ড. মিয়া মোহাম্মদ মহিউদ্দিন ও জাহাঙ্গীর আলমের ফাঁসি কার্যকর
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ব ও খনিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক এস তাহের আহমেদ হত্যা মামলার দুই আসামী একই বিভাগের সহযোগি অধ্যাপক মিয়া মোহাম্মদ মহিউদ্দিন ও বাসার কেয়ারটেকার জাহাঙ্গীর আলমের ফাঁসির রায় কার্যকর হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাত ১০টা এক মিনিটে রায় কার্যকর করা হয়। তথ্য নিশ্চিত করেছে কারা কর্তৃপক্ষ।
রায় কার্যকরের আগে কারা মসজিদের ইমাম হাফেজ মাওলানা মুজাহিদুল ইসলাম আসামীদের গোসল ও তওবা পড়ান।
এর আগে রায় কার্যকরের সময় আইনশৃঙ্খলার পরিস্থিতির যাতে অবনতি না ঘটে এর জন্য কারাগারের ভেতরে ও আশেপাশে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়।
রাত ৮টার পর থেকেই কেন্দ্রীয় কারাগার আশপাশে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়। রাত ৯টার পর একে একে কারাগারে প্রবেশ করেন জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদ, জেলার পুলিশ সুপার, মহানগর পুলিশের বিশেষ শাখার ডেপুটি কমিশনার, সিভিল সার্জন আবু সাইদ মোহাম্মদ ফারুক, ডিআইজি প্রিজন কামাল হোসেন, সিনিয়র জেল সুপার আব্দুল জলিল ও জেলার নিজাম উদ্দিন।
এই প্রতিবেদন লেখার সময় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত জাহাঙ্গীর আলমের দুই ভাই মরদেহ গ্রহণের জন্য কারাগারে প্রবেশ করেন।
পুলিশ জানায়, রাতের মধ্যেই পুলিশের দুটি টিম নিরাপত্তা দিয়ে অ্যাম্বুলেন্সে করে দুজনের মরদেহ গ্রামের বাড়িতে পৌঁছে দেবে।
২০০৬ সালের ১ ফেব্রুয়ারি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের বাসা থেকে নিখোঁজ হন ভূ-তত্ত্ব ও খনিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক এস তাহের আহমেদ। ৩ ফেব্রুয়ারি বাসার পেছনের ম্যানহোল থেকে তার মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। অধ্যাপক তাহেরের ছেলে সানজিদ আলভী আহমেদ ওই দিন নগরীর মতিহার থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। তদন্ত শেষে ২০০৭ সালের ১৭ মার্চ ছয়জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দেয় পুলিশ।
এরপর ২০০৮ সালের ২২ মে রাজশাহীর দ্রুত বিচার আদালত চারজনকে ফাঁসির আদেশ ও দুজনকে খালাস দেন। পরে দণ্ডাদেশপ্রাপ্তরা উচ্চ আদালতে আপিল করেন। আপিল বিভাগ মিয়া মহিউদ্দিন ও জাহাঙ্গীর আলমের রায় বহাল রাখলেও আসামি নাজমুল আলম ও তাঁর স্ত্রীর ভাই আব্দুস সালামের সাজা কমিয়ে যাবজ্জীবন দেন। তবে, আপিলে সাজা কমে যাবজ্জীবন হওয়া দুই আসামির দণ্ড বৃদ্ধি চেয়ে আপিল করে রাষ্ট্রপক্ষ। শুনানি শেষে ২০২২ সালের ৫ এপ্রিল আপিল বিভাগ হাইকোর্ট বিভাগের রায়ই বহাল রাখেন।