গরম ও ডেঙ্গুর কারণে ডাবের দাম বেড়ে তিনগুণ
প্রচণ্ড গরম আর ডেঙ্গুর কারণে যশোরের বেনাপোলে ডাবের দাম বেড়ে হয়েছে তিনগুণ। ১২০ থেকে ১৩০ টাকার নিচে বাজারে কোনো ডাব নেই। এ দামে যেগুলো মিলছে, সেগুলো ছোট ও মাঝারি আকারের। আর বড় সাইজের একেকটি ডাব ১৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
বিক্রেতারা বলছেন, এমনিতে আষাঢ়-শ্রাবণ মাসে ডাবের ফলন কম থাকে। এরমধ্যে ডেঙ্গুর কারণে চাহিদা বেড়েছে। এ সময় কয়েকদিন বৃষ্টির কারণে পিচ্ছিল গাছে উঠে ডাব পাড়াও কমেছে। এ কারণে বাজারে কমেছে সরবরাহ। এসব কারণেই দামে এখন ঊর্ধ্বগতি।
বেনাপোল চেকপোস্টে ডাব বিক্রেতা আশিক মিয়া বলেন, প্রচণ্ড গরম আর ডেঙ্গু ডাবের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। প্রতি বছর এ সময় ডাবের দাম সবচেয়ে বেশি থাকে। বিশেষ করে এ সময় আবহাওয়া থাকে প্রচণ্ড গরম। তারপর আবার ডেঙ্গুর প্রকোপ। সেজন্য চাহিদা বাড়ার পাশাপাশি দামও বেড়েছে।
আশিক মিয়া আরও বলেন, গ্রামগঞ্জে বৃষ্টি হচ্ছে। তাই গাছ থেকে ডাব পাড়া যাচ্ছে না। যারা গ্রাম থেকে ডাব নিয়ে এসে আমাদের কাছে বিক্রি করত তারা এখন আগের মতো ডাব আনতে পারছে না। সরবরাহ কম আর চাহিদা বেশি হওয়ায় দাম কয়েকগুণ বেশি।
এদিকে রাজধানীসহ সারা দেশে ডেঙ্গু রোগের প্রকোপ বাড়ায় গ্রামাঞ্চল থেকে ডাব জেলা শহরে চলে যাচ্ছে। এ জন্য প্রতিটি ডাব আগের চেয়ে ২০ থেকে ৫০ টাকা বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে।
শার্শা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এলাকায় রাস্তার পাশে ডাব বিক্রি করছিলেন এক বৃদ্ধ। তিনি তাঁর ভ্যানে থাকা ছোট আকারের একেকটি ডাবের দাম চাইলেন ১২০ টাকা করে। মাঝারি আকারের ডাবের দাম চাইলেন ১৩০ টাকা আর সবচেয়ে বড় আকারের ডাবের দাম চাইলেন ১৫০ টাকা।
বেনাপোল বাজারে প্রায় সাত থেকে ১০টি ভ্যানে ডাব বিক্রি হয়। সেখানে ১২০ টাকার নিচে কোনো ডাব পাওয়া যায়নি গতকাল মঙ্গলবার। তবে এখানে ডাবের দাম হাসপাতালগুলোর সামনের দোকান থেকে ১০ থেকে ২০ টাকা কম দেখা গেছে।
অন্যদিকে বেনাপোল চেকপোস্ট বাজারে পাইকারি ও খুচরা ডাবের বাজার বসে। সেখানেও ডাবের দাম বেড়েছে। দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে কমবেশি ডাব আসলেও সেগুলো বেশি দামে কেনাবেচা হচ্ছে।এখান থেকে পরিবহণে করে শত শত ডাব ঢাকায় যাচ্ছে বলে স্থানীয়রা জানায়।
পাইকারি বিক্রেতা আমির হোসেন বলেন, এখানে শ হিসেবে ডাব বিক্রি হয়। বড় সাইজের প্রতি ১০০ ডাব পাইকারি ১২ হাজার থেকে ১৪ হাজার টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এত দাম আগে কখনও ছিল না। কিছুদিন আগেও এসব ডাবের দাম ছিল আট হাজার থেকে ১০ হাজার টাকা।
ওই বাজারে মাঝারি সাইজের প্রতি ১০০ ডাব নয় হাজার থেকে ১২ হাজার এবং ছোট সাইজের ডাব আট থেকে নয় হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। এসব ডাব বিক্রি হচ্ছে বেনাপোলসহ শার্শার বিভিন্ন খুচরা বিক্রেতার কাছে।
ডাবের পাইকারি বিক্রেতা কামাল হোসেন বলেন, এখন ডাবের খুব চাহিদা। বছরের এ সময় নানা ধরনের জ্বর ও অন্যান্য রোগের প্রকোপের কারণে দাম বাড়ে। প্রতি বছর এ সময়টাতে চড়া দাম থাকে।
যশোরের শার্শা উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) ফারজানা ইসলাম বলেন, বৈশ্বিক গরম আবহাওয়া ও ডেঙ্গুর কারণে ডাবের চাহিদা থাকায় এক শ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী বেশি দামে ডাব বিক্রি করছে। খুব শিগগিরই এ নিয়ে অভিযান চালানো হবে। যাতে ডাবের মূল্য সহনীয় পর্যায় আসে।