কারাগারে হাজতির মৃত্যু, নির্যাতনের অভিযোগ পরিবারের
নওগাঁ জেলা কারাগারে মো. নুর ইসলাম নামে এক হাজতির মৃত্যু হয়েছে। তিনি সদর উপজেলার মাঝিপাড়া গ্রামের মো. জান বক্সের ছেলে। তাঁর পরিবারের অভিযোগ মারধর করে তাঁকে মারা হয়েছে।
জানা গেছে, গত (১৫ জুলাই) শনিবার তাকে ১০ লিটার চোলাইমদসহ আটক করে আদালতে পাঠায় সদর থানা পুলিশ। পরবর্তী সময়ে জেল হাজতে থাকা অবস্থায় অসুস্থ হয়ে পড়লে নওগাঁ সদর হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করা হয়। গতকাল মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান । তবে তাঁর পরিবার অভিযোগ করে জেল হাজতে শারীরিক নির্যাতন করার কারণে তাঁর মৃত্যু হয়েছে।
মৃত নূর ইসলামের স্ত্রী রূপালী বেগম বলেন, ‘আমার স্বামীকে কারাগারে দেখতে গিয়ে তার পিসিতে ৫০০ টাকা দিয়ে এসেছি। সে দিন আমাকে দেখা করতে দেয়নি জেল কর্তৃপক্ষ। কত জনের নাম ডাকে আমার স্বামীর নাম ডাকে না। আমাকে দেখা না করিয়ে বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়। পরের দিন সকাল ৬টার সময় কারাগার থেকে আমার ফোনে কল দিয়ে বলে আপনি নূর ইসলামের স্ত্রী বাসায় কি কোনো ছেলে মানুষ আছে। তখন আমার শশুরকে ফোন দিলে তারা জানান আমার স্বামী মারা গেছেন। হাসপাতাল থেকে যেন আসি। হাসপাতাল থেকে নিয়ে এসে আমার স্বামীর শরীরে দেখতে পাই বিভিন্ন স্থানে কালো দাগ ও ক্ষত চিহ্ন। যা দেখে আমরা বুঝতে পারি আমার স্বামীকে জেলে পিটিয়ে মেরে ফেলা হয়েছে।’
মরদেহ গোসল করানো ব্যক্তি আরিফুল ইসলাম রাসেল বলেন, ‘আমরা যারা মরদেহ গোসল করায়েছি গোসল করানোর সময় বিভিন্ন স্থানে কালো চিহ্ন ও কাটা দাগ দেখতে পাই। তবে কিছু কাটা পোস্টমর্টেমের জন্য, আরগুলো শক্ত কিছু দিয়ে আঘাতের চিহ্ন। বিশেষ করে হাতে, কোমরে, ঘাড়ে, কপালে দাগগুলো অন্যতম। এগুলো দেখে মনে হচ্ছে মারের দাগ।’
নওগাঁ জেলা কারাগারের জেল সুপার ফারুক আহমেদের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, অতিরিক্ত মাদকের নেশার কারণে মো. নুর ইসলাম অসুস্থ হয়ে পড়লে আমরা তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করি। পরে চিকিৎসাধিন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়। তাঁকে কোনো নির্যাতন করা হয়নি। নেশার জন্য ছোটাছুটি করে দৌড় দিয়ে গিয়ে গ্রিলের দরজায় ধাক্কা লেগে মাথায় সামান্য আঘাত পেয়ে দাগ হয়েছে।’