ট্রের মধ্যে ঘৃণা, বিদ্বেষ-বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে আইনবলে প্রতিষ্ঠিত বৈধ সরকার উৎখাতের ষড়যন্ত্রে লিপ্ত বিধায় এই আসামী নুরুল হক নূর রাষ্ট্রদ্রোহিতামূলক অপরাধ সংঘটিত করেছে। বিধায় দণ্ডবিধির ১২৪(ক), ১২০ (থ) ও ৫০৬ ধারায় মামলা রুজু করা আবশ্যক।