সজীবের রক্ত বৃথা যাবে না : বরকত উল্লাহ বুলু
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু বলেছেন, ‘সরকারের পদত্যাগের দাবিতে এক দফার আন্দোলন চলছে। সেই আন্দোলনে নিহত সজীবের রক্ত কোনো অবস্থায় বৃথা যাবে না। গুম-খুন, মামলা-হামলা করে আন্দোলন ঠেকানো যাবে না। আমরা আন্দোলনে জয়ী হব।’
বুলু বলেন, ‘দেশের সব রাজনৈতিক দল আজ ঐক্যবদ্ধ। চলমান আন্দোলনে সরকারকে পদত্যাগে বাধ্য করে নির্দলীয়-নিরপেক্ষ সরকার ও নতুন নির্বাচন কমিশনের অধীনে নির্বাচনের মাধ্যমে দেশে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা করা হবে।’ এই সরকারকে ক্ষমতায় রেখে দেশে কোনো নির্বাচন হবে না বলে হুঁশিয়ারিও দেন তিনি।
আজ বৃহস্পতিবার (২০ জুলাই) বিকেলে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে শোকর্যালির আগে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে এসব কথা বলেন বুলু। লক্ষ্মীপুরে পদযাত্রায় কৃষক দল নেতা সজীব হোসেনকে হত্যার প্রতিবাদে এই শোক র্যালির আয়োজন করে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ বিএনপি।
বুলু বলেন, ‘আমাদের নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া আজ কারাবন্দি। কিন্তু এই সরকারের কাছে কোনো দাবি করব না। আন্দোলন ও সংগ্রামের মধ্যে দিয়ে আমরা আমাদের দাবি আদায় করব, খালেদা জিয়াকে মুক্ত করব।’
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘সজীব হোসেনকে অত্যন্ত ঠান্ডা মাথায় পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। এটা ওদের (আওয়ামী লীগ) পরিকল্পিত। কারণ, সরকার দেশকে বিরোধীদলশূন্য করতে চায়।’ তিনি আরও বলেন, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন—সংবিধানের বাইরে নির্বাচন হবে না। কিন্তু বর্তমান সংবিধান তো আপনাদের তৈরি। এই সংবিধানের অধীনে জনগণের রায়ের প্রতিফলন হবে না। কারণ, জনগণ ভোট দিতে পারবে না। সেজন্য নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার দরকার। অথচ যে পথ দিয়ে রাতে-ভোরে, জনগণ ও ভোটার ছাড়া নির্বাচন হয়, সেই নির্বাচন তারা করতে চান। এই নির্বাচন ওবায়দুল কাদের এবং তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদের পছন্দ।’
সভাপতির বক্তব্যে ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমানউল্লাহ আমান বলেন, ‘বিএনপিসহ বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের অত্যাচার-নির্যাতন, হামলা-মামলা, গুম-খুন করে এই সরকার তাদের ক্ষমতা চিরস্থায়ী করতে চায়। কিন্তু কোনো ষড়যন্ত্র, হত্যা কাজে আসবে না। দেশের মানুষ জেগে উঠেছে। এক দফা আদায় করেই তারা ঘরে ফিরবে। জনগণের প্রতিরোধের মুখে এই সরকার পদত্যাগ করতে বাধ্য হবে। সজীব হত্যাসহ প্রতিটি হত্যার বিচার বাংলার মাটিতেই হবে।’ তিনি বলেন, ‘নির্দলীয়-নিরপেক্ষ সরকার ব্যতীত দেশে কোনো নির্বাচন হবে না। দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন জনগণ প্রতিহত করবে।’
আমান উল্লাহ আমানের সভাপতিত্বে এবং মহানগর উত্তর বিএনপির সদস্য সচিব আমিনুল হকের সঞ্চালনায় সংক্ষিপ্ত সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আহমেদ আজম খান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুস সালাম, জয়নুল আবদিন ফারুক, চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ, সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, কেন্দ্রীয় নেতা মীর সরফত আলী সপু, তাইফুল ইসলাম টিপু, ইশরাক হোসেন, যুবদলের সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক রাজীব আহসান, কৃষক দলের সভাপতি হাসান জাফির তুহিন ও সাধারণ সম্পাদক শহীদুল ইসলাম বাবুল, ছাত্রদলের সভাপতি কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবণ, সাধারণ সম্পাদক সাইফ মাহমুদ জুয়েল প্রমুখ।
পরে বিকেল ৪টার দিকে নয়াপল্টনস্থ বিএনপি কার্যালয়ের সামনে থেকে শোকর্যালি শুরু হয়।