পাকিস্তানকে বিদায় করে এশিয়া কাপের ফাইনালে শ্রীলঙ্কা
জিতলেই ফাইনাল, হারলে বিদায়। এমন সমীকরণকে মাথায় রেখে এশিয়া কাপের অঘোষিত সেমিফাইনালে মুখোমুখি হয়েছিল গেল আসরের দুই ফাইনালিস্ট শ্রীলঙ্কা ও পাকিস্তান। বৃষ্টিবৃঘ্নিত সেই ম্যাচে ২ উইকেটের নাটকীয় জয়ে ফাইনাল নিশ্চিত করেছে শ্রীলঙ্কা। আগামী ১৭ সেপ্টেম্বর ভারতের বিপক্ষে শিরোপা লড়াইয়ে নামবে লঙ্কানরা।
কুশল মেন্ডিস আর সাদেরা সামারাবিক্রমার শতরানের জুটিতে ম্যাচ নিজেদের করে ফেলেছিল শ্রীলঙ্কা। তবে ইফতিখার আহমেদ এসে এই ম্যাচেই ফেরালেন প্রাণ। অবিশ্বাস্যভাবে মোড়ও ঘুরল ম্যাচের। নাটকীয়ভাবে পথ হারিয়ে ফেলেছিল শ্রীলঙ্কা। তবে শেষ বলের উত্তেজনায় স্বাগতিকদের ফাইনালে নিলেন চারিথ আসালাঙ্কা। আজ বৃহস্পতিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) কলম্বোর আর প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামে টস জিতে আগে ব্যাটিংয়ে নেমে ৪২ ওভারে স্কোরবোর্ডে ২৫২ রানের চ্যালেঞ্জিং সংগ্রহ দাঁড় করায় পাকিস্তান। জবাবে ৮ উইকেট হারিয়ে জয় তুলে নেয় স্বাগতিকরা।
বৃষ্টি আইনে ৪২ ওভারের ম্যাচে ২৫২ রানের লক্ষ্য তাড়া করা মোটেও সহজ নয়। সাবলীল ব্যাটিংয়ে সেই কাজটা সহজ করে তোলেন লঙ্কান ব্যাটাররা। দলীয় ২০ রানের মাথায় কুশল পেরেরার উইকেট হারালেও পাথুম নিশানকা ও কুশল মেন্ডিস জুটিতে রানের গতি সচল রাখে লঙ্কানরা। পাওয়ার প্লের প্রথম ১০ ওভারেই স্কোরবোর্ডে ৫৭ রান তুলে ফেলে গত বারের চ্যাম্পিয়নরা।
এরপর দলীয় ৭৭ রানে নিশানকার বিদায়ে কিছুটা ধাক্কা খায় লঙ্কানরা। তবে তার বিদায়ের পর বাকি ব্যাটারদের নিয়ে বেশ ভালোভাবে রান তাড়ার কাজটা করতে থাকে শ্রীলঙ্কা। মেন্ডিস, সামারাবিক্রমা ও আসালাঙ্কার ব্যাটিং জাদুতে শেষমেশ জয় তুলে নেয় লঙ্কানরা।
এর আগে, বৃষ্টির কারণে ম্যাচ শুরু হতেও বিলম্ব হয়। এমনকি টসও পিছিয়ে যায় দুই ঘণ্টা। অবশেষে ম্যাচ শুরু হলে আগে ব্যাট করতে নেমে ভালো শুরু করতে পারেনি পাকিস্তান। দলীয় ৯ রানের মাথায় প্রমোদ মাধুশানে বলে বোল্ড হয়ে সাজঘরে ফেরেন ফখর জামান। ১১ বল খেলে মাত্র ৪ রান করেন বাঁহাতি এই ব্যাটার। এরপর অবশ্য দারুণ একটি জুটি গড়েন অধিনায়ক বাবর আজম ও আবদুল্লাহ শফিক। এই দুইজনের ৬৪ রানের জুটিতে ভর করে ভালোই এগোচ্ছিল পাকিস্তান। তবে দলীয় ৭৩ রানের মাথায় ফের ছন্দপতন।
এবার দুনিথ ভাল্লালাগের বলে আউট হন বাবর। ৩৫ বলে ২৯ রান আসে তার ব্যাট থেকে। এরপর দ্রুতই শফিক ও হারিসের উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে পাকিস্তান। তবে দলীয় ২৮তম ওভারের সময় ফের বৃষ্টির কারণে প্রায় ৪০ মিনিট খেলা বন্ধ থাকে। যার ফলে ফের ওভার কমিয়ে আনা হয়। এবার ৪২ ওভারে নেমে আসে ম্যাচ। শেষদিকে মোহাম্মদ রিজওয়ান ও ইফতিখার আহমেদের ব্যাটে ভর করে ৭ উইকেটে ২৫২ রানে থামে পাকিস্তান।
সংক্ষিপ্ত স্কোর :
পাকিস্তান : ৪২ ওভারে ২৫২/৭ (শফিক ৫২, ফখর ৪, বাবর ২৯, রিজওয়ান ৮৬*, হারিস ৩, নেওয়াজ ১২, ইফতিখার ৪৭, শাদাব ৩, আফ্রিদি ১; মাধুশান ৭-১-৫৮-২, থিকসানা ৯-০-৪২-১, শানাকা ৩-০-১৮-০, ভেল্লালাগে ৯-০-৪০-১, পাথিরানা ৮-০-৬৫-৩, সিলভা ৬-০-২৮-০)।
শ্রীলঙ্কা : ৪২ ওভারে ২৫২/৮ (নিশানকা ২৯, পেরেরা ১৭, মেন্ডিস ৯১, সামারাবিক্রমা ৪৮, আসালাঙ্কা ৪৯, সিলভা, শানাকা ২, সিলভা ৫, দুনিথ ০,মাধুশান ১,পাথিরানা ০; আফ্রিদি ৯-০-৫২-২, জামান ৬-১-৩৯-০, ওয়াসিম ৩-০-২৫-০, নেওয়াজ ৭-০-২৬-০, শাদাব ৯-০-৫৫-১, ইফতিখার ৮-০-৫০-৩)।
ফল : শ্রীলঙ্কা বৃষ্টি আইনে ২ উইকেটে জয়ী।