নারী কর কর্মকর্তাকে অপহরণ : প্রধান আসামিসহ গ্রেপ্তার ৩
রাজধানীর সিদ্ধেশ্বরী এলাকা থেকে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) যুগ্ম কমিশনার মাসুমা খাতুনকে অপহরণের পেছনে তার সাবেক স্বামীর হাত রয়েছে। আর অপহরণের পরিকল্পনা বাস্তবায়নে কাজ করেন ওই কমিশনারের সাবেক গাড়িচালক মাসুদ। আজ (শনিবার) দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজার র্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইং পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।
অপহরণের শিকার এই যুগ্ম কমিশনারের সাবেক স্বামী অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তা হারুন-অর রশিদ। হারুনের রাগ-ক্ষোভ ছিল তার স্ত্রীর ওপর। র্যাব বলছে, সেই ক্ষোভ থেকেই তাকে অপহরণের পরিকল্পনা করেন হারুন। পরিকল্পনায় ব্যবহার করা হয় নারী কর্মকর্তার সাবেক গাড়িচালক মাসুদকে। মাসুদের নেতৃত্বে অপহরণ মিশনে অংশ নেয় মোট সাতজন।
সংবাদ সম্মেলনে র্যাব জানায়, পরিকল্পনা অনুযায়ী হারুন ৫০ হাজার টাকায় হাতিরঝিল এলাকায় একটি বাসা নেন। তবে, অহপরণের পর ওই নারী কর্মকর্তাকে ওই বাসায় নেওয়া সম্ভব হয় না। এর বদলে তাকে নেওয়া হয় নারায়ণগঞ্জের কাঁচপুর এলাকার একটি গ্যারেজে। সেখানে গাড়িতেই ব্যাপক মারধর করা হয়। পরদিন নেওয়া হয় মাদারটেক এলাকায়। সেখানে তার চিৎকারে এলাকাবাসীর হাতে আটক হন তিনজন। পালিয়ে যান মাসুদসহ চারজন।
ওই নারী যুগ্ম কর কমিশনারকে অপহরণ ও নির্মম নির্যাতনের ঘটনায় রমনা থানায় মামলাও দায়ের হয়েছে। এতে প্রধান আসামি করা হয় মাসুম ওরফে মাসুদকে। মাসুদ ছাড়াও শুক্রবার আরও যাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে তারা হলেন—আব্দুল জলিল ওরফে পনু (৪৮) ও মো. হাফিজ ওরফে শাহনি (৪৮)।
গ্রেপ্তার তিনজনকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে কমান্ডার মঈন বলেন, ‘মাসুদ আগে ওই নারী কর্মকর্তার ব্যক্তিগত গাড়িচালক ছিলেন। গত ১ আগস্ট তাকে চাকরিচ্যুত করা হয়। এ নিয়ে মাসুদের মধ্যে ক্ষোভ ছিল।’ তিনি আরও জানান, জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তার মাসুদ জানায়, তাকে চাকরি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হলে তিনি হারুন অর রশিদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। এরপর উচিত শিক্ষা দিতে মাসুদের সঙ্গে পরিকল্পনা করেন হারুন। এজন্য মাসুদকে বিপুল পরিমাণ অর্থ ও উন্নত জীবনের প্রলোভন দেখানো হয়। মাসুদকে অগ্রিম ৭০ হাজার টাকাও দেন হারুন।
নারী কর কর্মকর্তাকে অপহরণের মূল পরিকল্পনাকারী সাবেক স্বামী হারুন কোথায়? জানতে চাইলে কমান্ডার মঈন গণমাধ্যমকে বলেন, ‘তিনি মগবাজারের বাসাতেই অবস্থান করছেন বলে জেনেছি।’
অপহরণে তার সংশ্লিষ্টতার তথ্য পেয়েও কেন এখনও তাকে গ্রেপ্তার করা হয়নি? জানতে চাইলে কমান্ডার মঈন বলেন, ‘এ বিষয়ে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা জানলে জানতে পারে। হারুনের নাম মামলার এজহারে নেই। যে কারণে প্রাপ্ত তথ্য তদন্ত সংস্থাকে জানানো হবে। তদন্ত সংশ্লিষ্ট পুলিশ এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেবে।’