ইউএনওর সমন্বয় সভা বর্জন কতিপয় ইউপি চেয়ারম্যানের
নেত্রকোনার পূর্বধলা উপজেলায় ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যানদের সঙ্গে রাস্তার আইডি সংক্রান্ত একটি বিশেষ সমন্বয় সভায় সুপারিশ করা অন্যায় আবদার না রাখায় নাখোশ হয়ে সভাস্থল ত্যাগ করেছেন কয়েকজন ইউপি চেয়ারম্যান। গত সোমবার (১৪ আগস্ট) বিকেলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কার্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে।
জানা যায়, ২০২১-২২ অর্থবছরে উপজেলার জারিয়া ইউনিয়ন পরিষদের একটি অডিট নিষ্পত্তির আবদার, খলিশাউড় ইউপি চেয়ারম্যানের পছন্দের গ্রাম পুলিশকে অবৈধভাবে পদোন্নতি দেওয়া ও মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে পূর্বধলা সদর ইউপি চেয়ারম্যানের আপন ভাগিনার জব্দ করা ড্রেজার মেশিনটি ফেরত দেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানরা সুপারিশ করেন।
এসব সুপারিশ না রাখায় ইউএনও এবং দু-একজন ইউপি চেয়ারম্যানের মধ্যে সামান্য বাকবিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে সভায় উপস্থিতির খাতায় স্বাক্ষর দিতে বললে তাঁরা স্বাক্ষর না দিয়ে সভাস্থল ত্যাগ করেন।
এ বিষয়ে খলিশাউড় ইউপি চেয়ারম্যান কমল কৃষ্ণ সরকারের কাছে মুঠো ফোনে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এসব বিষয়ে মোবাইল ফোনে আলাপ করা যাবে না। পূর্বধলায় এসে সাক্ষাতে কথা বলবেন বলে ফোন কেটে দেন।
জারিয়া ইউপি চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম মণ্ডল নান্টু বলেন, ‘ইউএনও স্যারকে ফোন করলে ফোন রিসিভ করেন না। আমার একটি বিলের আপত্তি পড়ে আছে, সেটা সমাধানও করেন না। সব কিছু মিলে ইউএনও সাহেবের সঙ্গে একটু কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে আমি বেরিয়ে আসতেই সবাই আমার সঙ্গে বেরিয়ে আসে। এতে কার্যক্রমের কোনো সমস্যা হবে না।’
পূর্বধলা সদর ইউপি চেয়ারম্যান সিদ্দিকুর রহমান বুলবুল বলেন, ‘নান্টুর সঙ্গে কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে তাঁকে বের হয়ে যেতে বলেন ইউএনও সাহেব। পরে নান্টু বের হয়ে গেলে আমরাও বের হয়ে আসি। আমাদের সঙ্গে উল্লেখযোগ্য এমন কোনো কিছু হয়নি। উনি একটি রেজুলেশন করতে চেয়েছিলেন তাতে নান্টু সই দেয়নি। বিভিন্ন সময় নান্টু ফোন করলেও ইউএনও সাহেব ফোন রিসিভ করেন না। এটা নান্টুর অভিযোগ ছিল। এসব বিষয়ে আমরা ভুল বোঝাবুঝি করে চলে এসেছি। জরুরি এই সভাটি স্থানীয় সরকার বিভাগের আন্ডারে থাকলেও উপজেলা প্রকৌশলী জরুরি ফিল্ড ভিজিটে থাকায় উপস্থিত থাকতে পারেননি।’
ইউএনও শেখ জাহিদ হাসান প্রিন্সের সঙ্গে কথা বললে তিনি বলেন, ‘রাস্তার আইডি সংক্রান্ত বিশেষ সমন্বয় সভায় চেয়ারম্যানরা উপস্থিত হন। এ সময় দু-একজন চেয়ারম্যানের অন্যায় আবদার না রাখায় তাঁরা অশোভন আচরণ করেন এবং ক্ষিপ্ত হন। এ সময় সব ইউপি চেয়ারম্যান সভাস্থল ত্যাগ করেননি। যাদের বিভিন্ন সময়ে অন্যায় আবদার রাখা হয়নি, তাঁরাই ইচ্ছেকৃতভাবে সভা থেকে চলে যান।’