ঝড়ে মেঘনায় ছয় ট্রলারডুবি, ভোলা-লক্ষ্মীপুর রুটে ফেরি চলাচল বন্ধ
ঝড়ের কবলে পড়ে ভোলার চরফ্যাশনের ঢালচর এবং চর নিজাম সংলগ্ন মেঘনা নদীতে ৩৪ জেলেসহ ছয়টি মাছ ধরার ট্রলারডুবির ঘটনা ঘটেছে। অতিজোয়ারে প্লাবিত হওয়ায় ভোলা-লক্ষ্মীপুর রুটের ফেরি চলাচল বন্ধ রয়েছে। আজ মঙ্গলবার (১ আগস্ট) সকালে এই ট্রলারডুবির ঘটনা ঘটে।
এসব ট্রলারে থাকা মাঝিমাল্লাদের পাশে থাকা অপর ট্রলারের জেলেরা উদ্ধার করেছে। ডুবে যাওয়া ট্রলারগুলো উদ্ধার করতে পারেনি বলে ট্রলারমালিক ঢালচরের মোস্তফা মেম্বার এবং ঢালচর পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ উপপরিদর্শক (এসআই) আশফাকুর রহমান নিশ্চিত করেছেন।
আজ সকালে হঠাৎ করেই ঝড়ো বাতাস আর ভারি বৃষ্টিপাত শুরু হয়। মুহূর্তের মধ্যেই ফুসে উঠে ভয়ংকর রূপ ধারণ করে মেঘনা। ঝড়ের কবলে পড়ে চর নিজামের মো. মামুন মাঝির (বাড়ি পটুয়াখালীর দশমিনা) ট্রলারটি ছয়জন মাঝিমাল্লাসহ ডুবে যায়। পরে পাশে থাকা অপর ট্রলারের জেলেরা দ্রুত এসে তাঁদের উদ্ধার করে। এ ছাড়া ভোলা জেলার চরফ্যাশন উপজেলার ঢালচরের মোস্তফা মেম্বার জানান, তার একটি এবং মো. সালামের তিনিটি এবং বাবুল বেপারীর একটি চারটিসহ মোট পাঁচটি মাছ ধরার ট্রলার ডুবে যায়। দ্রুত চর কুকরী-মুকরী, চর নিজামসহ আশপাশের জেলেরা দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে ডুবে যাওয়া ট্রলারের জেলেদের উদ্ধার করে।
ঢালচরের মোস্তফা মেম্বার জানান, ডুবে যাওয়া ট্রলারের জেলেদের উদ্ধার করা সম্ভব হলেও ট্রলার উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। ট্রলারগুলো উদ্ধারের জন্য চেষ্টা চলছে। এ ছাড়া ঢালচরের বেশ কয়েকটি ঘর, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ভেঙে গেছে বলেও জানান এই মেম্বার।
চরফ্যাশনের ঢালচরের পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই মো. আশফাকুর রহমান বলেন, ‘এখনও ডুবে যাওয়া ট্রলারগুলোর সন্ধান পাওয়া যায়নি। এ ছাড়া ইসলামিয়া দাখিলা মাদ্রাসাসহ বেশ কয়েকটি ঘরবাড়ি ভেঙে পড়েছে।
ঝড়ো বাতাস আর উজানি পানির চাপে প্রচণ্ড উত্তাল মেঘনা নদী। একই সঙ্গে অতিজোয়ারের পানিতে প্লাবিত হয়েছে ভোলা-লক্ষ্মীপুর রুটের ইলিশা অংশের ফেরির গ্যাংওয়ে ও অ্যাপ্রোচ সড়ক।
এ সময় নদীতে থাকা জেলে নৌকাগুলো দ্রুত নিরাপদে চলে আসে। মেঘনার জেলে মো. জাফর ও কালাম বলেন, ‘হঠাৎ করেই নদীর পানি ফুসে উঠে। উত্তাল হয়ে উঠে তাই ঝুঁকি না নিয়ে কিনারে চলে এসেছি।’
ট্রলারের যাত্রী হোসনে আরাকে প্রশ্ন করলে বলেন, ‘উলানিয়া যাব। তাই ট্রলারে যাচ্ছি। ট্রলারচালক বলছেন সমস্যা হবে না।’ ঢাকা থেকে আসা যাত্রী কামরুল হাসান বলেন, ‘নদী উত্তাল থাকায় আমরা প্রচণ্ড ভয় পেয়েছি। আল্লাহ সুস্থ-সুন্দর ভাবে নিয়ে এসেছেন, এজন্য শুকরিয়া। বড় সমস্যা হচ্ছে ঘাটের লোকজনের হয়রানি। ব্যাগ দেখলেই তারা হয়রানি করছে।’
ফেরির অ্যাপ্রোচ সড়ক ও গ্যাংওয়ে ডুবে যাওয়ায় কিছুটা সমস্যা হলেও পাশে আরেকটি উঁচু ফ্লোরের ঘাট থাকায় সমস্যা তেমন হচ্ছে না। তবে ফেরি চালাতে বেগ পেতে হচ্ছে বলে জানান, ফেরিঘাটের ঘাট ম্যানেজার মো, পারভেজ খান। তিনি বলেন, ‘ঢাকাগামী একটি লঞ্চ পন্টুককে ধাক্কা দিয়েছে, তাতে ঘাটের দুজন আহত হয়েছেন। খবর দেওয়ার পর বরিশাল থেকে ইঞ্জিনিয়াররা এসে কাজ করছে। ভোলা-লক্ষ্মীপুর রুটের ফেরি চলাচল রয়েছে বন্ধ। শেষ খবর রাত ৮টা পর্যন্ত ফেরিঘাট মেরামত কাজ চলছিল।