আন্তর্জাতিক গুম প্রতিরোধ দিবস উপলক্ষে মুখে কালো কাপড় বেঁধে কালো ব্যানার নিয়ে মিছিল করবে বিএনপি। আজ বুধবার (৩০ আগস্ট) ঢাকাসহ দেশের সব জেলা ও মহানগরে এই কর্মসূচি পালন করবে দলটি। 

মঙ্গলবার (২৯ আগস্ট) বিকেলে নয়াপল্টনে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন।

রিজভী জানান, গুমের শিকার ব্যক্তিদের স্মরণে আন্তর্জাতিক দিবস উপলক্ষে বিএনপির উদ্যোগে বুধবার ঢাকাসহ দেশব্যাপী সব জেলা ও মহানগরে মুখে কালো কাপড় বেঁধে কালো ব্যানার নিয়ে মিছিল করা হবে।

রিজভী বলেন, ‘গুমের শিকার ব্যক্তিদের স্মরণের আন্তর্জাতিক দিবস বুধবার। ২০১০ সালের ডিসেম্বরে ইন্টারন্যাশনাল কনভেশন ফর প্রোটেকশন অব অল পার্সনস এগেইনস্ট এনফোর্স ডিসঅ্যাপিয়ারেন্স সম্মেলনে যে আন্তর্জাতিক সনদ কার্যকর হয়, তাতে ৩০ আগস্টকে গুমের শিকার ব্যক্তিদের স্মরণে আন্তর্জাতিক দিবস হিসেবে ঘোষণা করা হয়। ইতোমধ্যে প্রায় ৬০০ জনের বেশি গুমের শিকার হয়েছেন। তাদের মধ্যে রয়েছেন জনপ্রতিনিধি, তরুণ, যুবক, ছাত্র, সাংবাদিক ও অধিকার গ্রুপের মানুষ।’

বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘গুম হওয়াদের মধ্যে প্রায় ১০০ জনের মরদেহ উদ্ধার হয়েছে এবং বহুদিন পর অনেককে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। এদের মধ্যে কেউ কেউ দীর্ঘদিন পর ফেরত এসেছে। এখনও অনেক গুম হওয়া ব্যক্তির সন্ধান মেলেনি। এক্ষেত্রে প্রায় সবার পরিবারের দাবি, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয়েই তাদের তুলে নিয়ে যাওয়া হয়।’

রিজভী আরও বলেন, ‘গুম হওয়া অনেককেই নিজ বাসায় পরিবারের সদস্যদের সামনে থেকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। অথবা আশপাশের পাড়া-প্রতিবেশী বা দোকানপাটে দাঁড়ানো লোকজন স্বচক্ষে দেখেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে তুলে নিয়ে যেতে। গুমের মতো ঘটনা মানবতার শত্রুদেরই করা সম্ভব।’

বিএনপি নেতা রিজভী বলেন, ‘সভ্যতার কোনো মাপকাঠি এখানে বিদ্যমান নেই। ক্ষমতাসীনরা সর্বযুগের পৈশাচিক দুঃশাসনের অনুসারী। এদের মন ও মননে বাসা বেঁধেছে হিটলার-মুসোলিনি-নমরুদ-ফেরাউনের হিংস্রতা। বাংলাদেশ থেকে গণতন্ত্রকামী রাজনৈতিক শক্তিকে নিশ্চিহ্ন করার জন্য এরা রাষ্ট্রকে কাজে লাগাচ্ছে। শেখ হাসিনা রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করার জন্য ক্ষমতাসীন হওয়ার পর থেকে গুমের সংস্কৃতি চালু করেছে। এক্ষেত্রে তিনি আর কতদূর অগ্রসর হবেন, সেটি নিয়ে গোটা জাতি শঙ্কিত।’

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, ‘আমি বিএনপির পক্ষ থেকে গুম হওয়া ব্যক্তিদের জন্য গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছি। তাদের পরিবারের প্রতি গভীর সহানুভূতি জ্ঞাপন করছি। গুম দিবসে গুম হওয়া ব্যক্তিদের অবিলম্বে তাদের পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেওয়ার জোর আহ্বান জানাচ্ছি।’